ম্রো পাড়ায় হামলা: রাবার ইন্ডাস্ট্রিজের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা

১০ জনের নামোল্লেখ ও অজ্ঞাত ১৭০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
ম্রোদের বাড়িতে আগুন
বান্দরবানে লামায় সরই ইউনিয়নে রেঙয়েন কারবারি পাড়ায় সোমবার ম্রোদের বাড়িঘরে আগুন-ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। ছবি: সংগৃহীত

বান্দরবানের লামায় রেঙয়েন কারবারি পাড়ায় ম্রোদের ঘরে আগুন, হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় রাবার ইন্ডাস্ট্রিজের কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আসামি করে মামলা হয়েছে।
 

আজ শনিবার রেঙয়েন পাড়ার কারবারি (পাড়া প্রধান) রেঙয়েন ম্রো বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১৭০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন বলে দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন লামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুল ইসলাম চৌধুরী। 

ওসি বলেন, 'হামলার ৬ দিন পর আজ শনিবার পাড়ার কারবারিসহ ৫-৬ জন গ্রামবাসী থানায় এসে রাবার ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামাল উদ্দিনকে (৬০) প্রধান আসামি করে মামলা করেছেন। মামলায় সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন (৬২), মো. জহিরুল ইসলাম (৬০), মো. আরিফ হোসেন (৪৫), মো. নুরু (৫৫), মো. দেলোয়ার হোসেন (৪২), দুর্যোধন ত্রিপুরা (৪২), হাজিরাম ত্রিপুরা (৫০), আব্দুল মালেক (৩৮), মহসিন রেজা (৩৬)- এই ১০ জনের নামোল্লেখ করে এবং ১৫০-১৭০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।'

'রেঙয়েন পাড়ায় দুর্বৃত্তদের হামলা, বাড়িঘর ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা জানার পর থেকেই আমরা তাদেরকে মামলা করতে বলেছিলাম,' বলেন তিনি।
পাড়ার কারবারি (পাড়াপ্রধান) রেংয়েন ম্রো দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের পাড়ায় এর আগেও অনেকবার এমন ঘটনা ঘটেছে। আমাদের জুমের বাগান আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে, বৌদ্ধ মন্দির ভেঙে দিয়েছে, কলাগাছ কেটে দিয়েছে, আমাদের খাবার পানির ঝিড়িতে বিষ দিয়েছে, তখনো থানায় অভিযোগ করেছিলাম। কোনো কাজ হয় নাই। অভিযোগ দিয়ে আসার পর আমরা বাজারে পর্যন্ত যাইতে পারি না, কোম্পানি লোকেরা দেখলে মারধর করে।'

'এবারেও আগেই আমরা মামলা করতে যাইতাম। শুনেছি কোম্পানির লোকজন পাড়ার আশেপাশে রাবার বাগানে লুকিয়ে আমাদের নজরদারি করছে। তাদের ভয়ে থানায় গিয়ে মামলা করতে ভয় পাচ্ছিলাম। মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত দলের আশ্বাসের পর আজ আমরা রাবার কোম্পানির প্রকল্প পরিচালক মো. কামাল উদ্দিনকে প্রধান আসামি করে লামা থানায় গিয়ে মামলা করেছি,' বলেন তিনি।

গত ৫ জানুয়ারি ম্রোদের ওপর হামলার ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।

হামলা ও লুটপাটের শিকার রেংয়ুং ম্রো বলেন, 'হামলার পর থেকে আমরা আতঙ্কে আছি। দিনে ও রাতে পালা করে পাড়া পাহারা দিচ্ছি। ভয়ে বাইরে কোথাও কাজে যেতে পারছি না। হামলাকারীরা কম্বল, কাপড় নিয়ে যাওয়ায় এতদিন ধরে আগুন জ্বালিয়ে শীতের রাত কাটাচ্ছি।'

গত ৪ জানুয়ারি উপজেলা প্রশাসন থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে দুটি করে কম্বল দেওয়া হয়েছে এবং আগুনে ভস্মীভূত ও ভাঙচুরে ক্ষতিগ্রস্ত ৩ পরিবারকে ৬ বান্ডিল করে ঢেউ টিন, ১০ কেজি চাল ও বাড়ি ভাঙচুর হওয়া পরিবারগুলোকে ৩০ কেজি চাল ও কম্বল দিয়েছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন।

 

Comments

The Daily Star  | English

‘No room for politics under AL name, ideology’

Nahid Islam, adviser to the interim government, spoke with The Daily Star on the nation's key challenges and the way forward.

14h ago