মীরসরাই দুর্ঘটনা: কানাডায় মায়ের কাছে যাওয়া হলো না হিশামের

হিশাম
মুসহাব আহমেদ হিশাম। ছবি: সংগৃহীত

এসএসসি পরীক্ষার্থী মুসহাব আহমেদ হিশামের কানাডায় যাওয়ার কথা ছিল পরীক্ষার পর। সেখানে তার মা থাকেন বোনের সঙ্গে। তার কানাডা যাওয়ার সব প্রক্রিয়া প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছিল। পরীক্ষা যত ঘনিয়ে আসছিল বন্ধুদের কাছ থেকে তার বিদায় নেওয়ার সময়ও হয়ে আসছিল।

ভাগ্যের নির্মম পরিহাস। মায়ের কাছে আর যাওয়া হবে না হিশামের। আজ শুক্রবার চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে মাইক্রোবাসে ট্রেনের ধাক্কায় তিনি নিহত হয়েছেন।

হিশাম ছিলেন হাটহাজারী উপজেলার কে এস নজু মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। চার ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট।

হাটহাজারীতে চাচার বাসায় থেকে পড়াশোনা করতেন হিশাম। আমানবাজারের জুগিরহাটে আর অ্যান্ড জে কোচিং সেন্টারে পড়তেন তিনি। কোচিংয়ের আরও সহপাঠীদের সঙ্গে গিয়েছিলেন পিকনিকে খৈয়াছড়া ঝর্ণায়। সেখান থেকে ফেরার পরে ওই দুর্ঘটনা ঘটে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (চমেক) জরুরি বিভাগের সামনে বিলাপ করছিলেন চাচা আকবর হোসেন মানিক।

তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'হিশামের যখন দুই বছর বয়স তখন তার বাবা মারা যান। আমি তাকে আমার ছেলের মতো বড় করেছি এবং তার সব চাহিদা পূরণ করেছি।'

'এসএসসি পরীক্ষা শেষে তার কানাডা যাওয়ার কথা ছিল। আজকের ট্রেন দুর্ঘটনায় সব স্বপ্ন ধ্বংস হয়ে গেছে। ওর মাকে কী উত্তর দেবো জানি না,' কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলছিলেন তিনি।

দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই ১১ জন নিহত হন। ছবি: সংগৃহীত

পরিবারের সদস্যরা জানান, হিশামের ভাই অস্ট্রেলিয়ায় থাকেন, আরেক বোন ঢাকায় শিক্ষকতা করেন। ৫৫ বছর বয়সী চাচা আকবর অবিবাহিত হলেও, হিশামকে তিনি সন্তানের মতো মানুষ করেছেন।

চাচা আকবর বলেন, 'হিশাম আজ সকাল ৮টার দিকে বাসা থেকে বের হয়। বলছিল যে শিক্ষক ও বন্ধুদের সঙ্গে ঝর্ণায় ঘুরতে যাচ্ছে। খুব উচ্ছ্বসিত ছিল সে। বাড়ি থেকে বের হওয়ার আগে মায়ের সঙ্গে ভিডিও কলে কথাও বলেছিল।'

হিশামের খালাতো ভাই সাইফ বিন শওকত ডেইলি স্টারকে বলেন, 'হিশাম খুব ভালো ছাত্র ছিল। জানি না কীভাবে খালাকে সান্ত্বনা দেবো। তিনি এখনো দুর্ঘটনার খবর জানেন না।'

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

13h ago