বিমানে উঠলে শিশুরা কাঁদে কেন, করণীয় কী

বিমানে উঠলে শিশুরা কাঁদে কেন, করণীয় কী
ছবি: সংগৃহীত

অনিচ্ছুক কোনো বাচ্চাকে সঙ্গে নিয়ে বিমানে চড়ার মতো যন্ত্রণাদায়ক ব্যাপার কমই আছে। বাচ্চার কান্নার শব্দে বিমানের যাত্রীরা অস্বস্তিতে পড়েন এবং ছোট বাচ্চার এমন চিৎকারে লজ্জায় ভুগতে থাকেন পিতা-মাতাও। 

এতে বিরক্তি প্রকাশ করতে থাকেন কাছাকাছি আসনের যাত্রীরাও। এমনকি সদা হাস্যোজ্জ্বল ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টরাও ভেতরে ভেতরে তাদের রাগ লুকিয়ে রাখেন।

শিশুর বিমানে কাঁদার অনেক কারণ থাকতে পারে। হতে পারে অস্বস্তি, ক্লান্তি, ক্ষুধা, একাকীত্ব, একঘেয়েমি, রাগ, ব্যথা এবং সাধারণ অস্থিরতার অনুভূতি। কিন্তু প্রধান একটি কারণ হলো কানে ফটফট শব্দ।

দ্য হেলথ জার্নালের মতে, ফ্লাইটে বাচ্চাদের অস্বস্তির সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো কেবিনের চাপ তাদের সংবেদনশীল কানে চাপ দেয়। বাচ্চাদের কান প্রাপ্তবয়স্কদের কানের তুলনায় বেশি সংবেদনশীল এবং তারা কানের ওপর বাতাসের চাপকে প্রাপ্তবয়স্কদের মতো করে সামঞ্জস্য করতে পারে না।

প্রাপ্তবয়স্কদের কান এবং শিশুদের কানের মধ্যে একটি মৌলিক শারীরবৃত্তীয় পার্থক্য রয়েছে। যেখানে শিশুর অপরিণত ইউস্টাচিয়ান টিউব একটি মুখ্য ভূমিকা পালন করে।

এই টিউব হলো একটি নল যা মধ্যকর্ণ ও নাসোফ্যারিনক্সের বা উপরের গলা এবং অনুনাসিক গহ্বরের পিছনের অংশের সঙ্গে সংযোগ ঘটায়। এটিই মধ্যকর্ণে চাপ নিয়ন্ত্রণ করে, বাইরে থেকে আসা চাপ সমন্বয় করতে সাহায্য করে।

প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে এই টিউবটি সাধারণত বেশিরভাগ সময় বন্ধ থাকে, শুধু চিবাতে, গিলতে এবং হাই তোলার জন্য খোলা থাকে। এই প্রক্রিয়াগুলোর জন্য মধ্যম কান এবং নাসোফারিনক্সের মধ্যে বায়ু পৌঁছাতে পারে।

বলা হয় বিমানে হাই তোলা বাতাসের অতিরিক্ত চাপকে উপশম করতে সাহায্য করে। অ্যারো কর্নারের (ওয়েবসাইটটি বিমানচালনার সমস্যাগুলো সাধারণ মানুষের জন্য সহজে বোধগম্য করে) মতে, একটি শিশুর ইউস্টাচিয়ান টিউব ততটা শক্তিশালী না বা ভালোভাবে বিকশিত না। তাই এই প্রক্রিয়াটি বাচ্চারা ভালোভাবে সম্পাদন করতে পারে না, এভাবে চাপযুক্ত প্লেনের কেবিনে অনুভূত বাহ্যিক চাপ তাদের কানে ধাক্কা দেয় এবং আঘাত করে।

তবে এ ক্ষেত্রে হেডফোন প্লেনে শিশুদের সাহায্য করে। অ্যারো কর্নারের মতে, শূন্য থেকে ২ বছর বয়সে শিশুদের শ্রবণশক্তি বিকশিত হতে থাকে। তাই বিমানে ভ্রমণের সময় শিশুদের হেডফোন বা ছোট ইয়ারপ্লাগ এক্ষেত্রে সহায়তা করে।

শিশুদের শান্ত করার জন্য বাবা-মা বোতলে শিশুদের খাবার বা শান্ত করার মতো কোনো বস্তু রাখতে পারেন বা বুকের দুধ খাওয়াতে পারেন।

এ ছাড়া, বিমানের কেবিনের ভেতর শব্দের মাত্রা তীক্ষ্ণ হয়, বিশেষ করে উড্ডয়নের সময়। বাবা-মায়েরা এই প্রকট শব্দ শিশুর কানে প্রবেশ সীমিত করতে তুলোর বল ব্যবহার করার কথাও বিবেচনা করতে পারেন। এটি শিশুদের ঘুমাতে সাহায্য করতে পারে।

তবে, শিশুর কানের এই যন্ত্রণা ক্ষণস্থায়ী- এটি দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা সৃষ্টি করে না। কয়েক মিনিটের মধ্যেই বিষয়টি সহজ হয়ে যায়, কারণ ইউস্টাচিয়ান টিউবগুলো এক সময় কানের পর্দার উভয় পাশের বাতাসের চাপের সামঞ্জস্য করে দেয়।

অনুবাদ করেছেন তানজিনা আলম
 

Comments

The Daily Star  | English

Is the govt backing the wrongdoers?

BNP acting Chairman Tarique Rahman yesterday questioned whether the government is being lenient on the killers of a scrap trader in front of Mitford hospital due to what he said its silent support for such incidents of mob violence.

6h ago