সমুদ্রে লুট করা ইলিশসহ ১২ ডাকাত আটক, ইউপি সদস্য জড়িত: র‌্যাব

আটককৃত ডাকাত দল। ছবি: সংগৃহীত

১২ জনের একটি দল। একসময় তারা ট্রলারে করে গভীর সমুদ্রে মাছের খোঁজে বের হতেন। জাল ফেলে ধরতেন ইলিশসহ নানা জাতের মাছ। এখনো তারা ট্রলার নিয়ে গভীর সমুদ্রে যান, তবে মাছ ধরতে নয়, অন্যের মাছ লুট করতে। একসময় জেলে হিসেবে পরিচিত থাকলেও এখন তাদের পরিচয় দস্যু বা ডাকাত।

গত ২৭ আগস্ট চট্টগ্রামের অন্তর্ভুক্ত সাগর এলাকায় ৯টি মাছ ধরার ট্রলারে ডাকাতির ঘটনায় টানা ৪৮ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে সাগর এবং বাঁশখালী এলাকা থেকে সেই ১২ ডাকাতকে আটক করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব-৭)।

র‍্যাব বলছে, কম সময়ে বেশি লাভ করতে তারা মাছ ধরার ট্রলারে ঘুরে ঘুরে ডাকাতি করতেন। আর বাশঁখালীর গন্ডামারা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আনসার এই দলটিকে শেল্টার দেন।

উদ্ধারকৃত ইলিশ। ছবি: সংগৃহীত

আটককৃতরা হলেন, আনোয়ার, লিয়াকত (মাঝি), মনির, আবুল খায়ের (ইঞ্জিন ড্রাইভার), নবীর হোসেন, নেজামউদ্দিন, হুমায়ুন, সাহেদ, সাদ্দাম, আতিক, এমরান এবং আমানউল্লাহ।

সেসময় একটি ট্রলার, আনুমানিক ৩ হাজার পিস ইলিশ মাছ, মাছ ধরার বড় জাল, ৩টি ওয়ান শুটারগান, একটি চাইনিজ কুড়াল, ১৬টি দা ও ছুরি, একটি বাইনোকুলার, ৪টি টর্চলাইট, ২টি চার্জারলাইট, ২টি হ্যান্ডমাইক, ৭০টি মোবাইল এবং নগদ ৫ হাজার ৭০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।

র‍্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, 'এরা সবাই একসময় জেলে হিসেবে সাগরে মাছ ধরতে গেলেও এখন তারা পেশাদার ডাকাত। মূলত কম পরিশ্রমে বেশি লাভ, এই উদ্দেশ্যে তারা মাছ ধরার ট্রলারে, বিশেষ করে ইলিশ মাছের নৌকায় ডাকাতি শুরু করেছে।'

জব্দকৃত ট্রলার। ছবি: সংগৃহীত

'বাঁশখালী এবং এর আশপাশের এলাকার গভীর সমুদ্রে এই দলের সদস্যরাই ডাকাতি করতেন। গভীর সাগরে মূলত ৩টি বড় ডাকাত দল কাজ করে। তাদের মধ্যে এই গ্রুপটি বাঁশখালীর ডাক্তার দল হিসেবে পরিচিত। এ ছাড়াও, কুতুবদিয়া গ্রুপ ও পেকুয়া গ্রুপ নামেও দুটি গ্রুপ সক্রিয় আছে। হাতিয়া ও নোয়াখালী থেকে এসেও এখানে ডাকাতি করছে বলে জানা যাচ্ছে', বলেন তিনি।

এই র‌্যাব কর্মকর্তা আরও বলেন, 'সমুদ্রে লুট করা মাছ তীরে নিয়ে এসে বাঁশখালীর একটি গ্রুপের কাছে বাজারমূল্যের কম দামে বিক্রি করে দিতেন তারা। মাছের ট্রলারে ডাকাতি করা ছাড়াও জেলেদের কাছ থেকে নৌকাপ্রতি ৫০ থেকে ১০০ পিস করে ইলিশ মাছ চাঁদা হিসেবেও নিচ্ছে কয়েকটি প্রভাবশালী গ্রুপ।'

স্থানীয় সূত্র জানায়, ইউপি সদস্য আনসার নিজেও ২০-২৫ বছর আগে জেলে হিসেবে কাজ করতেন। বর্তমানে ২ দফায় তিনি নির্বাচিত। তার নিজস্ব ট্রলারে করেই ঘটছে এসব ডাকাতির ঘটনা। তার ছেলে আনোয়ার এই ট্রলার দেখাশোনা করেন।

এই দলটি মোট ১৬টি ট্রলারে ডাকাতির কথা স্বীকার করেছে বলেও জানান র‍্যাব-৭ অধিনায়ক।

Comments

The Daily Star  | English

How Chattogram built its economic legacy

Picture a crowded harbour where the salty seabreeze carries whispers of far-off lands, where merchants of all creed and caste haggle over silks and spices, and where towering ships of all varieties – Chinese junks, Arab dhows, and Portuguese carracks – sway gently in the waters of the Bay of Bengal.

12h ago