তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১৫ সেমি ওপরে, ২০ হাজার পরিবার পানিবন্দি

ভারত থেকে আসা উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে গতকাল সোমবার দুপুর থেকে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে লালমনিরহাটের ৫ এবং কুড়িগ্রামের ৩ উপজেলার ৮০টি চর ও নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের প্রায় ২০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
তিস্তাপাড়ের মানুষ তৃতীয় দফায় বন্যা পরিস্থিতিতে পড়েছেন। ছবি: স্টার

ভারত থেকে আসা উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে গতকাল সোমবার দুপুর থেকে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে লালমনিরহাটের ৫ এবং কুড়িগ্রামের ৩ উপজেলার ৮০টি চর ও নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের প্রায় ২০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

ঘরের ভেতর নদীর পানি প্রবেশ করায় অনেক পরিবার গবাদিপশু ও আসবাবপত্র নিয়ে সরকারি রাস্তা এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। তিস্তাপাড়ের মানুষ তৃতীয় দফায় বন্যা পরিস্থিতিতে পড়েছেন।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে তিস্তা নদীর পানি লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানিতে তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে সোমবার সন্ধ্যায় পানি ছিল বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপরে। ১২ ঘণ্টায় ১০ সেন্টিমিটার পানি হ্রাস পেয়েছে। আপাতত তিস্তায় পানি স্থিতি রয়েছে, তবে উজানের ঢলের কারণে পানি আরও বাড়তে পারে।'

ছবি: স্টার

তিনি আরও বলেন, 'উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের পানির চাপ কমাতে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি গেটের সবগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে।'

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম এলাকার পানিবন্দি কৃষক নজরুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে জানান, তিস্তায় আকস্মিক পানি বেড়ে যাওয়ায় নদীর পানি ঘরে ঢুকে পড়েছে। তার ৬ বিঘা জমির রোপা আমন ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এসব আমন ধানের গাছ ৫-৬ দিন পানির নিচে তলিয়ে থাকলে নষ্ট হয়ে যাবে। তারা ঘরে বসবাস করছেন, তবে গরু-ছাগল সরকারি রাস্তার ওপর রেখেছেন।

ছবি: স্টার

লালমনিরহাট সদর উপজেলার কালমাটি গ্রামের পানিবন্দি জনুফা বেওয়া ডেইলি স্টারকে জানান, ঘরের ভেতর কোমর সমান পানি। পরিবারের লোকজন সবাই সরকারি রাস্তার ওপর আশ্রয় নিয়েছেন। গ্রামের রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় তারা কলাগাছের ভেলায় চড়ে যাতায়াত করছেন। তিস্তায় পানি বাড়লে তাদের দুর্ভোগ আরও বেড়ে যায়।

ছবি: স্টার

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার গতিয়াশ্যাম গ্রামের পানিবন্দি কৃষক আবেদ আলী ডেইলি স্টারকে জানান, তিস্তায় আকস্মিক পানি বেড়ে যাওয়ায় তারা আবারও বন্যা পরিস্থিতিতে পড়েছেন। ঘরের ভেতর কোমর পযর্ন্ত পানি। তারা সরকারি রাস্তার ওপর আশ্রয় নিয়েছেন।

'বন্যার পানি ২-৩ দিনের মধ্যে নেমে না গেলে আমাদের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হবে', বলেন তিনি।

ছবি: স্টার

লালমনিরহাট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান সুজন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'তিস্তাপাড়ে বন্যা পরিস্থিতির খোঁজ-খবর রাখা হচ্ছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় চরাঞ্চল থেকে পানিবন্দি লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।'

তিনি বন্যা উপদ্রুত এলাকা পরিদর্শন করছেন বলেও জানান।

Comments

The Daily Star  | English

Floods cause Tk 14,421 crore damage in eastern Bangladesh: CPD study

The study highlighted that the damage represents 1.81 percent of the national budget for fiscal year (FY) 2024-25

1h ago