কিয়েভে আবারও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, পানি-বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত

কিয়েভে আবারও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। আজ শহরের বিভিন্ন অংশে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
১০ অক্টোবর কিয়েভে ক্ষেপনাস্ত্র হামলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। আজ ৩১ অক্টোবর আবারও হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। ছবি: রয়টার্স
১০ অক্টোবর কিয়েভে ক্ষেপনাস্ত্র হামলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। আজ ৩১ অক্টোবর আবারও হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। ছবি: রয়টার্স

কিয়েভে আবারও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। আজ শহরের বিভিন্ন অংশে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।

আজ সোমবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে।

সম্প্রতি মস্কো অভিযোগ করেছে, কৃষ্ণ সাগরে রুশ নৌবহরের ওপর ইউক্রেনের ১৬টি ড্রোন হামলা চালিয়েছে। রুশ কর্তৃপক্ষ এই হামলাকে সন্ত্রাসী হামলা বলে অভিহিত করেছে এবং এর প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতার মাধ্যমে হওয়া শস্য চুক্তি স্থগিত করেছে রাশিয়া।

এই চুক্তিতে কৃষ্ণ সাগরের বন্দর ব্যবহার করে ইউক্রেনকে শস্য রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।

রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয়ই বিশ্বের বৃহত্তম খাদ্য রপ্তানিকারক দেশের মধ্যে অন্যতম। বিশেষ সামরিক অভিযানের শুরুর দিকে রাশিয়া ইউক্রেনের শস্য রপ্তানি আটকে দিলে বৈশ্বিক খাদ্য সঙ্কট দেখা দেয়।

রাশিয়া আবারও শস্য রপ্তানি বিষয়ে সহযোগিতা বন্ধ করার ঘোষণা দেওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রে শিকাগোর গম সূচক ৫ শতাংশ বেড়েছে। 

ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা বলেন, 'ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগুলো আরেক দফা রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার শিকার হয়েছে। যুদ্ধক্ষেত্রে লড়াই না করে রাশিয়া বেসামরিক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হামলা চালাচ্ছে।'

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওলেগ নিকোলেনকো জানান, কিয়েভ ও অন্যান্য শহরের গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে, যার ফলে বিদ্যুৎ ও পানি সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে।

কুলেবা আরও বলেন, 'রাশিয়া শান্তি আলোচনা বা বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে আগ্রহী নয়। পুতিনের একমাত্র লক্ষ্য মৃত্যু ও ধ্বংসযজ্ঞ।'

রাশিয়া এসব অভিযোগে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

ইউক্রেন রুশ নৌবহরের ওপর হামলার দায়ভার স্বীকারও করেনি, অস্বীকারও করেনি।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার বিরুদ্ধে 'ক্ষুধার মাধ্যমে সারা বিশ্বকে ব্ল্যাকমেল' করার অভিযোগ করেন।

ইউক্রেনের অবকাঠামো মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রাশিয়ার সিদ্ধান্তের কারণে প্রায় ২১৮টি শস্যবাহী জাহাজ আটকে পড়েছে।

শস্য চুক্তি অনুযায়ী, রাশিয়া ও ইউক্রেনে সমন্বিত ভাবে জাহাজের পরিদর্শন ও কৃষ্ণ সাগরের মধ্য দিয়ে পারাপারের বিষয়টির দেখভাল করছিল। জাতিসংঘ ও তুরস্ক মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করছিল।

কৃষ্ণ সাগর দিয়ে শস্য পরিবহণ করা হচ্ছে। ছবি: রয়টার্স
কৃষ্ণ সাগর দিয়ে শস্য পরিবহণ করা হচ্ছে। ছবি: রয়টার্স

রোববার কৃষ্ণ সাগরে সব ধরনের জাহাজের চলাচল বন্ধ ছিল। জাতিসংঘ জানায়, তুরস্ক ও ইউক্রেনের মধ্যে সমঝোতায় সোমবার ১৬টি শস্যবাহী জাহাজ কৃষ্ণ সাগরের ওপর দিয়ে চলাচল করবে—১২টি রপ্তানির উদ্দেশ্যে রওনা হবে আর ৪টি ইউক্রেনে ফিরে আসবে। এ সিদ্ধান্তে রাশিয়া কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

জাতিসংঘ আরও জানিয়েছে, রুশ কর্মকর্তাদের এ পরিকল্পনার বিষয়ে জানানো হয়েছে এবং সোমবার আরও ৪০টি জাহাজ পরিদর্শনের ইচ্ছার কথাও সংস্থাটি জানিয়েছে।

জাতিসংঘ রাশিয়াকে আরও জানায়, চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী সব পক্ষে তাদের নিজ সামরিক বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাঝে সমন্বয়ের মাধ্যমে বাণিজ্যিক জাহাজের নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করতে বাধ্য।

শনিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রাশিয়ার চুক্তি থেকে সরে আসার সিদ্ধান্তের প্রতি নিন্দা জানান এবং দাবি করেন, এতে আরও বেশি মানুষ উপোস থাকবেন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্টনি ব্লিংকেন মস্কোর বিরুদ্ধে 'খাবারকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার' অভিযোগ আনেন।

রোববার ওয়াশিংটনে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত আনাতোলি আন্তোনভ মার্কিনদের প্রতিক্রিয়ার প্রতি নিন্দা জানান এবং দাবি করেন, তারা মস্কোর উদ্যোগকে ভুলভাবে উপস্থাপন করছেন।

 

Comments

The Daily Star  | English

Political parties want road map to polls

Leaders of major political parties yesterday asked Chief Adviser Professor Muhammad Yunus for a road map to the reforms and the next general election.

2h ago