‘ঝড়-বৃষ্টি ও বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় ৪ কেন্দ্রের ফল পেতে দেরি হয়’

রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহেদুন্নবী চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লায় গতকাল বুধবার সিটি নির্বাচনে ঝড়-বৃষ্টি, বিদ্যুৎ চলে যাওয়া ও দুই পক্ষের গোলযোগের কারণে শেষ ৪ কেন্দ্রের ফল পেতে দেরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহেদুন্নবী চৌধুরী।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।

ঝড়-বৃষ্টি, বিদ্যুৎ চলে যাওয়া ও দুই পক্ষের গোলযোগের কথা উল্লেখ করে রিটার্নিং কর্মকর্তা  বলেন, 'এসব কারণে ৪টি কেন্দ্রের ফল আসতে দেরি হয়েছে। প্রিসাইডিং অফিসারদের ফল তৈরিতে বিলম্ব হয়েছে।'

আধা ঘণ্টার বেশি কেন ভোটের ফলাফল ঘোষণা স্থগিত ছিল? দুপুরে জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'এর পেছনে অন্য কোনো কারণ ছিল না। পরিস্থিতি প্রতিকূলে ছিল বিধায় সময় লেগেছে। দুই পক্ষই অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছিল।'

ঠিক সে সময় কার সঙ্গে টেলিফোনে কথা হচ্ছিল? এমন প্রশ্নের জবাবে শাহেদুন্নবী চৌধুরী বলেন, 'তখনকার পরিস্থিতি সম্পর্কে আমি সিইসি, ডিসি ও এসপির সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলাম। অন্য কারো ফোন আসেনি।'

ফলাফলে কারচুপি হয়েছে বলে স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কুর অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, 'পরাজিত প্রার্থী চাইলে আইনের আশ্রয় নিতে পারেন। কারণ তাদের হাতে তো রেজাল্ট শিট ছিল। তবে নতুন করে ফলাফল দেওয়া সম্ভব নয়।'

'ফল ঘোষণার সময় তারা কেন অভিযোগ জানাননি,' প্রশ্ন করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহেদুন্নবী।

বুধবার কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে দিনভর সুষ্ঠু পরিবেশে ভোটের পর রাতে ফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এর মধ্যেই মেয়র পদে বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হয়। বেসরকারি ফলাফলে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কুর চাইতে ৩৪৩ ভোট বেশি পান নৌকার প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত।

বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে স্থাপিত ফলাফল সংগ্রহ ও পরিবেশন কেন্দ্র থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহেদুন্নবী চৌধুরী বিজয়ীর নাম ঘোষণা করেন।

তবে তার আগে হইচইয়ের মধ্যে কারচুপির অভিযোগ তোলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সাক্কু।

রিটার্নিং কর্মকর্তার ঘোষিত ফল অনুযায়ী, ১০৫ কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত পেয়েছেন ৫০ হাজার ৩১০ ভোট। বিদায়ী মেয়র সাক্কু টেবিল ঘড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ৪৯ হাজার ৯৬৭ ভোট। তৃতীয় স্থানে থাকা নিজাম উদ্দিন কায়সার ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ২৯ হাজার ৯৯ ভোট।

ফল ঘোষণার পরপরই সাক্কু তা প্রত্যাখ্যান করে বলেন, 'নির্বাচনে আমি জয়ী হওয়ার পরই আওয়ামী লীগের লোকজন রিটার্নিং অফিসারকে চাপ দেন। এ কারণে কিছু সময়ের জন্য ফল ঘোষণা বন্ধ রাখা হয়। পরে ফল পাল্টে দিয়ে রিফাতকে জয়ী করা হয়েছে। আমাকে সুপরিকল্পিতভাবে হারানো হয়েছে। তা না হলে নির্বাচন কমিশন হঠাৎ করে ফল বন্ধ রাখল কেন? এ ব্যাপারে আইনের আশ্রয় নেবো।'

বিজয়ী হওয়ার পর আরফানুল হক রিফাত বলেন, 'সুষ্ঠ নির্বাচন ও জনগণের ভোটের মাধ্যমেই তিনি জয়ী হয়েছেন। কারচুপির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন, পরাজিত হয়ে সাক্কু অপপ্রচার চালাচ্ছেন।'

সুজনের জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আলমগীর খান বলেন, 'নির্বাচন সুষ্ঠ হয়েছে। মাঠ পর্যায়ের আমরা দেখেছি যে অভিযোগ গুলো করা হচ্ছিল ভোট কেন্দ্রে যাওয়া যাবে না।পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হবে বাস্তবে তা পরিলক্ষিত হয়নি।'

তবে ফলাফল ঘোষণা করতে গিয়ে মোট ১০৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ১০১টি কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণার পর শেষ ৪টি কেন্দ্রের ফল ঘোষণায় ৪৫ মিনিট দেরি হওয়ায় নির্বাচন কমিশনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

Comments

The Daily Star  | English

'Shoot directly': Hasina’s deadly order

Months-long investigation by The Daily Star indicates state forces increased deployment of lethal weapons after the ousted PM authorised their use

1h ago