২০৩০ সালের মধ্যে ২ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি লক্ষ্য প্রাণ-আরএফএলের

মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান খান চৌধুরী। ছবি: স্টার

প্রাণ-আরএফএল ২০২৫ সাল নাগাদ ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ও ২০৩০ সাল নাগাদ ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমূল্যের পণ্য রপ্তানি করতে চায়। এ লক্ষ্যে দেশের বাজারে ভোক্তাদের জন্য যেসব পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করা হয়, তার সবটাই রপ্তানি করতে চায় গ্রুপটি।

আজ রোববার সকালে রাজধানীর এক হোটেলে 'মিট দ্য প্রেস'অনুষ্ঠানে এ লক্ষ্যের কথা জানান প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান খান চৌধুরী।

গ্রুপটির পণ্য রপ্তানির ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

২০২১-২২ অর্থবছরে ৫৩২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ।

গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান খান চৌধুরী বলেন, 'আমাদের গ্রুপের পণ্য এখন বিভিন্ন দেশের নামিদামি ব্র্যান্ডের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে বিখ্যাত সব চেইনশপে স্থান করে নিচ্ছে, যা দেশের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়। ওয়ালমার্ট, ক্যারিফোর, লবলোজ, আলদি, লিডল, মাইডিন, ডলারামা ও টেসকোর মতো চেইনশপে পাওয়া যায় প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পণ্য।'

তিনি জানান, বাংলাদেশের শীর্ষ ও সম্ভাবনাময় ১০টি রপ্তানি খাতের মধ্যে ৭টি খাতে প্রাণ-আরএফএল পণ্য রপ্তানি করে। বর্তমানে প্রাণ-আরএফএল কৃষিপণ্য, প্লাস্টিক পণ্য, তৈরি পোশাক, ফুটওয়্যার, হালকা প্রকৌশল, কেমিক্যালে ও ফার্নিচারসহ নানা খাতে তাদের উৎপাদিত পণ্য বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে রপ্তানি করছে।

রপ্তানির ক্ষেত্র বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান বলেন, 'এখনই সময় দেশের রপ্তানি খাতে বৈচিত্র্য আনার। বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যে বৈচিত্র্য আনতে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।'

তিনি আরও বলেন, 'যখন কোনো পণ্য রপ্তানি করি, তখন নিজেদের সামর্থ্য ভালো করে বোঝা যায়। বিশ্বের প্রতিটি দেশেই প্রাণ-আরএফএল পণ্য রপ্তানির পরিকল্পনা রয়েছে। যদি বাংলাদেশে বসে সম্ভব, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি করব। দেশে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। যদি কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকে, সেক্ষেত্রে আগামী দিনে সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে বিশ্বের কমপক্ষে ৪-৫ জায়গায় পণ্য উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে।'

করোনা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ বৈশ্বিক নানা সংকটের মধ্যেও দেশের রপ্তানি খাত ভালো করেছে উল্লেখ করে আহসান খান চৌধুরী বলেন, 'আমাদের আরও ভালো করার সুযোগ ছিল। কিন্তু পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট রুটে লাইনার পরিষবার সুযোগ না থাকা, ফ্রেইটের খরচ অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি, পর্যাপ্ত কনটেইনার না থাকাসহ নানাবিধ কারণে আমরা সে সুযোগ পরিপূর্ণভাবে কাজে লাগাতে পারিনি। এসব সমস্যা সমাধানে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এসব সমস্যা সমাধান করতে পারলে পণ্য রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে।'

'রপ্তানি বাড়াতে দেশের ব্র্যান্ডিং এবং পণ্য ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য তহবিল গঠন, বিভিন্ন দেশের ট্রেড শোতে অংশগ্রহণের জন্য তহবিল সহায়তা, আন্তর্জাতিক মানের টেস্টিং ল্যাব, রপ্তানি বীমা, গুড এগ্রিকালচারাল প্র্যাকটিস প্রবর্তন কার্যকর ভূমিকা রাখবে', যোগ করেন আহসান খান চৌধুরী।

১৯৯৭ সালে ফ্রান্সে পণ্য পাঠানোর মাধ্যমে রপ্তানি কার্যক্রম শুরু করে প্রাণ-আরএফএল। বর্তমানে ভারত, নেপাল, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ড, ইতালি, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, আরব-আমিরাত, সৌদি আরব, কাতার, কুয়েত, ওমান, মালয়েশিয়া, বলিভিয়া, ভেনেজুয়েলা, দক্ষিণ আফ্রিকা, কেনিয়া, ইথিওপিয়াসহ বিশ্বের ১৪৫টি দেশে পণ্য রপ্তানি করছে গ্রুপটি।

তাদের রপ্তানি করা পণ্যের মধ্যে আছে জুস ও ফ্রুট ড্রিংক, বেভারেজ, স্ন্যাকস, ড্রিংকস, বিস্কিট ও বেকারি, সস, কেচাপ, নুডলস্, জেলি, মশলা, কনফেকশনারি, ফ্রোজেন ফুডস, তৈরি পোশাক, গৃহস্থালি প্লাস্টিক, শপিংব্যাগ, হ্যাঙ্গার, ফার্নিচার, বাইসাইকেল ও জুতা।

Comments

The Daily Star  | English

Battery-run rickshaw drivers block traffic in different parts of Dhaka

They took to the streets in the Agargaon, Mohammadpur, Jatrabari, and Jatiya Press Club areas

58m ago