খরায় গাছের বেঁচে থাকার ক্ষমতা বাড়ায় অ্যালকোহল: গবেষণা

স্টার ফাইল ছবি

পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধের বহু দেশের মানুষ গ্রীষ্মের প্রচণ্ড শুষ্কতা ও তাপদাহ থেকে বাঁচতে দিনের শেষে অ্যালকোহল পান করে থাকেন। গাছের ক্ষেত্রে এ বিষয়টা আরও বেশি কার্যকর। গত ২৫ আগস্ট মার্কিন সংবাদ সংস্থা সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এ চমকপ্রদ তথ্য জানা গেছে।

প্লান্ট অ্যান্ড সেল ফিজিওলজি নামের জার্নালে প্রকাশিত একটি সমন্বিত গবেষণায় দেখা গেছে, খরার সময়ে গাছদের বেঁচে থাকতে ইথানল বা অ্যালকোহল সাহায্য করতে পারে। এমন কী, ইথানলের ব্যবহারে গাছগুলো ২ সপ্তাহ পর্যন্ত পানি ছাড়াই বাঁচতে পারে।

পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, চারাগুলো পানি না পেলে প্রাকৃতিকভাবেই ইথানল তৈরি করে। এখন পর্যন্ত এর কারণ জানতে পারেনি বিজ্ঞানীরা। উদ্ভিদের এই প্রবণতার ওপর ভিত্তি করে নতুন এক গবেষণায় জাপানের রিকেন সেন্টার ফর সাসটেইনেবল রিসোর্স সায়েন্সের বিজ্ঞানীরা মত প্রকাশ করেছেন, খরার সময় গাছের চারাগুলোতে অ্যালকোহল প্রয়োগে সুফল পাওয়া যেতে পারে।

প্রধান গবেষক মোতোআকি সেকি বলেন, 'প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকার জন্য উদ্ভিদের কী কী উপকরণ প্রয়োজন হয়, সেগুলো খুঁজতে যেয়ে আমরা এই তত্ত্ব আবিষ্কার করেছি।'

এই গবেষণা থেকে পাওয়া তথ্য শুধু বাগানের ফলমূলই নয়, সারা বিশ্বজুড়ে চাল ও গমের মতো খাদ্য উপকরণের সরবরাহ অব্যাহত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বিশেষত, ইউক্রেন যুদ্ধ, ইউরোপের তাপদাহ ও সাপ্লাই চেইনে বিভিন্ন ধরনের বাধাবিঘ্নের মাঝে এটি খুবই কার্যকর হতে পারে।

গবেষকরা বলছেন খরা বা পানিশূণ্যতার সময় খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ইথানলের ব্যবহার একটি 'উপযোগী ও সহজ' সমাধান হতে পারে।

গবেষকরা প্রথমে গম ও ধানের চারা রোপণ করেন এবং এগুলোতে নিয়মিত পানি দেন। এরপর কিছু চারা আলাদা করে নিয়ে মাটিতে ৩ দিন ধরে টানা অ্যালকোহল প্রয়োগ করেন বিজ্ঞানীরা। তারপর উভয় দল (যেগুলো অ্যালকোহল পেয়েছে এবং যেগুলো পায়নি) চারায় প্রায় ২ সপ্তাহ পানি বা অন্য কোনো তরল দেওয়া হয়নি। এরপর আবারও নিরীক্ষা করে দেখা গেছে, যেসব উদ্ভিদ 'মদ্যপান' করেছিল, সেগুলো অপেক্ষাকৃত ভালো অবস্থায় ছিল।

এরপর আবার পানি দেওয়ার পর ইথানল পাওয়া গম ও ধানের চারার মধ্যে ৭৫ শতাংশ বেঁচে ছিল, কিন্তু অন্য চারাগুলোর ক্ষেত্রে এই হার মাত্র ৫ শতাংশ।

প্রধান গবেষক আরও জানান, চারাগাছে পরিমিত পরিমাণ ইথানলের বাহ্যিক প্রয়োগ একটি উপযোগী, সহজ ও স্বল্পব্যয়ের কৃষিপদ্ধতি হতে পারে, যা বিভিন্ন উদ্ভিদের খরার বিরুদ্ধে সহনশীলতা বাড়াবে।

তবে, তিনি সতর্ক করেন, বেশি মাত্রা ইথানলের ব্যবহারে হিতে বিপরীত হতে পারে।

মোতোআকি সেকি জানান, শিগগির তিনি ও তার দল গবেষণাগারের পরিবর্তে ফসল ক্ষেতে নিরীক্ষা চালাবেন।

 

অনুবাদ করেছেন মাহমুদ নেওয়াজ জয়

Comments

The Daily Star  | English

US retailers lean on suppliers to absorb tariffs

Rather than absorbing the cost or immediately passing it on to consumers, many US apparel retailers and brands have turned to their suppliers in Bangladesh, demanding they share the pain

5h ago