কবি ও শিক্ষাবিদ তিতাশ চৌধুরীর জন্মদিন আজ

তিতাশ চৌধুরী| ছবি: সংগৃহীত

কবি ও শিক্ষাবিদ তিতাশ চৌধুরীর জন্মদিন আজ। তিনি ১৯৪৫ সালের ১৮ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সিন্দুরউরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। একাধারে কবি, লেখক, সম্পাদক, গবেষক ও অনুবাদক হিসেবে আধুনিক বাংলা সাহিত্যে উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে তার।

তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হিসাববিজ্ঞানে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করে শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত হন। বিভিন্ন সরকারি কলেজে অধ্যাপনার পর সর্বশেষে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন তিনি। ১৯৭২ সাল থেকে সম্পাদনা করেন সাহিত্য পত্রিকা অলক্ত। এই নামে পুরষ্কারও চালু করেন তিনি। 

শিক্ষকতা ও সম্পাদনার পাশাপাশি বিভিন্ন দৈনিক ও সাময়িক পত্রপত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখি করেন। তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা প্রায় ৫০ এর অধিক। কবিতার মধ্যে রয়েছে দুঃস্বপ্নের রাজকুমারী, তুমি সুখেই আছো নন্দিনী, তোমাদের জন্য ভালোবাসা। গবেষণা ও সাহিত্যালোচনার মধ্যে রয়েছে নিষিদ্ধ নজরুল ও অন্যান্য প্রসঙ্গ, জসীমউদ্দীন : কবিতা, গদ্য ও স্মৃতি, মোতাহের হোসেন চৌধুরী : জীবন ও সাহিত্য, কুমিল্লায় নজরুল স্মৃতি প্রেম ও পরিণয়, নজরুলের নানাদিক, অন্য বিবেচনায় রবীন্দ্রনাথ, অন্যরকম রবীন্দ্রনাথ, কুমিল্লার সংবাদপত্র ও সাময়িকী, ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের জনক মেজর আব্দুল গণি : জীবন ও কর্ম ভুবন, আমাদের মুক্তিসংগ্রামে নজরুল সঙ্গীতের ভূমিকা, উনিশ শতকের সাময়িকপত্র ঊষায় জীবন ও সমাজ, কুমিল্লা জেলার লোকসাহিত্য, দরবেশ ও দরগার কথা, বৈশাখ ও আমাদের ঐতিহ্য চেতনা, লোকসাহিত্যের নানাদিক ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ইতিহাস' উল্লেখযোগ্য। স্মৃতিকথা বিষয়ক বই দেখা অদেখার স্মৃতি।

শিশুসাহিত্যের মধ্যে রয়েছে ষাটগম্বুজের আযান ধ্বনি,  রসহস্যময় বাড়ি, শেকড়ের সন্ধানে, বিন্নি ধানের খই, তা ধিন ধিন। অনুবাদ বই হচ্ছে ত্রিবেণী ও অন্যস্বর। সম্পাদনা করেছেন আবদুর রশীদের শ্রেষ্ঠ গল্প,  কুমিল্লা জেলার ইতিহাস (যৌথ), রবীন্দ্রনাথের পুনশ্চ, দ্যা ব্লুম (যৌথ), একজন কে জি মোস্তফা, লেখকের পত্রাবলি।

সম্মাননা ও পুরস্কার হিসেবে পান পশ্চিমবঙ্গ থেকে 'অলক্ত' পত্রিকা সম্পাদনার জন্য শ্রেষ্ঠ সম্পাদক হিসেবে পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ (১৯৭৮), কুমিল্লা জেলার ইতিহাস রচনা ও সম্পাদনার জন্য স্বর্ণপদক (১৯৮৪) এবং বাংলা সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য কুমিল্লা ফাউন্ডেশন স্বর্ণপদক ১৯৯৬ লাভ করেন।

তিতাশ চৌধুরী কবিতায় উপমা-রূপক-চিত্রকল্পের ব্যবহারে একধরনের স্বাতন্ত্র্য রয়েছে। ভিন্নতার সৃষ্টির মাধ্যমে আধুনিক বাংলা কাব্যে রং ও কল্পনার বিন্যাসে অভিনবত্ব সৃষ্টির প্রয়াস পেয়েছেন। কবিতার বইতে দেখা যায় কবিতায় ব্যক্তিগত অনুভূতির অন্তরঙ্গ প্রকাশ ঘটিয়েছেন। এক কথায় প্রেম ও প্রকৃতিকে আশ্রয় করে তিতাশ চৌধুরী অনুভূতির প্রকাশ ঘটিয়েছেন। 

২০১৪ সালে ১ ডিসেম্বর ঢাকায় নিজ বাসায় ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুর পূর্বে কয়েক বছর নানা রোগে আক্রান্ত থাকলেও পরিণত বয়সে জীবনের শেষাবধি তিনি সাহিত্য চর্চায় পরিপূর্ণরূপে নিজেকে আত্মনিয়োগ করেছিলেন। এখনো তার বহু সংখ্যক গ্রন্থ অপ্রকাশিত রয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka sends diplomatic note to Delhi to send back Hasina: foreign adviser

The Ministry of Foreign Affairs has sent a diplomatic note to the Indian government to send back ousted former prime minister Sheikh Hasina to Dhaka.

4h ago