আমি মিন করে ‘তলোয়ারের বিপক্ষে রাইফেল’ নিতে বলিনি, ক্ষমা করবেন: সিইসি

তলোয়ার নিয়ে এলে প্রতিপক্ষকে রাইফেল নিয়ে দাঁড়ানোর পরামর্শ দেওয়ার জন্য ক্ষমা চাইলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।
সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। ফাইল ছবি

তলোয়ার নিয়ে এলে প্রতিপক্ষকে রাইফেল নিয়ে দাঁড়ানোর পরামর্শ দেওয়ার জন্য ক্ষমা চাইলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।

ওই বক্তব্যের জন্য তিনি অনুতপ্ত বলেও জানান। তবে তিনি দাবি করেন, ওই বক্তব্য তিনি মিন করে দেননি। কৌতুক করে বলেছেন।

'মিন করে বললে অস্ত্র সংগ্রহ করতে বলতাম' বলেও জানান তিনি।

সিইসি কিছুটা হতাশা প্রকাশ করে জানান, তার বাবা-মা পেপার পড়তেন। তারা বেঁচে থাকলে হয়তো পেপার পড়ে বলতেন, 'বাবু এত খারাপ পরামর্শ দিলে কেন?'

আজ মঙ্গলবার ইসলামী ঐক্যজোটের সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে সমাপনী বক্তব্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এসব কথা বলেন।

ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারমান মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনীর নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সংলাপে অংশ নেন। সংলাপে বক্তব্য রাখার সময় ইসলামী ঐক্যজোটের এক নেতা 'তলোয়ার নিয়ে এলে আপনারা রাইফেল নিয়ে দাঁড়াবেন' সিইসিকে এ ধরনের বিতর্কিত বক্তব্য না দেওয়ার পরামর্শ দেন। পরে সমাপনী বক্তব্যে সিইসি তার জবাব দেন।

জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) সঙ্গে সংলাপে এ ধরনের একটি বক্তব্য আসার বিষয়টি উল্লেখ করে সিইসি বলেন, 'আমার এক ভাই বলেছেন, একটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে। পরশু আমি বলেছিলাম যে, কেউ তলোয়ার নিয়ে এলে আপনারা রাইফেল নিয়ে দাঁড়াবেন। এটা আপনাদের বুঝতে হবে একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এই কথাটি কখনো মিন করে বলতে পারেন না। আমি হয়তো অল্প শিক্ষিত। অল্প শিক্ষিত হলেও তারা এ ধরনের কথা বলতে পারেন না। ববি হাজ্জাজের কথার পিঠে আমি হেসে বলেছি, তলোয়ার দেখালে আপনি একটি বন্দুক নিয়ে দাঁড়াবেন। এটা হচ্ছে কথার পিঠে কথা। এটা কখনো একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার মিন করতে পারেন না। আর যদি এটা আমি মিন করতে পারতাম- প্রথম দিন থেকেই সবাইকে বলতাম আপনারা অস্ত্র সংগ্রহ করবেন। আপনারা অস্ত্র সংগ্রহ করে নিজেদের শক্তিশালী করুন। আর এই কথাটি প্রথমদিন থেকে বলেছি বলে মনে পড়ে না।'

তিনি বলেন, 'ইংরেজিতে একটি শব্দ আছে হিউমার বা কৌতুক করে বলা। এটাকে জাতীয় পর্যায়ে একেবাবে অকাট্য সত্য, যেন একটা ঐশী বাণী হিসেবে প্রচার করে, অনেক ধরনের ব্যানার দিয়ে। যেটাতে আমরা...। আমরা মিডিয়াকে খুব সম্মান করি। আমাদের স্বচ্ছতা রক্ষার জন্য বিগত যে নির্বাচনগুলো হয়েছে, মিডিয়াকে অবাধ সুযোগ দিয়েছি ভেতরে গিয়ে সবকিছু পর্যবেক্ষণ করতে। কারণ আমরা স্বচ্ছতায়... কারণ স্বচ্ছতা একটি শক্তি।'

নির্বাচন কমিশন গণমাধ্যমকে তথ্য সরবরাহে উদারনৈতিক অবস্থানে থাকার আহ্বান জানায় উল্লেখ করে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, 'আমরা যতগুলো সম্মেলন বা আলোচনা করেছি কোনো রাগ-ঢাক করিনি। বড় স্ক্রিনে আমার কথা ও ছবি প্রচার করা হয়। কিন্তু কেন মিডিয়া এটা করলো? এটা কী বুঝে, না- না বুঝে। তাদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা ‍খুবই আছে। কিন্তু এটা করে আমার মর্যাদাকে একেবারেই ক্ষুণ্ণ করে দেওয়া হয়েছে এবং আপনারাও এটা বিশ্বাস করছেন।'

'আমার বাবা বেঁচে থাকলে উনিও বিশ্বাস করতেন যে, আমার ছেলে এমন বাজে পরামর্শ দিল কেন? আমার মা বেঁচে থাকলেও বিশ্বাস করতেন। ওরা সবাই পেপার পড়তেন। পেপার পড়ে তারা হয়তো বলতেন, বাবু এত খারাপ পরামর্শ দিলে কেন?', যোগ করেন তিনি।

সিইসি বলেন, 'আমি এজন্য এটাই বলবো, কখনো কখনো আমরা ভুল করে ফেলি। এর জন্য অনুতপ্ত। আমি হিউমার করতে গিয়েছিলাম। এটাই আসল। কিন্তু ওটাকে ওইভাবে প্রচার না করে কিছুটা বস্তুনিষ্ঠভাবে বলা হতো, উনি হিউমার করে বলেছেন। তাহলে আমার হয়তো...। আমি এটা বলেছি এটা আপনারাও (ঐক্যজোট) বিশ্বাস করেছেন। এজন্য বলেছেন, আমি যেন এ ধরনের কথা না বলি। কিন্তু এটা আমি মিন করে বলিনি। যাক আমাকে ক্ষমা করবেন এজন্য। ক্ষমা করবেন।'

তিনি আরও বলেন, 'আমরা সত্যিকার অর্থে নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। আমরা সকলেই সৎ ও কর্মনিষ্ঠ। স্বচ্ছ নির্বাচন অনুষ্ঠানে ‍দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।'

Comments

The Daily Star  | English

An economic corridor that quietly fuels growth

At the turn of the millennium, travelling by road between Sylhet and Dhaka felt akin to a trek across rugged terrain. One would have to awkwardly traverse bumps along narrow and winding paths for upwards of 10 hours to make the trip either way.

12h ago