‘শুধু অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল নয়, দৈনন্দিন খরচও বেড়ে যাবে’

সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ-সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। ছবি: সংগৃহীত

বিদ্যুতের ভোক্তা পর্যায়ে মূল্যবৃদ্ধির ফলে ভোক্তাকে কেবল অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিলই দিতে হবে তা নয়, বরং বিভিন্নভাবে তার দৈনন্দিন খরচ বেড়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ-সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।

বৃহস্পতিবার ভোক্তাপর্যায়ে বিদ্যুতের খুচরা দাম গড়ে প্রতি ইউনিটে ৫ শতাংশ বাড়ায় সরকার। এর পরিপ্রেক্ষিতে খন্দকার মোয়াজ্জেম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিদ্যুতের দাম বাড়ার ফলে ভোক্তা পর্যায়ে ব্যয় তো বাড়বেই, একইসঙ্গে বিদ্যুৎভিত্তিক কৃষি ও শিল্পখাতে উৎপাদন ব্যয় বাড়বে। ফলে বিভিন্ন জিনিসপত্রের দাম বাড়বে। এই দাম বৃদ্ধির ফলে সরকারের ভর্তুকি হয়তো কিছুটা কমবে, কিন্তু এর ফলে ভোক্তা পর্যায়ে বিদ্যুতের যে প্রাপ্যতা, সেটা বাড়বে না। বরং বিদ্যুৎ পাওয়ার ক্ষেত্রে যেসব চ্যালেঞ্জ আছে, তা থেকেই যাবে।'

'অর্থাৎ মূল্যবৃদ্ধির কোনো সুফল ভোক্তা পর্যায়ে বা উৎপাদক পর্যায়ে নেই,' যোগ করেন তিনি।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনকে পাশ কাটিয়ে সরকারের এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তটি কার্যত বিইআরসিকে অকেজো করে ফেলা বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, 'একদিকে যখন বিআরসিতে আলাপ আলোচনাগুলো চলছে (গণশুনানি ও পরবর্তী পদক্ষেপ) তখন সে আলাপ আলোচনাগুলোর মূল্যায়ন প্রক্রিয়াকে পাশ কাটিয়ে সরকার নির্বাহী আদেশে দাম বাড়িয়েছে। এখানে একটি যুক্তি থাকতে পারে যে, বিইআরসি যেখানে ১৪ শতাংশের ওপরে মূল্যবৃদ্ধির সুপারিশ করেছে, সেখানে তারা মাত্র ৫ শতাংশ বাড়িয়েছে।'

'কিন্তু বিষয়টি তা নয়,' মন্তব্য করে গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, 'এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় একটি প্রতিষ্ঠানকে এভাবে পাশ কাটিয়ে যাওয়া আসলে প্রতিষ্ঠানটিকে কার্যত অকেজো করে ফেলার সামিল। মানুষজন বিইআরসির কাছে যে প্রত্যাশা করে, তারা গণশুনানিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে, সেই বিষয়টি মর্যাদা হারাবে।'

দাম না বাড়িয়ে অযৌক্তিক ব্যয় কমিয়ে সরকারের ভর্তুকি কমানো সম্ভব মন্তব্য করে এই গবেষক বলেন, 'এর মাধ্যমে সরকার বিদ্যুতখাতে দীর্ঘমেয়াদী যে সমস্যাগুলো ছিল সেগুলোকে পাশ কাটিয়ে অপ্রয়োজনীয় ব্যয়ের বোঝা আবার ভোক্তার ওপর চাপিয়েছে।'

অধ্যাদেশ জারি করে বিদ্যুতের দাম নির্ধারণের ক্ষমতা সরকারের কাছে নিয়ে আসার বিষয়ে তিনি বলেন, 'যখন আইন পরিবর্তন করা হয়, তখন তারা বলেছিল যে কোনো জরুরি অবস্থার সময় এই আইন কার্যকর করা হবে। কিন্তু আমাদের সিভিল সোসাইটির পক্ষ থেকে এটার ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন ছিল। কারণ কোনটা ইমার্জেন্সি কোনটা ইমার্জেন্সি না, সেই বিষয়ে আইনে কিছু বলা নেই। তাই এর অপব্যবহার হবারই সুযোগ বেশি। এখন আমরা দেখলাম সরকার স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় যে গণশুনানি ও তার মাধ্যমে মূল্য গ্রহণের যে সুপারিশ এই প্রক্রিয়াকে পাশ কাটিয়ে কোনো ধরনের জরুরি পরিস্থিতি না থাকার পরেও সরকার দাম বাড়ালো।'

Comments

The Daily Star  | English

Cyber protection ordinance: Draft fails to shake off ghosts of the past

The newly approved draft Cyber Protection Ordinance retains many of the clauses of its predecessors that drew flak from across the world for stifling freedom of expression.

6h ago