ছাত্রলীগের তদন্ত কমিটিকে নির্যাতনের বর্ণনা দিলেন ফুলপরী
কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্যাতনের শিকার প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুন ছাত্রলীগের তদন্ত কমিটির কাছে নির্যাতনের ঘটনা তুলে ধরেছেন।
নিরাপত্তা সংকটের কারণে সশরীরে তদন্ত কমিটির সামনে হাজির হতে অপারগতা প্রকাশের পর তদন্ত কমিটির প্রধান টেলিফোনে ফুলপরীর বক্তব্য শোনেন।
এক ঘণ্টার বেশি সময় টেলিফোন আলাপে ফুলপরী তার ওপর করা নির্যাতনের ঘটনা তুলে ধরেন। এ সময় ছাত্রলীগের তদন্ত কমিটি তার বক্তব্য লিপিবদ্ধ করে।
ফুলপরী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, রোববার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ছাত্রলীগের তদন্ত কমিটির প্রধান কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মুন্সি কামরুল হাসান তার মোবাইলে ফোন করেন। এ সময় তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে পুরো ঘটনা তার মুখ থেকে জানতে চাওয়া হয়।
ফুলপরী বলেন, প্রথম থেকেই হলে আমার সাথে যে ব্যবহার করা হয়েছে তা তুলে ধরেছি। বড় আপুরা রুমে আটকে রেখে কীভাবে আমার উপর নির্যাতন করেছে, কীভাবে শারীরিক ও মানসিকভাবে যন্ত্রণা দিয়েছেন তা জানিয়েছি।
আমি ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেছি তদন্ত কমিটির কাছে।
তদন্ত কমিটির প্রধান মুন্সি কামরুল হাসান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, তদন্ত কমিটি পুরো ঘটনার বর্ণনা তার মুখ থেকে শোনে এবং তার বক্তব্য লিপিবদ্ধ করে।
ফুলপরী তদন্ত কমিটির কাছে ছাত্রলীগের দুই নেত্রীসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। ইতোমধ্যে অভিযুক্তদের বক্তব্য শোনা হয়েছে। সবার বক্তব্য নেয়ার পর তদন্ত কমিটি তদন্ত রিপোর্ট জমা দেবে বলে জানান তিনি।
তদন্ত রিপোর্টে কী পাওয়া গেল তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির কাছে রিপোর্ট জমা দেয়ার পর তা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগকে পাঠানো হবে ফলে রিপোর্ট প্রদানের আগে এ নিয়ে কোন কথা না বলাই ভালো।
তদন্ত কমিটির প্রধান বলেন, এ ঘটনায় যারা প্রকৃত দোষী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে।
এর আগে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে ফুলপরীর কাছে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হয়, ছাত্রলীগ এ ঘটনায় তাকে ন্যায় বিচার পাওয়ার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছে বলে জানান তিনি।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে সাড়ে ৪ ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ করেন ফাইন্যান্স বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুন। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরীর নেতৃত্বে তার অনুসারীরা হলে আটকে রেখে নির্মম নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। এ ঘটনায় রিট হলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠনের পাশাপাশি কিছু নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট।
ওই ঘটনায় গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মুন্সি কামরুল হাসানকে আহ্বায়ক করে দুই সহসভাপতি বনি আমিন ও রাকিবুল ইসলাম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেনকে কমিটির সদস্য করা হয়। তদন্ত কমিটিকে ৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল। আজ রোববার তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার শেষ দিন।
Comments