বাঁধ ধসের শঙ্কায় ধরলাপাড়ের মানুষ

ধরলা নদীর পাড়ে বসে আছেন সবুর আলী। ছবি: স্টার

বিগত কয়েকদিন ধরে বেশ দুশ্চিন্তায় আছেন লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের বুমকা এলাকার ধরলা নদীপাড়ের বাসিন্দা সবুর আলী (৮৫)। পেশায় কৃষক সবুরের দুশ্চিন্তার কারণ সেখানকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ।

ধরলা নদীর ভাঙনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) এই বাঁধটি যেকোনো সময় ধসে যেতে পারে। একই শঙ্কায় ভুগছেন গ্রামের অন্যান্যরাও। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটি ধসে গেলে নিজেদের বসত-ভিটা হারানো নিয়ে তাদের শঙ্কা।

সবুর আলী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ধরলা নদীর ভাঙনে এখন পর্যন্ত আমি ১২ বিঘা জমি ও কয়েকবার বসতভিটা হারিয়েছি। অবশেষে বাঁধের পশ্চিম প্রান্তে বসতভিটা গড়ে তুলেছি। সামান্য কিছু আবাদি জমি রয়েছে। গেল কয়েক বছর শান্তিতে ছিলাম। বন্যা নিয়ন্ত্রক বাঁধটি ধরলা নদীর ভাঙনে ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এখন আবার শঙ্কায় পড়েছি।'

'বন্যা নিয়ন্ত্রক বাঁধটি স্থায়ীভাবে রক্ষার ব্যবস্থা করা না হলে আমাদেরকে আবারও ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে', যোগ করেন তিনি।

ধরলা নদীর পাড়ে বন্যা বাঁধ ধসের শঙ্কা। ছবি: স্টার

একই গ্রামের কৃষক মোহর আলী (৭৮) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বন্যা নিয়ন্ত্রক বাঁধটি ধসে গেলে আমরা বসতভিটা ও আবাদি জমি হারাব। এমনিতেই ধরলা নদীর ভাঙনে অনেক জমি ও বসতভিটা হারিয়ে আমরা শেষ সম্বলটুকু নিয়ে আছি। এটাও যদিও ভাঙনে তলিয়ে যায়, আমাদের বেঁচে থাকাই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে।'

মোগলহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ধরলা নদীতে পানি বাড়লেই বাঁধটির ধসের ঝুঁকি বেড়ে যায়। বাঁধের প্রায় ২০০ মিটার অংশে সিসি ব্লক ডাম্পিং ও পিচিং করা হলে বাঁধটি স্থায়ীভাবে রক্ষা পাবে। এই বাঁধটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে মোগলহাট ও কুলাঘাট ইউনিয়নসহ লালমনিরহাট শহর এলাকা প্লাবিত হবে।'

'আমি পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে কয়েকবার যোগাযোগ করেছি। তারা বাঁধটি পরিদর্শনও করেছেন। কিন্তু, এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না', বলেন তিনি।

লালমনিরহাট পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। বাঁধটি নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের অনুমতি ও প্রয়োজনীয় বরাদ্দ পাওয়া গেলে বাঁধটি স্থায়ীভাবে রক্ষায় কাজ শুরু করা হবে।'

Comments

The Daily Star  | English
Kudos for consensus in some vital areas

Kudos for consensus in some vital areas

If our political culture is to change, the functioning of our political parties must change dramatically.

2h ago