এএফপি’র সাংবাদিক গ্রেপ্তার, সমালোচনার মুখে এরদোয়ান

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। ফাইল ছবি: রয়টার্স
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। ফাইল ছবি: রয়টার্স

আজ বুধবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে বিক্ষোভ টানা সপ্তম দিনে গড়িয়েছে।

মঙ্গলবার পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন অন্তত সাতজন সাংবাদিক। তার মধ্যে এএপপির এক চিত্র সাংবাদিকও আছেন। এই ঘটনায় বিতর্ক আরো বেড়েছে।

ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুকে গ্রেপ্তারের পর থেকেই গোটা দেশজুড়ে বিক্ষোভ-আন্দোলন শুরু হয়েছে। এক দশক পর এমন আন্দোলন দেখছে তুরস্ক। প্রশাসন কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার পরও আন্দোলনকারীদের দমানো যাচ্ছে না। মঙ্গলবার আন্দোলন থামাতে পুলিশ বিরাট অভিযান চালায়। সব মিলিয়ে প্রায় এক হাজার ৪০০ মানুষকে আটক করা হয়েছে বলে আন্দোলনকারীদের অভিযোগ।

সাংবাদিক গ্রেপ্তার

এএফপির চিত্র সাংবাদিক ইয়াসিন আকগুল। ফাইল ছবি: এএফপি
এএফপির চিত্র সাংবাদিক ইয়াসিন আকগুল। ফাইল ছবি: এএফপি

এএফপি'র চিত্র সাংবাদিক ইয়াসিন আকগুল মঙ্গলবারের বিক্ষোভের ছবি তুলতে গেছিলেন। প্রশাসনের অভিযোগ, ওই সাংবাদিক বেআইনি বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন, তাই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যদিও সাংবাদিক জানিয়েছেন, তিনি ওই বিক্ষোভের ছবি তুলতে গেছিলেন। বিক্ষোভে যোগ দিতে যাননি।

ঘটনার পর এএফপির সিইও ও চেয়ারম্যান ফেবরিস ফ্রাইস সরাসরি তুরস্কের প্রেসিডেন্টকে একটি চিঠি দেন। তাতে বলা হয়েছে, 'আমরা আশা করছি, আপনি সরাসরি এই ঘটনায় হস্তক্ষেপ করবেন এবং সাংবাদিকের মুক্তির ব্যবস্থা নেবেন। এই গ্রেপ্তার কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।'

এদিকে মঙ্গলবার অন্তত এক হাজার বিক্ষোভকারী ইস্তাম্বুলের সিসলি অঞ্চলে পৌরসভার দিকে মিছিল করেন। তাদের এখন একটাই দাবি, সরকার পদত্যাগ করুক। তাদের হাতের পোস্টার ব্যানারে লেখা ছিল, 'তাইয়েপের পদত্যাগ চাই।'

এরদোয়ানের হুমকি

তুরস্কে এরদোয়ানবিরোধী বিক্ষোভ গতিশীল হয়েছে। ছবি: এএফপি
তুরস্কে এরদোয়ানবিরোধী বিক্ষোভ গতিশীল হয়েছে। ছবি: এএফপি

মঙ্গলবারও চলতি বিক্ষোভ নিয়ে মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। তার বক্তব্য, ইমামোগলুর গ্রেপ্তার নিয়ে যে অভিযোগ উঠছে, তা ভিত্তিহীন। রাজনৈতিক কারণে ইমামোগলুকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। বিষয়টি এখন আদালতের হাতে। এবং দেশের আদালত স্বাধীন বলেও দাবি করেছেন প্রেসিডেন্ট।

বিরোধী রাজনৈতিক দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) বিরুদ্ধে এদিনও ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন তিনি। এরদোয়ানের অভিযোগ, সিএইচপি মানুষকে উসকানি দিচ্ছে।

উল্লেখ্য, সিএইচপি'র জনপ্রিয় নেতা ইমামোগলু। ২০২৮ সালের নির্বাচনে তিনি এরদোয়ানের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী। সিএইচপি ইতোমধ্যে তাকে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে।

এরদোয়ান এদিন বলেছেন, 'রাস্তায় যারা সন্ত্রাস সৃষ্টি করছে, তাদের আন্দোলন কোথাও পৌঁছাবে না। তারা কানাগলিতে ঢুকে পড়েছে।'

বস্তুত, তুরস্কের রাস্তায় বিক্ষোভ-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

আরো বড় আন্দোলনের ডাক

ইস্তাম্বুলের মেয়র ও এরদোয়ানের প্রতিদ্বন্দ্বী একরেম ইমামোগলু। ফাইল ছবি: এএফপি
ইস্তাম্বুলের মেয়র ও এরদোয়ানের প্রতিদ্বন্দ্বী একরেম ইমামোগলু। ফাইল ছবি: এএফপি

এদিকে এরদোয়ান হুমকির মুখে দমছেন না আন্দোলনকারীরা। বুধবার আরো বড় জমায়েতের ডাক দেওয়া হয়েছে। সিএইচপি নেতা ওজগুর ওজেল সিলভরি কারাগারে ইমামোগলুর সঙ্গে দেখা করতে গেছিলেন। সেখান থেকে বেরিয়ে এসে সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, ইমামোগলু সুস্থ আছেন, মাথা নিচু করেননি। পরিবার, সহকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।

এদিন ইমামোগলুর সঙ্গে সাক্ষাতের পর ওজগুর জানিয়েছেন, দলের তরফ থেকে ইস্তাম্বুল পৌরসভায় একজন নতুন মেয়র নিয়োগ করা হবে। ইমামোগলুর বিকল্প হিসেবে যিনি আপাতত কাজ করবেন। এরদোয়ান যে বিকল্প মেয়র নিয়োগ করেছেন, তা তারা মানছেন না বলে স্পষ্ট জানিয়েছে দিয়েছেন ওজগুর।

শনিবার ইস্তাম্বুলে গণবিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন তিনি। সমস্ত পেশার মানুষকে ওই বিক্ষোভে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবার বিক্ষোভকারীদের জমায়েতে গিয়ে ওজগুর বলেছেন, 'ইমামোগলুর গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে, স্বচ্ছ বিচারের দাবিতে, দ্রুত নির্বাচনের ডাক দিতে এই বিক্ষোভের আয়োজন হচ্ছে। সকলে এই আন্দোলনে যোগ দিন।'

Comments

The Daily Star  | English

'Bangladesh applauds 20% US tariff as ‘good news’ for apparel industry

Bangladesh has welcomed the outcome of trade negotiations with Washington, securing a 20 percent tariff rate on its exports to the US under a sweeping new executive order issued by President Donald Trump.

1h ago