চীনে করোনা সংক্রমণের নতুন রেকর্ড, বাড়ছে লকডাউনের আওতা
চীনে করোনাভাইরাসের নতুন ঢেউয়ের প্রভাবে দৈনিক শনাক্তের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে দেশের বেশ কয়েকটি এলাকায় লকডাউন দেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
ঝেংঝোউ প্রদেশের ৮ জেলার ৬৬ লাখ মানুষকে আজ থেকে শুরু করে আগামী ৫ দিন শুধু খাবার কেনা ও চিকিৎসা ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়ার উপদেশ দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
এ ছাড়াও, নগর প্রশাসন প্রতিদিন গণ-পরীক্ষা আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে। এই উদ্যোগকে 'ভাইরাস ধ্বংসের যুদ্ধ' হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।
আজ দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন জানিয়েছে, এর আগের ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৩১ হাজার ৪৪৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। ২০১৯ সালে উহানে প্রথম করোনা সংক্রমণ দেখার পর এটাই সর্বোচ্চ দৈনিক শনাক্ত।
প্রায় প্রতিদিনই শনাক্তের সংখ্যা বাড়ছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৬ মাসের মধ্যে চলতি সপ্তাহে করোনায় প্রথম মৃত্যুর সংবাদ দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। মোট মৃতের বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ২৩২।
শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশের তুলনায় কম হলেও চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি 'কোভিড-শূন্য' নীতি মেনে চলতে আগ্রহী। এর উদ্দেশ্য—শনাক্ত হওয়া প্রত্যেক রোগীকে অন্যদের থেকে আলাদা করে ফেলা এবং এই ভাইরাসকে চিরতরে ধ্বংস করা।
বেশিরভাগ দেশের সরকার করোনা মোকাবিলায় সার্বিকভাবে সুরক্ষা, টিকা দেওয়া ও আগে সংক্রমণের কারণে তৈরি হওয়া রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ওপর নির্ভর করছে।
চীনের দক্ষিণের গুয়াংজু ও উত্তরে বেইজিংয়ের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, আবাসিক এলাকা ও উৎপাদনকেন্দ্রগুলো বিভিন্ন পর্যায়ের লকডাউনের আওতায় আছে। এতে কম মজুরিতে কাজ করছেন এমন অভিবাসী শ্রমিকদের জীবন-জীবিকার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
গত সোমবার গুয়াংজু কর্তৃপক্ষ বাইইউন জেলার ৩৭ লাখ মানুষকে লকডাউনের আওতায় এনেছে।
বেইজিংয়ের দক্ষিণ-পশ্চিমে শিজিয়াঝুয়াং শহরের ১ কোটি ১০ লাখ মানুষকে গণ-পরীক্ষা চালানোর সময় বাসায় থাকতে বলা হয়েছে।
বেইজিংয়ের এক প্রদর্শনী কেন্দ্র বন্ধ করে সেখানে হাসপাতাল খোলা হয়েছে। বেইজিং আন্তর্জাতিক স্টাডিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর করোনা শনাক্ত হলে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে লকডাউনের আওতায় আনা হয়েছে। কয়েকটি শপিং মল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় এবং আবাসিক ভবনেও লকডাউন চালু হয়েছে।
২০২০ সালে করোনা মোকাবিলায় চীন সরকার কারখানার উৎপাদনসহ অর্থনৈতিক কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়। এবার সেই নীতি থেকে তারা সরে এসেছে।
'ক্লোজড লুপ ব্যবস্থাপনা'র মাধ্যমে শ্রমিকদের কারখানার ভেতরেই থাকার ব্যবস্থা করছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো, যাতে তাদের বাইরের মানুষের সংস্পর্শে আসার প্রয়োজন না হয়।
Comments