মূকাভিনয় নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় যাচ্ছেন লোকমান ও মৌ

সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয় এবং সমাজের বিভিন্ন অন্যায়-অনাচার মূকাভিনয়ের মাধ্যমে তুলে ধরা ২ শিল্পী মীর লোকমান ও মৌসুমী মৌ আগামী ২৯-৩১ জুলাই দক্ষিণ কোরিয়ার গুচাংয়ে অনুষ্ঠেয় ৩১তম এশিয়া একক পরিবেশনা উৎসবে অংশ নিতে যাচ্ছেন।

বাংলাদেশসহ ভারত, তুরস্ক, জাপান, কোরিয়া ও থাইল্যান্ডের শিল্পীরা অংশ নিচ্ছেন এই উৎসবে।

'রঙ, রক্ত এবং একটি চিৎকার', 'জীবন: যেখানে যেমন' ও 'অস্বীকৃতি'- এই ৩টি স্কেচ নিয়ে লোকমান ও মৌ তাদের আধঘণ্টার প্রযোজনার ২টি মঞ্চায়ন করবেন উৎসবের ভিন্ন ২ মঞ্চে।

এই শিল্পটি সম্পর্কে প্রখ্যাত মূকাভিনয়শিল্পী পার্থপ্রতিম মজুমদার বলেছিলেন, 'কথা না বলেও আমরা অনেক কথা বলি, ভাষা ব্যবহার না করেও আমরা এমন অঙ্গভঙ্গি করি, যা ভাষা উচ্চারণের চেয়েও অনেক প্রকট ও শক্তিশালী। যাকে নাম দেওয়া হয়েছে বডি ল্যাংগুয়েজ বা দৈহিক ভাষা। এগুলোর সম্মিলিত শিল্পই মূকাভিনয়।'

মীর লোকমানের হাত ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি 'না বলা কথাগুলো না বলেই হোক বলা' স্লোগান নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় ঢাকা ইউনিভার্সিটি মাইম অ্যাকশন (ডুমা)। ২০১৯ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন মূকাভিনয় শিক্ষার অ্যাকাডেমিক প্ল্যাটফর্ম ইনস্টিটিউট অব মাইম এন্ড মুভমেন্ট (আইএমএম)। তিনি ছাড়াও মৌসুমী মৌ ও মাহবুব আলম এই প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

লোকমানের নেতৃত্বে দেশের বিভিন্ন স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি জেলায় মাইমের বহু কর্মশালা ও প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর আগেও ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া ও আর্মেনিয়ায় মূকাভিনয় প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন তিনি। ধর্ষণ, হত্যা, আত্মহত্যা, নারীর প্রতি সহিংসতা, বৌদ্ধমঠে হামলা, ফিলিস্তিন ও মিয়ানমারে ঘটে যাওয়া অমানবিক হত্যাযজ্ঞ—এমন নানা সমসাময়িক ঘটনা নিয়ে কাজ করেছেন লোকমান ও তার দল।

মীর লোকমানের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দক্ষিণ কোরিয়ার আয়োজকরা উৎসবের জন্য বাংলাদেশের প্রযোজনা 'রঙ, রক্ত এবং একটি চিৎকার' নির্বাচন করেছেন এর বিষয়ভিত্তিক সামঞ্জস্যতা ও সৃষ্টিশীল উপস্থাপনের জন্য। তাদের ৩টি স্কেচের প্রথমটিতে বহু ত্যাগ-তিতিক্ষা ও রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জিত লাল-সবুজের পতাকার নির্মাণ দেখানো হয়েছে। দ্বিতীয় গল্পে ফুটে উঠেছে একজন পথ শিশুর স্বপ্ন ও জীবন বাস্তবতার গল্প। পাশাপাশি এই বৈষম্যের পৃথিবীতে অন্নের জন্য নিরন্তর লড়াই এ গল্পের করুণ দিক। তৃতীয় ও শেষ স্কেচে হত্যা, ধর্ষণ ও নারীর প্রতি বর্বরতার কালো অধ্যায় মূর্ত হয়েছে।হয় নিঃশব্দে।

লোকমানের একক এ পরিবেশনার তৃতীয় গল্পটির নির্দেশক শাহরিয়ার শাওন। প্রযোজনার প্রপস, আলোক প্রক্ষেপণ ও আবহ সংগীতের কাজ করবেন মৌসুমী মৌ।

লোকমান এবং মৌসুমীর ভাষ্য, এ প্রযোজনার ৩টি স্কেচই তারা বহুবার বহু মঞ্চে প্রদর্শন করেছেন। তবে এবার এটি ভেঙেচুরে নতুনভাবে সাজানো হয়েছে।

লোকমান বলেন, 'যে আন্তর্জাতিক উৎসবে যোগ দিতে যাচ্ছি সেটা অনেক বড় একটি আয়োজন। বাংলাদেশের একজন শিল্পী হিসেবে সেখানে অংশ নিতে পারার বিষয়টি সত্যিই গর্বের।'

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

14h ago