২৮ মিলিয়ন ডলারে মহাকাশ ভ্রমণ!
অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা ও বিলিয়নিয়ার জেফ বেজোসের সঙ্গে মহাশূন্য ভ্রমণের সুযোগ পেতে সরাসরি নিলামে ২৮ মিলিয়ন ডলার দর উঠেছে। তাৎক্ষণিকভাবে দরদাতার নাম প্রকাশ করা হয়নি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গতকাল শনিবারে এই নিলামের আয়োজন করা হয়েছিল।
অ্যামাজনের মালিকানাধীন ব্লু অরিজিন প্রতিষ্ঠানের তৈরি নিউ শেপার্ড রকেটের প্রথম মহাকাশ যাত্রায় বেজোসের সঙ্গী হওয়ার জন্য নিলাম প্রক্রিয়াটি এক মাস ধরে চলেছে।
সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত শনিবারে সরাসরি নিলাম শুরু হওয়ার চার মিনিটের মধ্যে নিলামের দর ২০ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছে যায়। আর সাত মিনিটের মধ্যে নিলাম প্রক্রিয়া শেষ হয়।
ধারণা করা হচ্ছে, নিলামে যিনি বিজয়ী হয়েছেন তিনি একজন ধনকুবের ও মহাকাশপ্রেমী।
আগামী ২০ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম টেক্সাস থেকে ব্লু অরিজিনের নিউ শেপার্ড রকেটটি পৃথিবী ছেড়ে মহাশূন্যের পথে পাড়ি দিলে তা বেসরকারি উদ্যোগে মহাকাশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করবে।
ব্লু অরিজিনের প্রতিষ্ঠাতা ও অ্যামাজন ডট কম ই-কমার্স পোর্টালের প্রধান নির্বাহী বেজোস বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী মানুষ। এই মহাকাশপ্রেমী তার সমসাময়িক দুই বিলিয়নিয়ার রিচার্ড ব্র্যানসন ও ইলন মাস্কের সঙ্গে প্রথম তিন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে মহাকাশ ভ্রমণের প্রতিযোগিতায় রয়েছেন।
চূড়ান্ত নিলাম শেষ হওয়ার আগে বেজোস বলেন, ‘মহাশূন্য থেকে পৃথিবীকে দেখার ব্যাপারটি আপনার মধ্যে পরিবর্তন এনে দেয়। এটি পৃথিবী ও মানবতার সঙ্গে আপনার সম্পর্ককে বদলে দেয়।’
তিনি আরও জানিয়েছেন যে, এই ভ্রমণে তার সঙ্গে তার ভাই মার্কও থাকছেন।
ব্লু অরিজিন জানিয়েছে, সরাসরি নিলামের আগ পর্যন্ত সংস্থাটির ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইনে নিলামে সর্বোচ্চ দাম উঠেছিল চার দশমিক আট মিলিয়ন ডলার। অনলাইন নিলামে ১৪৩টি দেশের প্রায় ছয় হাজার মানুষ অংশ নিয়েছিলেন।
বহুজাতিক বিনিয়োগ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান মর্গান স্ট্যানলির বিশ্লেষক অ্যাডাম জোনাস তার ভোক্তাদের এ মাসের শুরুর দিকে বলেছিলেন, ‘পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী ও ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সর্বাধিক সুপরিচিত একজন মানুষকে মহাশূন্যে পাঠানোর অর্থ হচ্ছে, সেখানে আবিষ্কার, শিল্পায়ন ও বিনিয়োগের স্বপক্ষে একটি বড় রকমের বিজ্ঞাপন।’
নিলাম থেকে পাওয়া অর্থ দাতব্যমূলক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেওয়া হবে। তবে এক্ষেত্রে ব্লু অরিজিন আশা করছে যে প্রথম অভিযানটি সফল হলে এর মাধ্যমে তারা মহাশূন্যে পর্যটন ব্যবসায় অন্যদের আরও আগ্রহী করে তুলতে পারবে।
তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আগামী ৪ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবসের দিনে ভার্জিনের ভিএসএস ইউনিটি স্পেসপ্লেন মহাকাশ অভিযানে পরীক্ষামূলক ফ্লাইট চালাতে পারে।
সংশ্লিষ্ট একজন বিশেষজ্ঞ রয়টার্সকে জানিয়েছেন যে ভার্জিন গ্যালাকটিক হোল্ডিংসের প্রতিষ্ঠাতা ব্র্যানসননের আগামী ৪ জুলাইয়ের প্রচেষ্টা বেজোসের গৌরব ম্লান করে দিতে পারে।
ইতোমধ্যে ব্লু অরিজিন, ভার্জিন গ্যালাকটিক ও ইলন মাস্কের স্পেসএক্স মহাশূন্য ভ্রমণের পাশাপাশি তাদের রকেটগুলোর সমন্বিত ব্যবহারে বিশ্বের দূরবর্তী শহরগুলোর মধ্যে সংযুক্তি স্থাপনের ব্যাপারেও আলোচনা করেছে।
ইউবিএস জানিয়েছে, এ ধরনের ভ্রমণ খাতের বাজার ২০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি হতে পারে। তবে এক্ষেত্রে আকাশ-নিরাপত্তা সনদসহ আরও নানা প্রতিবন্ধকতা রয়েছে।
ব্লু অরিজিন ভবিষ্যতে মহাকাশ ভ্রমণে কী পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হতে পারে সে বিষয়ে এখনও কিছু জানায়নি।
২০১৮ সালে রয়টার্স এক প্রতিবেদন জানিয়েছিল, ব্লু অরিজিন কমপক্ষে মহাকাশ ভ্রমণে জনপ্রতি দুই লাখ মার্কিন ডলার নিতে পারে। তবে এ হিসাব এখন পরিবর্তিত হতে পারে।
Comments