কোচিংয়ের ৪ শিক্ষকই নিহত হলেন ট্রেনের ধাক্কায়

দুর্ঘটনা
কোচিংয়ের চার শিক্ষক (বাম থেকে) রাকিব, সজিব, রেদুয়ান ও জিসান। ছবি: জিসানের ফেসবুক থেকে নেওয়া

মাত্র দেড় মাস আগে ৪ বন্ধু মিলে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন কোচিং সেন্টারটি। বন্ধুদের নামের অদ্যাক্ষর দিয়ে গত ১৫ জুন চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে আমানবাজার জোগিরহাট এলাকায় চালু করেন আর অ্যান্ড জে কোচিং সেন্টার। এই চার শিক্ষক হলেন-রাকিব খান, তৌহিদুল আলম জিসান, জিয়াউল হক সজিব এবং রেদুয়ান চৌধুরী।

আজ শুক্রবার সকালে খৈয়াছড়া ঝর্ণায় পিকনিকে যাওয়ার ঠিক আগে কোচিংয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কোচিংয়ের সামনে একটি ছবিও তুলেছিলেন তারা।

ছবিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেছিলেন রাকিব খান। কে জানত নিজেদের কোচিং সেন্টারের সামনেই এটিই তাদের শেষ ছবি।

ছবি পোস্ট করার মাত্র সাড়ে ৪ ঘণ্টা পর মীরসরাইয়ের বড়তাকিয়া এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় রাকিব ও তার অপর তিন বন্ধু নিহত হন।

একই দুর্ঘটনায় কোচিং সেন্টারের ৬ শিক্ষার্থী ও মাইক্রোবাস চালকও নিহত হন।

গাড়ির হেলপারসহ আহত ৬ শিক্ষার্থী চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

আহত শিক্ষার্থীরা হলেন-মোহাম্মদ হাসান, মোসহাব আহমেদ হিশাম, মোস্তফা মাসুদ রাকিব, মো. সাগর, ইকবাল হোসেন ও আয়াতুল ইসলাম।

কোচিংয়ের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের নিয়ে এ পিকনিকের আয়োজন করেছিলেন ৪ শিক্ষক বন্ধু।

নিহত ৪ শিক্ষককে দীর্ঘদিন ধরে চেনেন একই এলাকার আরেক কোচিং সেন্টারের উদ্যোক্তা ফারুক চৌধুরী। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তিনিও ছুটে যান হাসপাতালে।

ফারুক চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ওরা ৪ জনই আমার কোচিং সেন্টারের ছাত্র ছিল। রাকিব ছাড়া বাকি ৩ জন দীর্ঘদিন আমার কোচিং সেন্টারে পার্ট টাইম ক্লাসও নিয়েছে।'

'গত জুন নিজেদের কোচিং সেন্টার চালুর বিষয়ে তারা আমাকে জানান। আমি তাদের উৎসাহ দিয়েছিলাম,' বলেন তিনি।

পরে গত ১৫ জুন কোচিং সেন্টারটি উদ্বোধন করা হয়। ফারুক চৌধুরীও ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বলে জানান।

তিনি বলেন, 'গতকাল জিসানের সঙ্গে আমার আধা ঘণ্টা ফোনে কথা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার তিনি ফোর-এইচ গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠানে রিপোর্টিং প্রোডাকশন অফিসার পদে যোগদান করেছিলেন।'

দুর্ঘটনার খবর জানার পরপরই হাসপাতালে ছুটে যান সজিবের বাবা মোহাম্মদ হামিদ। আহতদের গাড়ি আসা মাত্র ছুটে গিয়ে দেখেন তার ছেলে সজিব আছে কি না?

তখনও হাসপাতালে নিহত কারো মরদেহ নেওয়া হয়নি।

হাসপাতালের ইমার্জেন্সি গেটেই বিলাপ করছিলেন তিনি। বলছিলেন, 'একটি এনজিও থেকে কিস্তিতে ২ লাখ টাকা নিয়ে কোচিং সেন্টারটি চালু করেছিল সজিব।'

মুদি দোকানদার হামিদ জানান, সজিব চট্টগ্রাম ওমর গনি এমএস কলেজ থেকে গণিতে স্নাতক পাশ করেন। পড়াশোনা শেষ করে পুরোদমে কোচিং ব্যবসায় মনোযোগ দিতে চেয়েছিল সে।

নিহত রাকিবের চাচা মোজাম্মেল ডেইলি জানান, রাকিব এইচএসসি পাশ করে ঢাকায় কলেজে ভর্তি হয়েছিল। এ সময়ে সে বন্ধুদের সঙ্গে কোচিং সেন্টারটি শুরু করে।

Comments

The Daily Star  | English
narcotics cases pending despite deadline

4.8 lakh narcotics cases pending despite deadline

Judge shortage, lack of witnesses, inadequate court infrastructure blamed for delays

7h ago