চাঁদে নাসার ৪ বিলিয়ন ডলারের নতুন রকেট

চাঁদে নতুন রকেট পাঠানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা। ছবি: এপি
চাঁদে নতুন রকেট পাঠানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা। ছবি: এপি

চাঁদে নতুন রকেট পাঠানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা। রকেটটিকে লঞ্চ প্যাডে আনা হয়েছে। আগামী ২৯ আগস্ট রকেটটি চাঁদের কক্ষপথের উদ্দেশে রওনা হবে।

আজ বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল রকেটটি ফ্লোরিডার মেরিট দ্বীপে কেনেডি মহাকাশ কেন্দ্রের লঞ্চ প্যাডে আনা হয়।

মহাকাশ কেন্দ্র থেকে প্রায় ৪ মাইল দূরে লঞ্চ প্যাডে ৩২২ ফুট দীর্ঘ রকেটটিকে কেনেডি মহাকাশ কেন্দ্রের হ্যাঙ্গার থেকে আনতে প্রায় ১০ ঘণ্টা সময় লাগে।

চাঁদে পরীক্ষামূলক অভিযানের জন্য রকেটটিকে প্রস্তুত করা হচ্ছে। প্রায় ৫০ বছর পর আবারও চাঁদে রকেট পাঠাচ্ছে নাসা। এতে মানুষ থাকবে না। রকেটের ভেতরে মানুষের মতো দেখতে ৩টি ম্যানিকুইন থাকবে। সঙ্গে থাকবে বিকিরণ ও কম্পন মাপার সেন্সর।

চাঁদে নতুন রকেট পাঠানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা। ছবি: এপি
চাঁদে নতুন রকেট পাঠানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা। ছবি: এপি

রকেট থেকে আলাদা হয়ে 'ওরিওন' নামের ক্যাপসুলটি চাঁদের চারপাশ প্রদক্ষিণ ও প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহের পর প্রশান্ত মহাসাগরের পড়বে। অভিযানটি ৬ সপ্তাহ ধরে চলবে।

এই ফ্লাইটটি নাসার আর্টেমিস প্রকল্পের প্রথম চন্দ্রাভিযান। সংস্থাটির পরবর্তী লক্ষ্য হচ্ছে ২০২৪ সালের মধ্যে ২ নভোচারীসহ চাঁদের কক্ষপথে রকেট পাঠানো এবং ২০২৫ সালে চাঁদের বুকে নভোচারীদের নামানো।

গত মার্চে নাসা'র মহাপরিচালক পল মার্টিন জানান, আর্টেমিস প্রকল্পের প্রথম ৪ ফ্লাইটের প্রতিটির জন্য ৪ দশমিক ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ হবে। ২০১২ সালে এ প্রকল্প শুরুর সময় ফ্লাইট প্রতি খরচ ধরা হয়েছিল ৫০০ মিলিয়ন ডলার। শুরুতে ২০১৭ সালে চাঁদে রকেট পাঠানোর লক্ষ্যমাত্রা হাতে নেওয়া হয়েছিল।

চাঁদে নতুন রকেট পাঠানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা। ছবি: এপি
চাঁদে নতুন রকেট পাঠানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা। ছবি: এপি

মার্টিন আরও জানান, এই খরচের মধ্যে শুধু রকেটের উৎপাদন ও একে উৎক্ষেপণ করার খরচ ধরা হয়েছে। এতে আর্টেমিস প্রকল্পের উন্নয়ন খরচ ধরা হয়নি।

নাসার নতুন এই এসএলএস (স্পেস লঞ্চ সিস্টেম) মুন রকেটটি অর্ধ-শতক আগে চন্দ্রযান অ্যাপোলো ১১ কে চাঁদে পৌঁছাতে ব্যবহৃত স্যাটার্ন ফাইভ রকেটের চেয়ে ৪১ ফুট ছোট। তবে এটি পুরনো রকেটের তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী।

নাসার প্রশাসক বিল নেলসন সাংবাদিকদের বলেন, 'এই রকেটটি দেখতে স্যাটার্ন ফাইভের মতো হলেও এটি সম্পূর্ণ নতুন। এতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। এর ভেতরে অনেক শক্তিশালী যন্ত্রপাতি আছে।'

'এর নির্মাণশৈলীও বেশ জটিল,' যোগ করেন নেলসন।

অ্যাপোলো প্রকল্পের আওতায় ১৯৬৯ সাল থেকে ১৯৭২ সালের মধ্যে ২৪ নভোচারী চন্দ্রাভিযানে গিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে ১২ জন সরাসরি চাঁদে নামেন।

গ্রিক পৌরাণিক দেবতা অ্যাপোলোর যমজ বোন আর্টেমিসের নামে নামকরণ করা নতুন এই প্রকল্পের আওতায় আরও টেকসই উদ্যোগ নেওয়ার আশা করছে নাসা।

এ ছাড়াও, এবার বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর নভোচারীদের মহাকাশে পাঠাতে চায় সংস্থাটি।

চাঁদে নতুন রকেট পাঠানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা। ছবি: এপি
চাঁদে নতুন রকেট পাঠানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা। ছবি: এপি

নেলসন ২৯ আগস্টের ফ্লাইটটিকে পরীক্ষামূলক হিসেবে আখ্যা দিয়ে জানান, সবে চন্দ্রাভিযান শুরু হলো।

এর আগেও ২ বার রকেটটিকে লঞ্চ প্যাডে আনা হয়েছিল। গত এপ্রিলে কাউন্টডাউনের সময় যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে রকেট থেকে জ্বালানি বের হয়ে যায়। অন্যান্য সরঞ্জামেও ত্রুটি দেখা দেয়। ফলে সংস্কারের জন্য রকেটটিকে হ্যাঙ্গারে ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হয় নাসা।

এরপর, জুনে আবারও কাউন্টডাউনের মহড়ার আয়োজন হয়। সেবারের ফল আগের তুলনায় অনেক ভালো ছিল।

 

Comments

The Daily Star  | English

No justifiable reason to delay nat'l polls beyond Dec: Salahuddin

We have been able to make it clear that there is not even a single mentionable reason to hold the election after December, says the BNP leader

3h ago