রংপুর-দিনাজপুরে ট্রেনে যাত্রী বেড়েছে ২০ শতাংশ

দিনাজপুর রেল স্টেশন। ছবি: স্টার

জ্বালানী তেলের দাম বৃদ্ধি কারণে উত্তরের বিভিন্ন জেলায় গণপরিবহনের সংখ্যা কমার কারণে বাংলাদেশ রেলওয়ের যাত্রী বেড়েছে। গতকাল শনিবার তেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণে দিনাজপুর ও রংপুরের সড়কে চলাচল করেছে প্রায় অর্ধেক গণপরিবহন।

বিভিন্ন মহাসড়কে বাসের তুলনায় ত্রি-হুইলারই বেশি দেখা গেছে। গতকাল দিনাজপুরে আন্ত:নগর ও লোকার ট্রেনে যাত্রীর চাপ ছিল অনেক বেশি।

দিনাজপুর স্টেশন কর্মকর্তারা জানান, গতকাল শনিবার ছুটির দিন হওয়া সত্ত্বেও ট্রেনে যাত্রীর চাপ অনেক বেশি ছিল। আজ রোববার এই চাপ আরও বাড়বে। ঢাকা-পঞ্চগড় রুটে ৩টি ট্রেন, পঞ্চগড়-রাজশাহী রুটে একটি আন্ত:নগর ট্রেন ছাড়াও বেশ কয়েকটি লোকাল ট্রেন চলাচল করে। গতকাল শনিবার সবকটি ট্রেনে যাত্রীর চাপ ছিল। যা গত শুক্রবারের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি।

এছাড়া দিনাজপুরের পার্বতীপুর থেকে বেশ কয়েকটি রুটে প্রায় ২৫ জোড়া ট্রেন চলাচল করে। দিনাজপুর রেল স্টেশনের তত্ত্বাবধায়ক মোসারফ হোসেন জানান, মূলত তেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণে যাত্রীদের এই চাপ বেড়েছে।

দিনাজপুরের রামনগর এলাকার জুলফিকার আলী জানান, তিনি গতকাল শনিবার পারিবারিক কাজে রংপুরে যাওয়ার জন্য বাসে উঠেন। দশমাইল যাওয়ার পর কন্ট্রাক্টর ভাড়া চান ১৭০ টাকা। যদিও নির্ধারিত ভাড়া ১১০ টাকা। বাধ্য হয়েই বেশি ভাড়া দিয়ে যান তিনি। তবে কাজ শেষে বিকেলে ট্রেনে করে রংপুর থেকে দিনাজপুর আসেন।

তিনি জানান, বিকেলে ফেরা পথে ট্রেনে যাত্রীর চাপ বেশি ছিল। 

এদিকে, দিনাজপুর জেলায় ১৪টি রুটে প্রায় ৩৫০টি বাস চলাচল করে। এছাড়াও বিভিন্ন জেলার আগত বাস মিলিয়ে প্রায় ৬০০ বাস চলাচল করে এই জেলার সড়ক ও মহাসড়কে। গতকাল শনিবার প্রায় অর্ধেক বাস বের হয়নি সড়ক ও মহাসড়কে।

দিনাজপুর সড়ক পরিবহন মালিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাহেদ রিয়াজ পিম জানান, তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে শনিবার পার্বতীপুর, দেবীগঞ্জসহ বিভিন্ন রুটে বাস চলাচল কম করেছে।

জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় অন্যান্য দিনের তুলনায় রংপুরের বিভিন্ন জায়গায় বাস চলাচল কম ছিল। ফলে এখানেও চাপ বেড়েছে ট্রেনের ওপর।

রংপুর রেলওয়ে স্টেশনে ঢাকাগামী যাত্রী আলমগীর হোসেন বলেন, 'জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বাস চলাচল কমে গেছে বলে শুনেছি। তাই বাসের অপেক্ষায় না থেকে সরাসরি স্টেশনে চলে এসেছি। সন্ধ্যায় রংপুর এক্সপ্রেসে করে ঢাকা যাবো।'

রংপুর থেকে বুড়িমারী যাওয়ার জন্য আসেন মোসলেমা খাতুন। তিনি বলেন, 'মাঝেমধ্যে বাসে চলাচল করতাম। এখন বাস চলাচল কম ও ভাড়া বেশি হওয়ায় ট্রেনে যাওয়ার জন্য স্টেশনে এসেছি।'

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের লালমনিরহাট বিভাগীয় শাখার আওতায় প্রতিদিন ঢাকাগামী ১২ আন্ত:নগর, কমিউটার ১২টি ও লোকাল ট্রেন ৬টি চলাচল করে।

পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত রংপুর থেকে রেলে যাত্রী পরিবহন করা হয়েছে ১ লাখ ৭৯ হাজার ৬৬১ জন। এতে টিকিট বিক্রি বাবদ সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে ৩ কোটি ৯৬ লাখ ৭১ হাজার ৩৯১ টাকা।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের লালমনিরহাট বিভাগীয় ব্যবস্থাপক শাহ সুফি নুর মোহাম্মদ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কিছুটা প্রভাব রেলওয়ের ওপর পড়েছে। শনিবার সরকারি ছুটির দিন হলেও অন্যান্য দিনের তুলনায় যাত্রীদের চাপ বেশি ছিল। রেলে ২০ শতাংশ যাত্রী বেড়েছে।'

  

Comments

The Daily Star  | English
compensation for uprising martyrs families

Each martyr family to get Tk 30 lakh: Prof Yunus

Vows to rehabilitate them; govt to bear all expenses of uprising injured

3h ago