পিকনিকে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন কোচিং সেন্টারের ১১ শিক্ষার্থী-শিক্ষক
তারা ছিলেন হাটহাজারী উপজেলার জোগীরহাট এলাকার আর অ্যান্ড জে প্লাস কোচিং সেন্টারের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক। আজ শুক্রবার সকালে তারা ১৬ জন একটি মাইক্রোবাসে মিরসরাইয়ের খৈয়াছড়া ঝরনা এলাকায় পিকনিকে গিয়েছিলেন।
যাওয়ার আগ মুহূর্তে কোচিং সেন্টারের সামনে ছবিও তুলেছিলেন। ছবিটি এখন স্মৃতি হয়ে গেছে।
দুপুর পৌনে ২টার দিকে চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে ক্রসিং পার হওয়ার সময় তাদের মাইক্রোবাসে ট্রেনের ধাক্কায় ১১ জন নিহত হয়েছেন।
এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার আগে শিক্ষার্থীদের বিনোদনের জন্য এই পিকনিকের আয়োজন করেছিল কোচিং সেন্টার কর্তৃপক্ষ। পিকনিকে যাওয়ার জন্য সবাই ৫০০ টাকা করে চাঁদা দিয়েছিলেন।
শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং চালক ও হেল্পারসহ মাইক্রোবাসে মোট ১৮ জন আরোহী ছিলেন।
তাদের মধ্যে জিসান, সজিব, রাকিব ও রিদওয়ান কোচিংয়ের শিক্ষক। ৫ জন জোগিরহাট জিয়াউর রহমান কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী, ৬ জন নজুমিয়া হাইস্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থী। বাকি ২ চালক ও হেলপার।
নিহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে একজনের পরিচয় জানা গেছে। তিনি হলেন নজুমিয়া হাইস্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থী মুসাহাব আহমেদ হিশাম।
বাকিদের পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি।
দুপুরে দুর্ঘটনার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে হতাহতদের দেখতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভীড় করেন স্বজন, কোচিং সেন্টারের শিক্ষার্থী ও বন্ধুরা।
শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত ৬ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। এদের সকলের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানান চিকিৎসকরা।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেঝেতে কান্নাকাটি করছিলেন দুর্ঘটনায় নিহত হিশামের চাচা মো. মানিক। ভাতিজাকে হারিয়ে আহাজারি করছিলেন তিনি। বলছিলেন, 'অনেক নিষেধ করেছিলাম পিকনিকে না যেতে, কথা শুনলো না। কাউকে না জানিয়ে পিকনিকে গেল।'
পিকনিকে যাওয়ার কথা ছিল নজু মিয়া হাইস্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থী সাজিদের।
দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার খবর পেয়ে চমেক হাসপাতালে জরুরি বিভাগে বন্ধুদের মরদেহ দেখতে এসেছেন তিনি।
এ সময় তিনি দ্য ডেইলি স্টার বলেন, 'পিকনিকে আমারও যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরিবার থেকে অনুমতি না পাওয়ায় যাওয়া হয়নি। ভাগ্যের জোরে বেঁচে গেলাম মনে হয়।'
'দুঃখ লাগছে বন্ধুদের জন্য। কখনো ভাবিনি এভাবে হারাতে হবে বন্ধুদের,' বলেন তিনি।
Comments