চিলমারীতে তিস্তার ভাঙনে নদীগর্ভে দুই শতাধিক বাড়ি

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রমনা ইউনিয়নের পাত্রখাতা গ্রামে তিস্তা নদীর ভাঙন মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে একের পর এক বসতভিটা ও আবাদি জমি। গত ২ মাস ধরে তিস্তার ভাঙনে এই গ্রামে দুই শতাধিক বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এ ছাড়া, প্রায় ৪০০ বিঘা আবাদি জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। ভাঙন হুমকিতে আছে আরও শতাধিক বসতভিটা ও কয়েকশ বিঘা আবাদি জমি এবং ৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার পাত্রখাতা গ্রামে তিস্তা নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ছবি: এস দিলীপ রায়

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রমনা ইউনিয়নের পাত্রখাতা গ্রামে তিস্তা নদীর ভাঙন মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে একের পর এক বসতভিটা ও আবাদি জমি। গত ২ মাস ধরে তিস্তার ভাঙনে এই গ্রামে দুই শতাধিক বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এ ছাড়া, প্রায় ৪০০ বিঘা আবাদি জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। ভাঙন হুমকিতে আছে আরও শতাধিক বসতভিটা ও কয়েকশ বিঘা আবাদি জমি এবং ৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

রমনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম আশেক আকা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পাত্রখাতা গ্রামে প্রতিদিনই তিস্তা নদীর ভাঙনে বিলীন হচ্ছে বসতভিটা ও আবাদি জমি। ভাঙন ঠেকাতে এক মাস আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড কার্যকর ব্যবস্থা নিলে এতো বসতভিটা নদীগর্ভে চলে যেত না। দুইদিন ধরে বালু ভর্তি জিও ফেলছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ভাঙনকবলিত পরিবারের লোকজন আশ্রয় নিয়েছেন সরকারি খাস জমি, রাস্তা ও অন্যের জমিতে। অনেকে গ্রাম ছেড়ে চলে গেছেন অন্য গ্রামে।'

ইউপি চেয়ারম্যান আরও বলেন, 'তিস্তা নদীর ভাঙন হুমকিতে থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- মন্ডলেরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদারীপাড়া মন্ডলেরহাট নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় ও পাত্রখাতা রিয়াজুল জান্নাহ্ দাখিল মাদ্রাসা।'

পাত্রখাতা রিয়াজুল জান্নাহ্ দাখিল মাদ্রাসার সুপার আব্দুল আজিজ আকন্দ বলেন, 'স্থায়ীভাবে ভাঙন ঠেকানো না গেলে তিস্তা নদীর ভাঙনে মানচিত্র থেকে পাত্রখাতা গ্রামটি মুছে যাবে। ভাঙন থেকে রক্ষা করা যাবে না শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো।'

পাত্রখাতা গ্রামে নদীভাঙনের বসতভিটা হারানো নয়া মিয়া (৫৫) জানান, তার শেষ সম্বল আট শতাংশের বসতভিটা হারিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন সরকারি রাস্তার ওপর। এক মাস আগে তার তিন বিঘা আবাদি জমি চলে গেছে তিস্তার উদরে।

'আমি এখন নিঃস্ব, ভূমিহীন। জমি কিনে বসতভিটা তৈরি করার সামর্থ্য নেই আমার,' বলেন তিনি।

একই গ্রামের ভাঙনকবলিত বাহার উদ্দিন জানান, 'শুক্রবার সকালে চোখের সামনে আমার দশ শতাংশ জমির বসতভিটা, একটি ফলের বাগান ও দুই বিঘা আবাদি জমি তিস্তার উদরে চলে গেছে। ঘর-বাড়ি সরিয়ে নিয়ে আশ্রয় নিয়েছি অন্যের জমিতে। সংসার চালাতে আমি এখন নিরুপায়।'

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ওই এলাকায় তিস্তা নদীর ভাঙন রোধে ৭০ হাজার জিও ব্যাগ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বালু ভরে এসব জিও ব্যাগ নদীতে ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, 'বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার কারণে ভাঙন পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Floods cause Tk 14,421 crore damage in eastern Bangladesh: CPD study

The study highlighted that the damage represents 1.81 percent of the national budget for fiscal year (FY) 2024-25

26m ago