অস্ট্রেলিয়ার সংবিধান পরিবর্তনে গণভোটের সুপারিশ

অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসী। ছবি: সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজ একটি ঐতিহাসিক গণভোটের কথা ঘোষণা করেছেন।

আজ শনিবার তিনি এই ঘোষণা দিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টে দেশটির আদিবাসীদের একটি প্রতিনিধিত্বকারী 'কণ্ঠস্বর' রাখার জন্য এই গণভোট।

১৯০১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়া অস্ট্রেলিয়ার সংবিধান আদিবাসীদের তাদের ভূমির মালিক ও রক্ষক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। গণভোট অস্ট্রেলীয় সংবিধানের মাধ্যমে ৬০ হাজার বছর ধরে এই মহাদেশে বাস করা আদিবাসীদের কণ্ঠস্বর ও ভূমির মালিকের নিশ্চয়তা বিধান করবে।

অস্ট্রেলিয়া আদিবাসীদের 'ভয়েস টু পার্লামেন্ট' প্রতিষ্ঠার জন্য প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজ সংবিধান পরিবর্তনের সুপারিশ করেছেন।

অ্যান্টনি আলবানিজ বলেছেন, 'আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির অগ্রগতির জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি উদাসীনতা। আমি আশাবাদী যে আমার হৃদয় থেকে আসা এই প্রস্তাবটি অস্ট্রেলিয়ানরা সমর্থন করবেন এবং তাদের হৃদয়ে জায়গা পাবে।'

আলবানিজ জানিয়েছেন, তার সরকার পার্লামেন্টের এই মেয়াদে একটি গণভোট করার প্রস্তাবটির সমর্থন চাইবে।

অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টের সামনে আদীবাসীরা। ছবি: সংগৃহীত

অ্যান্টনি আলবানিজ আজ অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পূর্ব আর্নহেম ল্যান্ডের গার্মা উৎসবে যোগ দেওয়া আদিবাসী নেতা, প্রচারক ও সমর্থকদের এসব কথা বলেন, যা শোনার জন্য আদিবাসীরা  কয়েক দশক ধরে অপেক্ষা করছেন।

এই সংস্কার অস্ট্রেলিয়ার আইনি ও রাজনৈতিক ব্যবস্থা এবং 'ফার্স্ট নেশানস পিপলদের' সাংবিধানিক স্বীকৃতির জন্য কাজ করা অস্ট্রেলিয়ান জনগণের কয়েক দশক ব্যাপী কার্যক্রমের সংমিশ্রণ।

আদিবাসী শিক্ষাবিদ মার্সিয়া ল্যাংটন বলেছেন, 'এটি একটি ভালো খবর। তবে এখানে আসতে অনেক কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে। আমাদের দেশ থেকে আমাদের শব্দগুলো মুছে ফেলা হয়েছিল।'

তিনি আরও বলেন, 'আমরা একজন প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে কথাগুলো শুনছি। আমি বলতে চাই, এই শব্দগুলো আমাদের মনোবল বাড়িয়ে দিচ্ছে।'

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আদিবাসীদের কণ্ঠস্বর প্রতিষ্ঠা করা একটি জাতীয় অর্জন হবে। এটি হবে রাজনীতির ঊর্ধ্বে। আদিবাসী স্বীকৃতির বিরোধীরা ইচ্ছাকৃতভাবে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করছে। আমি চাই, আমরা অস্ট্রেলিয়ার জনগণকে সম্ভাব্য গণভোটের প্রশ্নটি উপস্থাপন করি।'

'আমার সঙ্গে এমন করা হলে আমার কেমন লাগবে?' প্রশ্ন করেন প্রধানমন্ত্রী।

গণভোটের ব্যর্থতার ঝুঁকিগুলো স্বীকার করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,  'আমরা সেগুলো নিয়ে চিন্তা না করে বরং মনে করি, গণভোটটি অস্ট্রেলিয়ার জন্য একটি দুর্দান্ত সুযোগ।'

আদিবাসীদের অধিকার বাস্তবায়নের জন্য তার সরকারের অঙ্গীকারের প্রথম উদ্যোগের রূপরেখা দেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী গণভোটের সাফল্যের ব্যাপারে আশাবাদী।

সরকার সফলভাবে একটি গণভোটে পাস করার জন্য চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। ১৯০৬ সাল থেকে অস্ট্রেলিয়ায় ৪৪টি গণভোট হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৮টি সফল হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী গণভোটের সফলতার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, 'আমি খুব আশাবাদী। এই আশাবাদ এসেছে অস্ট্রেলিয়ান সংস্কৃতি সম্পর্কে আমার আশাবাদী ধারণা থেকে।'

আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক

Comments

The Daily Star  | English

Mindless mayhem

The clashes between students of three colleges continued yesterday, leaving over 100 injured in the capital’s Jatrabari.

5h ago