খুশকি যন্ত্রণায় করণীয়

প্রতীকী ছবি | সাজ্জাদ ইবনে সাঈদ/স্টার

শীতে বেশ কয়েকটি বিড়ম্বনার মধ্যে অন্যতম হলো খুশকি। এটি ত্বকের একটি সাধারণ সমস্যা। তবে, খুশকি সাধারণত তেমন ক্ষতিকর নয়।

ব্রিটেনের জাতীয় স্বাস্থ্য সেবার (এনএইচএস) তথ্যমতে, 'খুশকির কারণে মাথার চামড়ায় সাদা রংয়ের পরত পড়ে, যা শুষ্ক হয়ে তালু থেকে উঠে আসে। সাদা হওয়ায় চুলে বিশেষ করে কালো চুলে খুশকি বেশি দেখা যায়'।

এ বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগের অধ্যাপক ডা. আফসানা নাহিদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মাথার ত্বকে নানা রকমের খুশকি হয়ে থাকে। খুশকির কারণে মাথায় ফাঙ্গাসসহ নানা রকম সংক্রমণ দেখা দেয়। অনেক সময় মাথার ত্বকে ব্রণের মতো হয়ে প্রচণ্ড চুলকানিও হয়, পুঁজ-রক্তও বের হতে পারে। শেষ পর্যায়ে এটি অতিরিক্ত চুল পরারও কারণ হয়ে দাঁড়ায়।'

বংশগতভাবে খুশকি হতে পারে বলেও জানান তিনি।

আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব ডার্মালোজি অ্যাসোসিয়েশনের এক গবেষণায় দেখা গেছে, 'অনেকেই মনে করেন অপরিচ্ছন্ন থাকার কারণে মাথায় খুশকি হয়ে থাকে। তা পুরোপুরি সত্য নয়। তবে নিয়মিত চুল পরিষ্কার না করলে খুশকি হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। তা ছাড়া, অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও ঠাণ্ডা আবহাওয়াও খুশকির অন্যতম কারণ।

খুশকি রোধে করণীয়

কীভাবে খুশকি রোধ করা যায়, তা জানিয়েছেন ঢামেক হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. আফসানা নাহিদ। উপায়গুলো হলো—

সঠিক শ্যাম্পু ব্যবহার

খুশকি দূর করতে হলে খুশকি-প্রতিরোধী শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে। সেই শ্যাম্পুতে থাকে জিংক পাইরোথিন, স্যালিস্যলিক এসিড, সেলেনিয়াম সালফাইড। অপরদিকে সালফারযুক্ত শ্যাম্পু এড়িয়ে চলতে হবে। আবার ক্ষারযুক্ত শ্যাম্পু চুল তাৎক্ষণিক ঝরঝরে করলেও মাথার ত্বক শুষ্ক করে ফেলে। ফলে খুশকি হতে পারে।

সঠিকভাবে শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে। সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অন্তত ১ মাস শ্যাম্পুটি ব্যবহার করতে হবে। খুশকি-নিরোধক শ্যাম্পু ব্যবহার করার আগে এর ব্যবহারবিধি পড়ে নেওয়া উচিত ভালোভাবে। কারণ বিশেষ শ্যাম্পুর ব্যবহারবিধিও আলাদা।

নিয়মিত চুল ও মাথার ত্বক পরিষ্কার

চুল অতিরিক্ত ময়লা বা নিয়মিত না ধুলে খুশকি হয়। যারা নিয়মিত বাইরে যায় বা ধুলাবালিতে চলাফেরা করে, তাদের খুশকি হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে। যদি মাথার ত্বক তৈলাক্ত থাকে বা অনেক বেশি ঘাম হয়, এতেও মাথার ত্বকে খুশকি হতে পারে। তাই নিয়মিত চুল পরিষ্কার রাখা উচিত। ধুলোবালি বেশি, এমন স্থানে গেলে মাথায় স্কার্ফ বা রুমাল বাঁধা যেতে পারে।

খুশকি সংক্রামক

অনেক সময় দেখা যায় যে, সঠিক পরিচর্যার পরও খুশকি হচ্ছে। এটি অনেকের অজানা যে, পরিবারের কারো মাথায় খুশকি থাকলে তার ব্যবহৃত তোয়ালে বা চিরুনি অন্য কেউ ব্যবহার করলে খুশকি হতে পারে। এমনিতেও ব্যক্তিগত ব্যবহারের জিনিসপত্র আলাদা থাকাই ভালো। আলাদা তোয়ালে, চিরুনি, বালিশ ব্যবহারে সংক্রমণ এড়ানো যায়।

খুশকি প্রতিরোধে খাদ্যাভ্যাস

শীতে আবহাওয়া শুষ্ক হওয়ার কারণে ত্বকের চামড়া উঠতে থাকে, যা আমাদের কাছে খুশকি হিসেবে পরিচিত। খুশকি থেকে মুক্তি পেতে গেলে নিজেকে হাইড্রেট রাখতে হবে। সেজন্য প্রচুর পরিমাণ পানি পান করতে হবে। পাশাপাশি শীতকালীন ফলমূল, বিশেষ করে টক জাতীয় ফল খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। তা ছাড়া, শীতকালীন শাক-সবজিও খেতে হবে প্রচুর পরিমাণে। পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী জিংক, ভিটামিন-বি ও  সাপ্লিমেন্ট নেওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া, খুশকি বেশি হলে বা যেকোনো পরামর্শের জন্য চিকিৎসকের কাছে যাওয়াই ভালো।

Comments

The Daily Star  | English
Apparel Buyers Delay Price Increases Post-Wage Hike Promise

Garment exports to US grow 17%

Bangladesh shipped apparels worth $5.74 billion in the July-March period to the USA

6h ago