দেশেই যেভাবে অটোরিকশা তৈরি করছে রানার

দেশেই যেভাবে অটোরিকশা তৈরি করছে রানার
ছবি: আবরার শারিক খান

বাংলাদেশি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রানার অটোমোবাইলস বাজাজের সঙ্গে যৌথভাবে ৩ চাকার অটোরিকশা তৈরির জন্য সম্প্রতি ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্ট উদ্বোধন করেছে। 

যে প্ল্যান্ট থেকে প্রথমবারের মতো তৈরি হচ্ছে 'মেড ইন বাংলাদেশ' অটোরিকশা।

রানার জানিয়েছে, তারা প্রায় ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ময়মনসিংহে ১০ ​​একর জমির ওপর প্ল্যান্টটি গড়ে তুলেছে। সেখান থেকে বছরে প্রায় ৩০ হাজার গাড়ি তৈরি করা হবে বলেও জানা গেছে। 

এসব গাড়ি প্রতিবেশি দেশগুলোতে রপ্তানি করা হবে। ইতোমধ্যে পাকিস্তানের সঙ্গে এ বিষয়ে অংশীদারত্ব চুক্তির কাজ চলছে বলে জানা গেছে।

প্ল্যান্টের ভেতরে বেশিরভাগ কাজই স্বয়ংক্রিয়ভাবে করা হচ্ছে। এ ছাড়া যন্ত্রপাতি অ্যাসেম্বল এবং ঢালাইয়ের কাজের বেশিরভাগই অংশই রোবোটিক যন্ত্রপাতির মাধ্যমে পরিচালিত হয়। 

যন্ত্রপাতিগুলোতে প্রাথমিক প্রলেপ দেওয়ার পর সেটার অসম্পূর্ণতা দূর করতে স্যান্ডেড করা হয় এবং তারপর সেগুলোতে আবার রং করার জন্য ভ্যাকুয়াম পেইন্টিং বুথের মধ্যে পাঠানো হয়। এরপর সেগুলো শুকানোর জন্য একটি হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখা হয়। শুকানোর পর বাকি অংশগুলো একসঙ্গে রেখে পলিশ করা হয়। 

তবে, ইঞ্জিনটি সম্পূর্ণ হাতের সাহায্যে অ্যাসেম্বল করা হয়। সবকিছু সম্পন্ন হওয়ার পর সেটি একটি ডায়নোতে পাঠানো হয়। সেখানে পরীক্ষা করে দেখা হয় যথাযথভাবে কাজ করছে কি না।

বাজাজ আরই বা সিএনজি চালিত অটোরিকশাটি স্থানীয়ভাবে 'সিএনজি' নামে পরিচিত। ফোর-স্ট্রোক ইঞ্জিনচালিত থ্রি-হুইলার ট্যাক্সিটি আন্তঃনগর চলাচলের জন্য ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। গাড়িটি সাধারণত ১৫০ থেকে ২০০ সিসি হয়ে থাকে। 

রানার জানিয়েছে, দেশে উৎপাদিত হওয়ায় ৩ চাকার এ যানটির ব্যবহার আরও বাড়বে। যদিও অটোরিকশাটির দাম পড়বে ৫ থেকে ৬ লাখ টাকার মধ্যে। তবে অটোরিকশাটি যেহেতু স্থানীয়ভাবে তৈরি করা হবে, তাই এটির আসল যন্ত্রাংশ পাওয়া যাবে। 

রানার জানিয়েছে, প্রায় ১৫ লাখের মতো অটো রিকশা থাকলে তাদের মধ্যে মাত্র ১ লাখের অটোরিকশার বিআরটিএর নিবন্ধন আছে। 

বর্তমানে অবৈধভাবে আমদানি করা এবং অনিবন্ধিত থ্রি-হুইলারগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে কাজ করছে রানার। এ ছাড়া তারা শুধু ৩ চাকার অটোরিকশার জন্য উবারের মতো একটি অ্যাপ চালুর পরিকল্পনা করেছে। থ্রি-হুইলারগুলোতে একটি চিপ লাগানো হয়েছে যার মাধ্যমে প্রতিটি গতিবিধি রেকর্ড করা হবে এবং অ্যাপের মাধ্যমে ভাড়া নির্ধারণ করা হবে। অ্যাপটি ব্যবহার ছাড়া আর কোনো বিকল্প থাকবে না। যাত্রী এবং অটোরিকশা মালিক উভয়ের কাছে গ্রহণযোগ্য ভাড়া নির্ধারণ করা হবে।

Comments