কয়লার ঘাটতির প্রভাব পড়তে পারে বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রে

বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্র। ছবি: স্টার

দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার বড়পুকুরিয়া ৫২৫ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন জুলাইয়ের পর যে কোনো সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

উন্নয়ন কাজের জন্য খনির উৎপাদন বন্ধ থাকায় গত ৩ মাস ধরে মজুদ কয়লা দিয়ে চলছে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি।

খনি কর্মকর্তারা বলছেন, আগামী আগস্টের মাঝামাঝি থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লা সরবরাহ শুরু হবে। অন্যদিকে বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্মকর্তারা দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, মজুদ কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু রাখা যাবে আর ২০ দিন।

খনি কর্মকর্তারা ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, ভূগর্ভস্থ ফেজ ডেভেলপমেন্টের জন্য চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল থেকে কয়লা খনির উৎপাদন স্থগিত রয়েছে। এই খনি থেকেই বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লা সরবরাহ করা হয়।

বড়পুকুরিয়া কেন্দ্রে ১২৫ মেগাওয়াটের ২টি ও ২৭৫ মেগাওয়াটের একটি ইউনিট আছে। কর্মকর্তাদের মতে, ৩টি কেন্দ্র এক সঙ্গে চালাতে প্রতিদিন দরকার সাড়ে ৫ হাজার টন কয়লা।

বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড (বিসিএমসিএল) এ যথেষ্ট পরিমাণ কয়লা সরবরাহ করতে না পারায় বছরের বেশিরভাগ সময় সবগুলো প্লান্ট এক সঙ্গে চালানো যায় না। বর্তমানে, তৃতীয় ইউনিটটি চালু এবং অন্য ২টি ইউনিট বন্ধ আছে বলে জানান কর্মকর্তারা।

তারা আরও জানান, গ্যাস সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ায় ২৭৫ মেগাওয়াটের এই ইউনিট থেকে সর্বোচ্চ ক্ষমতারও বেশি তথা ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। এতে দৈনিক প্রায় ৩ হাজার ২০০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ টন কয়লা প্রয়োজন। তাদের দাবি, পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলে ৩টি ইউনিটই চালু রাখা সম্ভব।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যুৎকেন্দ্রের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা ডেইলি স্টারকে বলেছেন, 'এখন প্রায় ৬০ হাজার টন কয়লা মজুদ আছে। বর্তমান গতিতে কয়লা ব্যবহৃত হলে তৃতীয় ইউনিটটি আগামী ২০ দিন সচল রাখা সম্ভব হবে।

কর্মকর্তারা আরও বলেছেন, বর্তমান মজুদ দিয়ে যত বেশি দিন সম্ভব বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। তবে আগস্টের শুরুতে কয়লা সরবরাহ না পেলে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ অথবা ন্যূনতম উৎপাদন ক্ষমতায় প্ল্যান্ট পরিচালনা করতে হবে।

এ দিকে, বিসিএমসিএল কর্তৃপক্ষ ভূগর্ভস্থ কয়লা ফেজ তৈরির জন্য ৩০ এপ্রিল কয়লা উৎপাদন স্থগিত করে। ফেজ পরিবর্তনের জন্য ৪৫ থেকে ৬০ দিন সময় লাগার কথা। কিন্তু, চীনা কোম্পানি তাদের খনি শ্রমিকদের সংখ্যা ১ হাজার ১০০ থেকে ৫২০ এ নামিয়ে আনায় ফেজ পরিবর্তনে প্রায় দ্বিগুণ সময় লাগছে।

বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. কামরুজ্জামান খান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সব বিশেষজ্ঞ, চীনা ও স্থানীয় খনি শ্রমিকরা কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব উৎপাদনে যাওয়ার চেষ্টা করছি।' আগামী আগস্টের মাঝামাঝি উৎপাদন শুরুর কথা জানান তিনি।

Comments

The Daily Star  | English
Reforms vs election

Reforms vs election: A distracting debate

Those who place the election above reforms undervalue the vital need for the latter.

14h ago