ইউরোপ যাত্রা: জঙ্গলেই হারিয়ে গেলেন বাংলাদেশি যুবক সাগর

সাগর খাঁন। ছবি: সংগৃহীত

তুরস্ক থেকে গ্রিসে যাওয়ার পথে অসুস্থ হয়ে পড়েন অভিবাসনপ্রত্যাশী বাংলাদেশি যুবক সাগর খাঁন। তখন তাকে ফেলেই চলে যায় দালাল ও সঙ্গীরা। এর পর থেকেই নিখোঁজ আছেন বরিশালের এই যুবক।

প্রায় দেড় মাস আগে তুরস্ক থেকে গ্রিসে উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন ২৫ বছর বয়সী সাগর খাঁন। সঙ্গীরা গ্রিসে পৌঁছালেও, তার কোনো খোঁজ পাচ্ছেন না পরিবার ও স্বজনরা। দুশ্চিন্তা ও উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে তাদের।

সাগর খাঁনের গ্রামের বাড়ি বরিশালের মুলাদী থানার সফিপুর এলাকায়। বিদেশে পাড়ি দেওয়ার পরই তার বাবা মারা যান। পরিবারে আছেন মা, ৩ বোন ও ২ ভাই।

স্বজনরা জানান, জীবিকার তাগিদে সাগর প্রায় ৮ বছর আগে প্রথমে ওমান যান। সেখানে দীর্ঘদিন থাকার পর স্বপ্ন দেখেন ইউরোপে প্রবেশের। এক দালালের সঙ্গে চুক্তি করে বিভিন্ন পথে ইরানের সীমান্ত পাড়ি দিয়ে প্রায় ২ বছর আগে তুরস্ক পৌঁছান তিনি। 

ইউরোপ প্রবেশ করতে প্রথমে গ্রিসে যেতে হয়। তাই তুরস্কে অবস্থানরত এক বাংলাদেশি দালালের তিনি গ্রিসে প্রবেশের চুক্তি করেন বলে জানান স্বজনরা।

তার চাচা রবিউল খাঁন সানাউল জানান, গ্রিসে যাওয়ার জন্য সাগর তুরস্কে মাদারীপুরের মোবারক নামের এক দালালের সঙ্গে ৪ লাখ টাকার চুক্তি করেছিল সাগর। চুক্তি অনুযায়ী দালালকে ৪ লাখ দেওয়া হয়েছিল।

তিনি বলেন, 'সেপ্টেম্বর মাসের ১৮ তারিখ গ্রিসে প্রবেশের কথা ছিল, ১৬ তারিখ সাগর ফোন করে বাড়িতে জানিয়েছিল। এরপর থেকেই তার সঙ্গে পরিবারের আর কোনো যোগাযোগ হয়নি।'

তিনি আরও জানান, ভাতিজার খোঁজে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তিনি একটি পোস্ট দিয়েছিলেন। পোস্টের সূত্র ধরে সাগরের সঙ্গে গ্রিসে অনুপ্রবেশকারী দলের আরেক বাংলাদেশি যুবকের সঙ্গে যোগাযোগ হয় তাদের।

ওই যুবকের বরাত দিয়ে সাগরের পরিবারের সদস্যরা জানান, ২৪ ঘণ্টা হাঁটলেই গ্রিসের সেলোনিকা পৌঁছে যাওয়া যাবে বলে দালালরা তাদের বলেছিল। কিন্তু টানা ৪ দিন হাঁটার পরও তারা গ্রিসের সীমানায় পৌঁছাতে পারেননি।

ওই যুবক আরও জানান, একসময় পথের মধ্যে জঙ্গলে অসুস্থ হয়ে পড়েন সাগর। তার হাঁটার শক্তি ছিল না। তিনি উঠে দাঁড়াতেও পারেননি। এ অবস্থায় তাকে জঙ্গলে রেখেই দালালচক্র ও সঙ্গীরা চলে যায়।

দলের সবাই এক সময় গ্রিসে গিয়ে পৌঁছালেও, সাগর জঙ্গলেই রয়ে যান। এরপর থেকে সাগরের আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

লেখক: গ্রিসপ্রবাসী সাংবাদিক

Comments

The Daily Star  | English
US dollar price rises

Explanations sought from 13 banks for higher USD rate

BB issued letters on Dec 19 and the deadline for explanation ends today

17m ago