চবিতে যৌন নিপীড়ন: ভিডিও ছড়ানো বন্ধে ব্যবস্থা নিতে আদালতের নির্দেশ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের ভিডিও যাতে ছড়িয়ে না পরে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রামের একটি আদালত।
বুধবার চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আজিজ আজমদ ভুঞার আদালতে এই মামলার এক আসামির জামিন আবেদন শুনানিকালে আদালত এই আদেশ দেন।
একইসঙ্গে আদালত আসামি নূর হোসেন শাওনের জামিন আবেদন নাকচ করেন।
আদালত এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) হাটহাজারী থানার এসআই মিজানুর রহমানকে এ ঘটনার সময় ধারণ করা ভিডিও যাতে ছড়িয়ে না পরে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন।
গত ৫ সেপ্টেম্বর আদালতে জামিন আবেদন করেন আসামি শাওন। আদালত আজ শুনানির দিন ধার্য্য করেন এবং একই সাথে আদালতে চবি প্রক্টর এবং ভিকটিমকে হাজির হতে নির্দেশ দেন।
শুনানির সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জেলা পিপি শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী আদালতকে বলেন, 'আসামিরা যৌন নিপীড়নের ভিডিও ধারণ করেছে। এখন আমরা আশঙ্কায় আছি যদি ভিডিও চিত্র কোনোভাবে ছড়িয়ে পড়ে তাহলে ছাত্রীর সামাজিক ও পারিবারিক জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।'
তখন বিচারক মামলার আইওকে কোনোভাবেই যাতে ভিডিও চিত্র ছড়িয়ে না পড়ে সে বিষয়ে নির্দেশ দেন। প্রয়োজনে আদালত সিআইডি বা অন্য কোনো সংস্থার সহায়তা নিতে বলেন।
পিপি শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী ভিডিও চিত্র ধারণ করায় এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের পাশাপাশি সাইবার নিরাপত্তা আইনেও অপরাধ সংঘটিত হয়েছে বলে আদালতকে জানান। তিনি আদালতকে জানান ভিকটিম গতকাল ৫ আসামিকে শনাক্ত করেছে এবং এই ৫ জনই ঘটনার সময় সেখানে ছিলেন।
পিপি ইফতেখার সাইমুল সাংবাদিকদের বলেন, 'সাইবার ক্রাইমের ধারা মামলায় সংযোজনের জন্য সংশ্লিষ্ট নিম্ন আদালতে আবেদন করতে বাদি পক্ষকে নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত।'
এর আগে আদালতে শুনানিতে হাজির হন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রবিউল হাসান ভুঁইয়া ও সহকারী প্রক্টর অরূপ বড়ুয়া।
এ ঘটনায় জড়িতদের বিষয়ে চবি কর্তৃপক্ষ কী ব্যবস্থা নিয়েছে তারা তা আদালতকে জানান এবং আদালত এতে সন্তুষ্ট হয়েছেন বলে জানিয়েছেন
গত ১৭ জুলাই চবির প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় চবির ২ শিক্ষার্থী ও হাটহাজারী কলেজের ২ শিক্ষার্থীসহ ৫ জনকে ২৩ জুলাই গ্রেপ্তার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৭)। ওই ৫ জন ক্যাম্পাসে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জানায় র্যাব।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মোহাম্মদ আজিম (২৩), নুরুল আবছার বাবু (২২), নূর হোসেন শাওন (২২), মাসুদ রানা (২২) ও সাইফুল ইসলাম (২৪)। তাদের মধ্যে হাটহাজারী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী মাসুদ রানা এবং নূর হোসেন শাওন। ঘটনার পর চবি কর্তৃপক্ষ এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় তাদের বহিস্কার করে।
Comments