বাণিজ্যিকভাবে লন কার্পেট ঘাস চাষে প্রবাসফেরত রাব্বির মুখে হাসি

বাণিজ্যিকভাবে কার্পেট ঘাস চাষ করছেন প্রবাসফেরত গোলাম রাব্বি। ছবি: আলম পলাশ/স্টার

চাঁদপুরে পতিত জমিতে চাষ হচ্ছে সবুজ মোলায়েম লন কার্পেট ঘাস। দেখলে মনে হবে যেন সত্যিকারের কার্পেট। এই ঘাস বাণিজ্যিকভাবে চাষ করছেন প্রবাসফেরত গোলাম রাব্বি।

বাড়ি বা অফিসের আঙিনায়, বাগানে, কবরস্থানে, পাহাড়ে সৌন্দর্য বাড়াতে ও পরিবেশ রক্ষায় কার্যকরী কার্পেট ঘাস।

সরেজমিন দেখা যায়, চাঁদপুর শহরের পুরানবাজার লোহারপুল এলাকার গোলাম রাব্বি প্রায় ২ বছর আগে চাঁদপুর সদরের বহরিয়া দোকানঘর এলাকায় প্রায় ৪০ শতাংশ পরিত্যক্ত জমি ভাড়া নিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে এই ঘাসের চাষ শুরু করেন।

বর্তমানে লাভজনক হওয়ায় ৪ স্থানে প্রায় ৫ একর জমিতে এই ঘাস চাষ করা হচ্ছে।

ছবি: আলম পলাশ/স্টার

গোলাম রাব্বি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি দীর্ঘ প্রায় ৭ বছর বাহরাইনে ছিলাম। সেখানেই লন কার্পেট ঘাসের চাষ শিখি। সৌন্দর্য বাড়াতে সেখানে এই ঘাস ব্যাপকহারে ব্যবহার করা হয়।'

তিনি জানান, দেশে ফেরার পর তার বিদেশে যেতে ভালো লাগছিল না। বাড়ির কাছেই দোকানঘর জাফরাবাদ এলাকায় ফসলহীন উঁচু জমি খুঁজে বের করেন। ভারত থেকে এই ঘাসের চারা সংগ্রহ করে প্রথমে প্রায় ৪০ শতাংশ জমি ভাড়া নিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে এই ঘাসের চাষ শুরু করেন।

'যখন দেখলাম দেশে এটি করা যাচ্ছে, তখন আস্তে আস্তে জমির পরিমাণ বাড়াতে থাকি। পরবর্তীতে এটি বাণিজ্যিকভাবে বিক্রির জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিই। এরপর প্রকল্পটি বাড়তে থাকে,' যোগ করেন তিনি।

'বর্তমানে ৪ স্থানে এই ঘাস চাষ করছি,' উল্লেখ করে গোলাম রাব্বি আরও বলেন, 'লাভজনক ব্যবসা হওয়ায় এই ঘাস এখন অনলাইনে বসেই সারাদেশে বিক্রি করছি। চাষের নিয়ম পদ্ধতির জন্য প্রয়োজনে নিজেদের লোক দিয়েও ঘাস পৌঁছে দিচ্ছি।'

বর্তমানে তার প্রকল্পে ৪০ জন কাজ করছেন। আগ্রহী অনেকেই সরাসরি ঘাস নিতে মাঠে আসছেন।

গত শনিবার মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসক বাংলো ও মুন্সিগঞ্জ ভূমি অফিসের জন্য ৪ হাজার বর্গফুট কার্পেট ঘাস কেনা হয়েছে। প্রতি বর্গফুটের দাম পড়ে ৮০ টাকা।

চাষ পদ্ধতি

গোলাম রাব্বি বলেন, 'মূল নাম মেক্সিকান-বারমুডা গ্রাস। লন কার্পেট ঘাস হিসেবে বেশি পরিচিত। আমাদের দেশে অনেকে কার্পেট ঘাস নামে ডাকেন।'

তিনি ভারত থেকে চারা আনার পর এরপর তা ছোট ছোট টুকরো করে 'মুড়া' বানিয়ে পতিত জমিতে পলিথিন বিছিয়ে তার ওপর হালকা মাটি দিয়ে রোদে দেন। কয়েকদিন অল্প করে পানি দেন। প্রতি মাসে অন্তত একবার রাসায়নিক সার ব্যবহার করেন।

কার্পেটের মতো রাখতে ১৫ দিন পর পর কাঁচি দিয়ে আগা ছাঁটা হয়।

আয়-ব্যয়

গোলাম রাব্বি জানান, তিনি ৯০ হাজার বর্গফুট জমিতে এটি চাষ করছেন। তার ৪ প্রকল্পের পেছনে খরচ হয়েছে প্রায় ১৮ লাখ টাকা। জমি বাবদ ভাড়া দিতে হয় বছরে ৫ লাখ টাকা। রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জনপ্রতি দৈনিক হাজিরা ৬০০ টাকা।

বর্তমানে তিনি এই ঘাস প্রতি বর্গফুট বিক্রি করছেন ৮০ টাকায়।

তার মতে, 'এতদিন লাভের মুখ দেখিনি। এখন তা হতে পারে। ইতোমধ্যে এই ঘাস চট্টগ্রাম, সিলেট, গাজীপুর, নরসিংদী, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জসহ অনেক জেলায় বিক্রি হয়েছে। এই ঘাস নিতে প্রতিদিনই কোনো না কোনো জেলা থেকে আগ্রহীরা যোগাযোগ করছেন।'

Comments

The Daily Star  | English
Binimoy platform suspended by Bangladesh Bank

BB suspends Binimoy over irregularities

During the previous AL govt, it was developed by the IDEA under the ICT Division at a cost of Tk 65 crore.

10h ago