যেভাবে চিহ্নিত করবেন কানে শোনার সমস্যা

ছবি: ফ্রিপিক

অনেকেই কানে বিভিন্ন ধরনের শব্দ কম শুনতে পায়। যেমন দরজায় ধাক্কা দেওয়ার শব্দ কিংবা টেলিভিশনের শব্দ। অনেকে আবার এসব শব্দ শুনতে না পেলেও তা এড়িয়ে যায়। ধীরে ধীরে মানুষ কানে না শোনার সমস্যা বুঝতে পারে।

চলুন জেনে নেই যেভাবে বুঝবেন আপনার কানে শোনার সমস্যা:

ব্যাকগ্রাউন্ড শব্দ না শোনা

যদি আশেপাশের পরিবেশের শব্দ শুনতে অসুবিধা হয় তাহলে অবশ্যই তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে। পরিবেশের শব্দ বিভিন্ন প্রকারের হতে পারে। যেমন পাখির কিচিরমিচির, শুকনো পাতার শব্দ, কিংবা রান্না ঘরের বিভিন্ন তৈজসপত্রের নাড়াচাড়ার শব্দ।

লক্ষ্য রাখবেন আপনি যখন প্রকৃতির আশেপাশে থাকেন তখন পাখির শব্দ আপনি শোনেন কিনা। কিংবা বাসায় থাকলে রান্না ঘরসহ অন্যান্য ঘরের শব্দ আপনি শুনতে পান কিনা।

কানে রিংয়ের মতো শব্দ শোনা

কানের এক ধরনের সমস্যার নাম টিনিটাস। এই সমস্যায় কানে এক প্রকার রিংয়ের শব্দ কিংবা ঝিমানী শব্দ শোনা যেতে পারে। যা মূলত প্রকৃতি থেকেই আসা কোনো কিছুর শব্দ এবং যা মস্তিষ্কে থেকে যায়। আমাদের মধ্যে অনেকেই টিনিটাসে আক্রান্ত। গবেষণায় দেখা যায় টিনিটাসে আক্রান্ত অনেকেই পরে কানে কম শুনতে পান। আমেরিকায় ৫০ মিলিয়নের অধিক মানুষ এই রোগে আক্রান্ত বলে গবেষণায় জানা যায়।

শব্দ না শুনে ঠোঁটের অঙ্গভঙ্গি দেখে কথা বুঝতে হয়

যারা সাধারণত কানে কম শোনেন তারা ঠোঁটের অঙ্গভঙ্গি দেখে অন্যের কথা বুঝতে চেষ্টা করেন। তাই যদি কারো ঠোঁট না দেখে তার কথা শুনতে অসুবিধা হয় তাহলে বুঝতে হবে কানে কোনো না কোনো সমস্যা তৈরি হয়েছে। করোনার সময় এভাবে অনেকেই বুঝতে পেরেছেন তাদের কানে সমস্যা রয়েছে। কেননা তারা মাস্ক পরিধান করা কারো কথা ঠিকভাবে শুনতে পেতেন না।

ভিড়ের মধ্যে শব্দ শুনতে অসুবিধা হয়

ভিড় বা জনবহুল জায়গা যেমন রেস্টুরেন্ট, কিংবা পার্টি সেন্টারে অনেকে কানে কম শুনতে পান। শান্ত পরিবেশে একজন আরেকজনের কথা শুনতে পান। কিন্তু ভিড়ের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট মানুষের সাউন্ডে ফোকাস করা কষ্টকর। ভিড়ের মধ্যে কারো ঠোঁটের অঙ্গভঙ্গিতে ফোকাস করাও কষ্টসাধ্য বিষয়।

খেয়াল করুণ কোনো এক কানে কম শুনতে পান কিনা

যদি নির্দিষ্ট একটি কানে কম শুনতে পান তাহলে এটি একটি ভিন্ন সমস্যা নির্দেশ করে বলেন বিশেষজ্ঞরা। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে যাদের শ্রুতি কমতে থাকে তারা মূলত একই সঙ্গে ২ কানেই কম শুনতে পান। কিন্তু যদি এমনটা না হয় তখন ডাক্তাররা দেহের অন্য স্থানে কোনো সমস্যা হয়েছে কিনা সেগুলো ইঙ্গিত করেন। টিউমার হলে এক কানে কম শোনা যেতে পারে। আবার যদি কানে হঠাৎ কম বা বেশি শোনা যায় তাহলে হতে পারে কানের অভ্যন্তরীণ কোনো সমস্যা হয়েছে। এমন অবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।

হঠাৎ করেই কানে কম শোনা

কেউ কেউ হুট করেই কোনো একটি কানে অনেক সময় কম শুনতে পান। ধীরে ধীরে তা বাড়তে থাকে। এরকম হলে সঙ্গে সঙ্গে পরীক্ষা করে ফেলতে হবে। কেননা হঠাৎ কোনো সমস্যা হলে সেটি থেকে দ্রুতই আরোগ্য লাভ করা যায়।

কান সুরক্ষিত রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন

মূলত বয়সের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের কানে শোনার সমস্যাগুলো বাড়ে। তবে সেই সঙ্গে জেনেটিক ও ভৌগলিক কিছু কারণও জড়িত থাকে। যারা সব সময় অনেক বেশি শব্দবহুল পরিবেশে থাকে যেমন সঙ্গীত শিল্পী কিংবা কোনো কন্সট্রাকশন কর্মী তাদের শ্রুতির দ্রুত অবনতি ঘটে। এরকম লাউড পরিবেশে কাজ করতে হলে সেটি রক্ষায় বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যেমন এয়ারফোন বা এয়ারপ্লাগ ব্যবহার করা। আগে থেকে প্রতিরোধ করা গেলে অনেকটাই এই পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

লক্ষণগুলো এড়িয়ে চলবেন না

বৃদ্ধ মানুষের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা কানে ঠিকভাবে শুনতে পারেন না। তবে তাদের মধ্যে বেশিরভাগই এর জন্য কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেন না। উপরের যেকোনো লক্ষণ দেখা দিলে সবার আগে অডিওলজিস্টের কাছে গিয়ে শ্রুতি পরীক্ষা করতে হবে।

সূত্র: হাফপোস্ট

Comments

The Daily Star  | English
Kudos for consensus in some vital areas

Kudos for consensus in some vital areas

If our political culture is to change, the functioning of our political parties must change dramatically.

3h ago