বিশ্বকাপে নেমেই সর্বোচ্চ ফাউলের শিকার নেইমার গোড়ালির চোটে শঙ্কায়

Neymar

ছন্দময় ফুটবলের পসরা সাজিয়ে সার্বিয়াকে ২-০ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করেছে ব্রাজিল। দুর্দান্ত এক ম্যাচের পরও ভক্তদের কপালে তবু চিন্তার ভাঁজ। মাটিতে লুটিয়ে মাঠ ছেড়েছেন যে দলের সেরা তারকা নেইমার, ম্যাচ শেষে কাঁদতেও দেখে গেছে তাকে। গোড়ালির চোটে থাকা নেইমারের সর্বশেষ অবস্থা জানিয়েছেন দলের চিকিৎসক, কোচ তিতে অবশ্য বলছেন, বিশ্বকাপ ঠিকই খেলে যাবেন এই তারকা।

বৃহস্পতিবার রাতে কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে ব্রাজিলের বিপক্ষে ১২টি ফাউল করে সার্বিয়া, যার ৯টিই করা হয় নেইমারের বিপক্ষে। এবারের বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত হওয়া ১৫ ম্যাচের মধ্যে কোন একজন খেলোয়াড়ের বিপক্ষে এটাই সর্বোচ্চ ফাউলের ঘটনা।

এই বিশ্বকাপে এক ম্যাচে অন্য কোন খেলোয়াড় তার চেয়ে অর্ধেকের কম ফাউলের শিকার হয়েছেন। চারটি করে ফাউলের শিকার হয়েছেন ফ্রান্সের আশরাফ হাকিমি, ইংল্যান্ডের মেসন মাউন্ট, বেলজিয়ামের এডেন হ্যাজার্ড ও ওয়েলসের গ্যারেথ বেল।

৬৭ মিনিটে সার্বিয়ান ডিফেন্ডার মিলেনকোভিচের একটি বাজে ট্যাকলের শিকার হয়ে গোড়ালিতে চোট পান নেইমার। আরও ১৩ মিনিট চোট নিয়েই চালিয়ে যান খেলা। প্রথম গোলের সূত্রপাত করেছিলেন নেইমারই। কয়েকজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্সে ঢুকে বল বাড়িয়েছিলেন ভিনিসিউস জুনিয়রকে। তার নেওয়া শট গোলরক্ষক ফিরিয়ে দিলে টোকা মেরে জালে জড়ান রিচার্লিসন। 

৬২ ও ৭৩ মিনিটে রিচার্লিসনের দুই গোলে দলের জয় যখন নিশ্চিত, ৭৯ মিনিটে তখন দেখা যায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েছেন নেইমার। পরে ধরাধরি করে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় মাঠের বাইরে। ম্যাচ শেষে একটি ছবিতে দেখা যায়  ফুলে যাওয়া গোড়ালি নিয়ে গভীর চিন্তায় ব্রাজিলের বিশ্বকাপ জয়ের মিশনে সবচেয়ে বড় ভরসার নাম। ডাগআউটে বসে জার্সি দিয়ে মুখ ঢেকে লুকিয়েছেন কান্না। পাশে বসে থাকা সান্ত্বনা দেন পেদ্রো, পাকেতারা।

ব্রাজিলের দলের চিকিৎসক রদ্রিগো লাসমার ম্যাচ শেষে ব্রাজিলিয়ান গণমাধ্যমে বলেন, 'আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ডাগআউটে নিয়েই চিকিৎসা দিয়েছি। ফিজিও তার সঙ্গে কাজ করছেন। তবে এখন ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা না গেলে ঠিকমতো বলা যাচ্ছে না। সে চোট পাওয়ার পরও ম্যাচটা খেলে গেছে, দলকে সাহায্য করে গেছে। এটা স্মরণীয় ব্যাপার যে সেটা এটা করেছে।'

খেলা শেষে অবশ্য কোচ তিতে আশ্বস্ত করেন বিশ্বকাপে ঠিকই নেইমার খেলে যাবেন, 'চিন্তা করবেন না, নেইমার বিশ্বকাপে খেলবে। সে খেলতে থাকবে। আপনারা এই ব্যাপারে  নিশ্চিত থাকতে পারেন।'

ম্যাচ শেষে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে ড্রেসিংরুমে যান নেইমার। সতীর্থদের সঙ্গে যোগ দিতে পারেননি উৎসবে। ২৮ নভেম্বর সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে পরের ম্যাচ খেলবে ব্রাজিল। ২ ডিসেম্বর গ্রুপের শেষ ম্যাচ ক্যামেরুনের বিপক্ষে। ম্যাচগুলোতে নেইমার খেলতে পারবেন কিনা তা এখনি নিশ্চিত করে বলার উপায় নেই। 

লুসাইল মাঠে এদিন প্রথমার্ধে অনেক সুযোগ পেয়েও গোল আদায় করতে পারেনি ব্রাজিল। বিরতির পর তিতের শিষ্যরা দেখায় আরও আগ্রাসী ফুটবল। একের পর এক আক্রমণে টালমাটাল করে দেয় সার্বিয়ান রক্ষণ। ভিনিসিউস জুনিয়র, রাফিনহারা হেলায় হারান একাধিক সুযোগ। তবে ব্রাজিলের আক্রমণে তোড়ে একসময় গিয়ে ধসে যায় সার্ব ডিফেন্স। ৬২ মিনিটে হলুদ জার্সির মেলা বসে সার্বিয়ান রক্ষণে। রিচার্লিসনের গোলে দলকে দেয় স্বস্তি। ৭৩ মিনিটে দেখা যায় চোখ ধাঁধানো গোল। ভিনিসিউসের বাড়ানো বল বাম পায়ের টোকা দিয়ে উপরে উঠিয়ে শরীরকে শূন্য ভাসিয়ে অ্যাক্রোবেটিক শটে জালের ঠিকানা খোঁজে নেনে রিচার্লিসন।

পুরো ম্যাচে প্রতিপক্ষের গোলমুখে ২২টি শট নেয় ব্রাজিল, যার ৮টি ছিল লক্ষ্যে। বিপরীতে প্রতিপক্ষ ৫ শটের কোনটাই পারেনি লক্ষ্যে রাখতে।

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka airport receives 2nd bomb threat

Operations at HSIA continue amid heightened security

3h ago