আমিরাতকে হারাতেই ঘাম ছুটে যাওয়ায় ভাবাচ্ছে যা

Bangladesh cricket team

আইসিসি সহযোগী সদস্য দেশ হওয়ায় হরহামেশা বড় দলগুলোর বিপক্ষে খেলারই সুযোগ পায় না সংযুক্ত আরব আমিরাত। সেই আমিরাতের বিপক্ষেও জিততে বিস্তর পেরেশান হতে হলো নুরুল হাসান সোহানদের। বিশ্বকাপের আগে দলের এমন অবস্থায় ঘাটতির জায়গাগুলোও প্রকাশ্য।

এর আগে আর কেবল একবারই বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলেছিল আমিরাত। ২০১৬ সালের এশিয়া কাপে মিরপুরের সে ম্যাচ বাংলাদেশ জিতেছিল অনায়াসে। আমিরাতের সেই দলটির কেউই নেই এবাররের দলে। নতুন আদলের দলটি বাংলাদেশকে প্রায় ভড়কেই দিয়েছিল।

১৫৯ রানের লক্ষ্য আর একটু হলেই পেরিয়ে গিয়েছিল তারা। শেষ ওভারে গিয়ে পাওয়া ৭ রানের জয়ে বাংলাদেশ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেও গভীরে জমা হওয়া চিন্তাগুলোও নাড়া দিবে বিস্তর। চলতি বছর ১১টি টি-টোয়েন্টি খেলে এই নিয়ে মাত্র তৃতীয় জয় আসল। সেই জয়টিও প্রায় হাতছাড়া হওয়া দশা হয়েছিল। 

ব্যাটিং সংকট

এশিয়া কাপে কিছুতেই কিছু হচ্ছে না দেখে মেইক শিফট ওপেনার হিসেবে খেলানো হয়েছিল মেহেদী হাসান মিরাজ ও সাব্বির রহমানকে। মিরাজের ফাটকা সেদিন কাজে লাগলেও সাব্বির ছিলেন  ব্যর্থ। চোট কাটিয়ে দলের সেরা ব্যাটারদের একজন লিটন দাস ফিরে এলেও আমিরাতের বিপক্ষে তাকে ওপেনে নামানো হয়নি। মেইক শিফটেই রাখা হয় ভরসা।

তবে সেটা যে সমাধান নয় তা বোধহয় কিছুটা খোলাসা হয়েছে। পেস বলে নিজের দুর্বলতা দেখিয়েছেন মিরাজ, ধুঁকেছেন পুরোটা সময়। ১৪ বল খেলে আউট হয়েছেন ১২ রান করে। সাব্বির খুলতে পারেননি রানের খাতাই। শর্ট বলে পুল শট যেভাবে ব্যাটে নিতে পারেননি তাতে তার পজিশন হয়েছে প্রশ্নবিদ্ধ।

লিটন তিনে নেমে তিন চার মেরে আউট হয়ে যান। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে রান করা ব্যাটারকে ওপেনিং পজিশনে ফেরানো না হলে সমস্যা একটা থেকেই যাবে।

টপ অর্ডারের মতো মিডল অর্ডারেও আফিফ হোসেন ছাড়া ভরসা ছবি ছিল না। লম্বা সময় পর ফেরা ইয়াসির আলি জড়তা কাটাতে পারেননি, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত এশিয়া কাপের ছন্দ নিয়ে আসতে পারেননি। একাদশ ওভারে ৭৭ রানে ৫ উইকেট পড়ে গিয়েছিল। ব্যক্তিগত ২ রানে আফিফ জীবন না পেলে বিব্রতকর পরিস্থিতিই ছিল অপেক্ষায়।

ম্যাচ জিতে এসে আফিফ অবশ্য জানালেন, শুরুতে উইকেট ছিল কঠিন। সেকারণেই ভুগেছেন ব্যাটাররা, 'প্রথমে উইকেট কঠিন ছিল। বল গ্রিপ করছিল। টপ অর্ডার ভাল করতে পারেনি। পরের ম্যাচে করবে। এটা কোন সমস্যা না।'

Mustafizur Rahman

মোস্তাফিজ-সাইফুদ্দিনে দুশ্চিন্তা

অনেকদিন ধরেই নিজের চেনা ছন্দে নেই মোস্তাফিজুর রহমান। ঘরের বাইরে তিনি একদমই সাদামাটা। এমনকি আমিরাতের বিপক্ষে করেছেন গড়পড়তা বোলিং। দুই উইকেট পেলেও ছিল না ঝাঁজ। ৪ ওভারে দিয়েছে ৩১ রান। মাঝের ওভারে বল করতে এসে প্রয়োজন মেটাতে পারেননি। এক সময় স্লগ ওভারে বল করতেন। এখন তাকে সেই সময়টায় বল দেওয়ার সাহসই করেন না অধিনায়করা।

তাসকিন আহমেদ, ইবাদত হোসেন, হাসান মাহমুদদের টপকে একাদশে রাখা হয়েছিল সাইফুদ্দিনকে। আলগা বোলিং করে প্রতিপক্ষের হাতে ম্যাচই প্রায় তুলে দিয়েছিলেন তিনি। ৪ ওভারে তার বল থেকে খসেছে ৪০ রান। বিশ্বকাপ স্কোয়াডে না থাকা শরিফুল ইসলাম তুলনায় ভাল করেছেন। ২১ রানে ধরেছেন তিন শিকার। মোস্তাফি-সাইফুদ্দিনের নির্বিষ বোলিং বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশের জন্য স্বস্তির খবর নয়।

বাজে ফিল্ডিংয়ের মহড়া

রান বাড়ায় শিশির বাড়ছিল, বল ধরা একটু কঠিন ছিল। তবে বাংলাদেশের ফিল্ডিং তবুও বলতে হয় দৃষ্টি কটু। এক রানের জায়গায় দুই রান এসেছে, মিস ফিল্ডিংয়ে বেরিয়েছে একাধিক বাউন্ডারি। ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ পরিস্থিতিতে ক্যাচ ফসকেছেন মোসাদ্দেক ও সাইফুদ্দিন। তাদের ফসকে যাওয়া ক্যাচগুলো ম্যাচের নির্ধারক হয়ে যেতে পারত আর একটুর জন্য।

অনেকের বাজে ফিল্ডিংয়ের বিপরীতে মিরাজকে পাওয়া গেছে উজ্জ্বল ব্যতিক্রম। মোস্তাফিজের একটি উইকেটের বড় কৃতিত্ব তো মিরাজের। আমিরাত অধিনায়ক সিপি রিজওয়ানের ক্যাচ পয়েন্টে চিতার ক্ষিপ্রতায় হাতে জমান তিনি। পরে নিজের বলে ঝাঁপিয়েও নেন রিটার্ন ক্যাচ। এমনকি গ্রাউন্ড ফিল্ডিংয়েও মিরাজ ছিলেন নজরকাড়া।

মঙ্গলবার দ্বিতীয় ম্যাচে নিজেদের ভুল থেকে বাংলাদেশ বেরিয়ে আসতে পারে কিনা দেখার বিষয়।

Comments

The Daily Star  | English
Development philosophy of the FY2026 budget

What the development philosophy should be for the FY2026 budget

The philosophical focus of the upcoming budget should be pro-poor and pro-people.

13h ago