তুমব্রু সীমান্তে শূণ্যরেখার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভোর থেকে চলছে গোলাগুলি

স্টার ডিজিটাল গ্রাফিক্স

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুমের তুমব্রু সীমান্তের কোনারপাড়ার শূণ্যরেখার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ব্যাপক গোলাগুলি চলছে বলে জানিয়েছেন ক্যাম্পে বসবাসকারী রোহিঙ্গারা।

তাদের ভাষ্য, গোলাগুলির ঘটনায় মিয়ানমারের সশস্ত্র ২ গ্রুপ জড়িত।

আজ বুধবার ভোর ৬টার দিকে এই গোলাগুলি শুরু হয় বলে জানিয়েছেন ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ।

দিল মোহাম্মদ বলেন, 'সকালে মিয়ানমারের সশস্ত্র গ্রুপ রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা নাইক্ষ্যংছড়ির কোনারপাড়া শূণ্যরেখা রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় বাংলাদেশের র‌্যাব বাহিনীর সদস্যরাও গুলিবর্ষণ করেন।'

তবে কক্সবাজারস্থ র‌্যাব-১৫ এর সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম ও আইন) সহকারী পুলিশ সুপার মো. আবু সালাম চৌধুরী জানান, তুমব্রু সীমান্ত বা তার আশেপাশে র‌্যাবের কোনো প্রকার অভিযান নেই এবং সীমান্তে র‌্যাবের অভিযান করার কথাও না।

দিল মোহাম্মদ বলেন, 'সংঘর্ষের কারণ নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে, নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের জেরে মিয়ানমারের সশস্ত্র ২ গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।'

ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, 'আজ সকাল থেকেই  গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। ওখানে কি হচ্ছে তা বলা যাচ্ছে না। স্থানীয়রা চরম আতঙ্কে রয়েছেন।'

এ বিষয়ে জানতে বিজিবির ৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম চৌধুরীকে মোবাইলে কল দেওয়া হলেও তিনি তা রিসিভ না করায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোমেন শর্মা বলেন, 'তুমব্রু সীমান্তের শূণ্যরেখায় সকাল থেকে থেমে থেমে গোলাগুলির খবর জানতে পেরেছি স্থানীয়দের মাধ্যমে। শুনেছি গুলি এখনো চলছে। ঘটনাটি শূণ্যরেখায় ঘটায় আন্তর্জাতিক নীতি অনুযায়ী এ বিষয়ে হস্তক্ষেপের এখতিয়ার নেই। বিজিবি সীমান্ত এলাকায় সর্তক অবস্থানে রয়েছে।'

এর আগে গতকাল সন্ধ্যা ৬টার দিকে কক্সবাজারের উখিয়ার ধমনখালী সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।

সীমান্তের কাছাকাছি বসবাসকারী একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, মাদক বা অন্য কোনো চোরাই পণ্য পরিবহনকারী এক নারীসহ কয়েকজনকে আটক করে বিজিবি সদস্যরা। আটককৃতদের মধ্যে আরসার এক শীর্ষ নেতার স্ত্রীও ছিলেন। ঘটনার পর মিয়ানমার থেকে অনুপ্রবেশ করে চোরাকারবারিরা বিজিবির বিওপিকে লক্ষ্য করে গুলি করে এবং এক পর্যায়ে আটককৃতদের ছিনিয়ে নিয়ে মিয়ানমারে চলে যান।

ঘটনা নিশ্চিত করে পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানান, ঘটনার পর থেকে বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ অতিরিক্ত বিজিবি সদস্য ঘটনাস্থলে ছিলেন।

গতকাল রাতে বিজিবির কক্সবাজার ৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম চৌধুরী সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানান, বালুখালী বিওপি থেকে আনুমানিক দেড় কিলোমিটার দক্ষিণে এবং সীমান্ত পিলার-২০ থেকে আনুমানিক ৮০০ গজ উত্তর-পূর্ব কোনে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে রহমতের বিল হাজীর বাড়ী নামক এলাকায় কতিপয় ইয়াবা চোরাকারবারি কর্তৃক ইয়াবা চোরাচালান করার সময় গোয়েন্দা সংবাদের ভিত্তিতে বালুখালী বিওপির একটি বিশেষ টহল দল অভিযান পরিচালনা করে। বিজিবি টহল দলের উপস্থিতি টের পেয়ে চোরাকারবারিরা বিজিবির টহল দলকে লক্ষ্য করে গুলি করে। বিজিবি সদস্যরা তাদের জান-মাল ও সরকারি সম্পদ রক্ষার্থে কৌশলগত অবস্থানে থেকে ইয়াবা চোরাকারবারিদের লক্ষ্য করে পাল্টা গুলি করলে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে মিয়ানমারের দিকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। এতে বিজিবি টহল দলের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ঘটনার পর থেকে সকল বিওপি সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। পাশাপাশি টহল ও গোয়েন্দা কার্যক্রম বৃদ্ধি করা হয়েছে।

 

Comments

The Daily Star  | English

Ex-CEC Nurul Huda gives confessional statement in poll irregularities case

Statement being recorded before magistrate in case over alleged bias in past elections

21m ago