'শনিবার বিকেল’-এ কিছু বিষয় সংযোজন করলে সমস্যা কেটে যাবে: তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আপিল কর্তৃপক্ষ 'শনিবার বিকেল' সিনেমার পরিচালক ও প্রযোজককে জানিয়ে দেবে সিনেমায় কী কী সংযোজন করা প্রয়োজন। সেগুলো সংযোজন হলে এই সিনেমা মুক্তি পাওয়ারে ক্ষেত্রে যে সমস্যা আছে, তা কেটে যাবে।
আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে চলচ্চিত্র নির্মাতা, পরিচালক, শিল্পী ও অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ কথা বলেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'ঢাকায় হলি আর্টিজানে যে হামলা হয়েছিল, সেই ঘটনার ওপর ভিত্তি করে এই সিনেমাটি নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে ২ জন পুলিশ অফিসার মারা গেছেন এবং আমাদের পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনী অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে জঙ্গিদের দমন করেছে। সেন্সর বোর্ডের অভিমত, সেই বিষয়গুলো সিনেমাটিতে আসেনি। সেজন্য এই দৃশ্যগুলো সংযোজন করতে বলা হয়েছে। সেটি তারা কিছুটা করেছে বলে আমাকে জানিয়েছে। কিন্তু সেটিও যথেষ্ট নয়। তারা আপিল করেছিল। আপিল কর্তৃপক্ষ সিনেমার পরিচালক ও প্রযোজককে জানিয়ে দেবে কী কী সংযোজন করা প্রয়োজন। সেগুলো সংযোজন হলে আমি মনে করি এই সিনেমা রিলিজ করার ক্ষেত্রে যে সমস্যা আছে সেটি কেটে যাবে।'
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, 'সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি সিনেমা আবার দর্শকদের হলে ফিরিয়ে এনেছে। সেই সিনেমাগুলোর একটি হাওয়া। এর পরিচালকের বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়েছে। আমি বিদেশে ছিলাম, জানার সঙ্গেসঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরসঙ্গে কথা বলি, সেই মামলা প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যে কর্মকর্তা মামলা করেছেন, তাকে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কারণ দর্শাও নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আইনের যদি ব্যত্যয় হয়ে থাকে তাহলে পরিচালককে নোটিশ করতে পারতো। সরাসরি কোর্টে গিয়ে মামলা করা সমীচীন হয়নি বলে আমি মনে করি।'
ওটিটি প্লাটফর্ম নিয়ে ড. হাছান বলেন, 'ওটিটি একটি ক্রমবর্ধমান আধুনিক প্লাটফর্ম এবং বর্তমান পৃথিবীর বাস্তবতা। আমরা এটিকে প্রমোট করতে চাই। ওটিটি প্লাটফর্ম এত বিস্তৃত, এত ব্যাপকভাবে ক্রমবর্ধমান যে এটিকে সেন্সর করা সম্ভব নয়। সেজন্য এটি একটি নীতিমালার ভিত্তিতে পরিচালিত হওয়াই বাঞ্ছনীয়।'
'যারা ওটিটি প্লাটফর্ম নিয়ে কাজ করেন তাদেরকে দিয়েই মন্ত্রণালয় একটি কমিটি করে দিয়েছে, সেই কমিটি কাজ করছে এবং সেই কমিটি সমস্ত অংশীজনদের সাথে আলাপ করে তারা এই নীতিমালা চূড়ান্ত করবে', যোগ করেন সম্প্রচারমন্ত্রী।
তিনি বলেন, 'আমরা এমন একটি নীতিমালা করতে চাই, যে নীতিমালা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে এবং একইসঙ্গে আমাদের কৃষ্টি, ঐতিহ্য, সংস্কৃতিকে সংরক্ষণ করবে।
অনুদান নিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, 'সিনেমা শিল্প নানা সংকটের মধ্য দিয়ে এখন ভালোর দিকে যাচ্ছে। আমরা বাণিজ্যিক ছবিতে অনুদান দিয়েছি। কারণ সিনেমা বানিয়ে আসলে পয়সা উঠত না, এখন উঠবে। এখন আবার দর্শক ফিরে আসছে, সিনেমা হল বাড়ছে। আস্তে আস্তে পরিস্থিতি ভালো হচ্ছে। একইসঙ্গে আর্টফিল্মে অনুদান দেওয়া প্রয়োজন। আর্টফিল্ম ব্যবসা করতে পারে না, কিন্তু আর্টফিল্মের প্রয়োজন আছে।'
বৈঠকে চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব মোরশেদুল ইসলাম, নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু, তারিক আনাম খান, অমিতাভ রেজা চৌধুরী, এস এ হক অলীক, আফসানা মিমি, চঞ্চল চৌধুরী, মেজবাউর রহমান সুমন, সৈয়দ গাউসুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
চলচ্চিত্র নির্মাতা মোরশেদুল ইসলাম ও নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু সাংবাদিকদের বলেন, 'বিদেশে অবস্থানকালেও দেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনের সমস্যা সমাধান করে দেওয়ায় আমরা মন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছি। আমাদের দাবির প্রতিটি বিষয়েই অত্যন্ত ইতিবাচক ও ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।'
Comments