বাংলাদেশের বিজয় উৎসব উদযাপনে মেক্সিকোর স্কুলশিক্ষার্থীরা
মেক্সিকোতে উৎসাহ ও উদ্দীপনায় ২ দিনব্যাপী নানা আয়োজনে বাংলাদেশের ৫১তম বিজয় দিবস উদযাপন করেছে বাংলাদেশ দূতাবাস। বিভিন্ন আয়োজনের মধ্যে ছিল মেক্সিকোর স্কুল শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিজয় উৎসব উদযাপন।
বাংলাদেশ দূতাবাসের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রথম দিন ১৫ ডিসেম্বর সকালে রাজধানী মেক্সিকো সিটির ডন বেনিটো জুয়ারেজ মিডল স্কুলের ১৭০ জন শিক্ষার্থী বাংলাদেশের বিজয় উৎসবে অংশ নেয়। অধ্যক্ষ এরিক অসিরিস সানাব্রিয়াসহ স্কুলের শিক্ষকরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা মেক্সিকোর সঙ্গীত পরিবেশন করে। পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের ওপর তাদের আঁকা একটি চিত্রকর্ম উপস্থাপন করে।
অনুষ্ঠানে মেক্সিকোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম এ বিজয় অর্জনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান, মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাঁথাসহ বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মেক্সিকোর শিক্ষার্থীদের কাছে তুলে ধরেন।
তিনি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ হিসেবে বিগত ৫১ বছরে বাংলাদেশের অগ্রগতিগুলোও তুলে ধরেন, যা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বাংলাদেশ সম্পর্কে উৎসাহিত করে তোলে।
দ্বিতীয় দিন ১৬ ডিসেম্বর দূতাবাসের হলরুমে আয়োজিত দিবসের অনুষ্ঠানে প্রবাসী বাংলাদেশিদের উপস্থিতিতে বঙ্গবন্ধুর জীবনী নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত 'বঙ্গবন্ধু দ্য পিপলস্ হিরো' বইটির ল্যাটিন আমেরিকান সংস্করণ উন্মোচন করা হয়।
দিবসের উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে প্রবাসী বাংলাদেশি এবং দূতাবাস কর্মকর্তারা বিজয় দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরেন।
তারা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সব শহীদসহ বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ২ লাখ বীরাঙ্গনার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম বলেন, 'বঙ্গবন্ধু তার ঐন্দ্রজালিক ক্ষমতা আর বিচক্ষণতার মাধ্যমেই হাজার বছরে সৃষ্ট বাঙালি জাতিসত্তার পরিপূর্ণতা দেন। তার সম্মোহনী নেতৃত্বই ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের মূল চালিকাশক্তি।'
তিনি আরও বলেন, 'বঙ্গবন্ধু যে সুখী, সমৃদ্ধ ও বৈষম্যহীন সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখেছিলেন, তা আজ অনেকটা দৃশ্যমান। তার যোগ্য উত্তরসূরী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্ব দরবারে অন্য উচ্চতায় পৌঁছে গেছে।'
রাষ্ট্রদূত বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশকে তুলে ধরতে এবং ভাবমূর্তি উজ্জ্বল রাখতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
আলোচনার শুরুতে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পড়ে শোনানো হয় এবং প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়।
সবশেষে বাংলাদেশ ও মেক্সিকোর সহকর্মীদের উপস্থাপনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়। এ সময় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের বিদ্রোহী কবিতাটি স্প্যানিশ ভাষায় আবৃত্তি করা হয়।
এর আগে সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। এ সময় মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের বিদেহী আত্মার শান্তি, দেশের সমৃদ্ধি এবং অগ্রযাত্রা কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
Comments