গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন

কার কারণে দুর্ভোগে জাপান গার্ডেন সিটির ৯০ পরিবার?

জাপান গার্ডেন সিটি। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার জাপান গার্ডেন সিটিতে গতকাল বুধবার একটি ভবনের গ্যাসের লাইন কেটে দিয়েছে তিতাস কর্তৃপক্ষ। তিতাসের দাবি, বকেয়া পাওনা আদায় করার অংশ হিসেবে তারা এই পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে আজ বৃহস্পতিবার বকেয়া বিল পাওয়ার পরও কবে নাগাদ গ্যাসের লাইনের পুনরায় সংযোগ দেওয়া হবে, সুনির্দিষ্টভাবে বলছে না কেউ।

এদিকে, বিনা নোটিশে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ভবনের প্রায় ৯০টি পরিবার। দুদিন ধরে জ্বলছে না চুলা।

জাপান গার্ডেন সিটির ওই ১১ নম্বর ভবনের বাসিন্দারা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তারা নিয়মিত গ্যাস বিল পরিশোধ করে আসছেন। যদি কারো বকেয়া থেকেও থাকে, সেক্ষেত্রে যাদের বকেয়া আছে, তিতাস তাদের লাইন কাটতে পারে। যারা নিয়মিত বিল দিচ্ছে, তাদের লাইনও কেন কেটে দেওয়া হলো?

তাছাড়া গ্যাসের লাইন কাটার আগে তাদের কোনো ধরনের নোটিশ দেওয়া হয়নি বলেও জানান তারা।

ভবনটির বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা গ্যাস, পানি বা বিদ্যুতের বিল জাপান গার্ডেন সিটি কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেন। তারা বাসিন্দাদের রশিদ দেন। জাপান গার্ডেন কর্তৃপক্ষের কাছে টাকা জমা দেওয়ার রশিদ বাসিন্দাদের কাছে আছে। তবে তিতাসের কোনো রশিদ তাদের দেওয়া হয় না।

অন্যদিকে তিতাস কর্মকর্তারা জানান, তারা জাপান গার্ডেন সিটি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে দীর্ঘদিন ধরে বিল পাচ্ছেন না। প্রায় ৩০০-৪০০ গ্রাহকের বকেয়া বিল হিসেবে প্রায় ৬০ লাখ টাকা তাদের পাওনা ছিল। বেশ কয়েকবার নোটিশ দেওয়ার পরও সেই বকেয়া পরিশোধ না করায় বুধবার সকালে তাদের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।

তবে আজ বৃহস্পতিবার জাপান গার্ডেন সিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়াহিদুজ্জামান বকেয়া বিল পরিশোধ করেছেন বলে তিতাসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (রাজস্ব) মো. তোফাজ্জল হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে জানান।

বকেয়া পরিশোধের পরও বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত সিটির ওই ভবনের বাসিন্দারা গ্যাসের সংযোগ পাননি।

জাপান গার্ডেন সিটির একাধিক বাসিন্দা ডেইলি স্টারকে বলেন, বুধবার সকালের দিকে তিতাসের দুজন লোক এসে ১৭-১৮টি রাইজার খুলে নিয়ে যায়। পরে আরও কয়েকজন সেখানে এলে তাদের কাছে এর কারণ জানতে চাওয়া হয়। তাদের কাছে বিল পে করার কাগজপত্র দেখানোর পরও তারা মানেননি।

ওই ভবনের মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাজল আনোয়ার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আমাদের ভবনে প্রায় ৯০টি পরিবার থাকে। বেশিরভাগ পরিবারে বাচ্চা আছে, বৃদ্ধরা আছেন। এমনকি কয়েকজন এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। এমন অবস্থায় দুদিন ধরে চুলা জ্বলছে না। তিতাস থেকে বলা হয়েছিল, আজ দুপুরের মধ্যে সংযোগ দিয়ে যাবে। কিন্তু এখন বলছে রোববারের আগে হবে না।

'আমরা নিয়মিত জাপান গার্ডেন সিটি কর্তৃপক্ষের কাছে বিল দিয়ে দিয়েছি। এখন তারা বকেয়া রেখেছে কি না, সেটা তো আমরা বলতে পারবো না,' বলেন কাজল।

যোগাযোগ করা হলে তিতাসের ধানমন্ডি জোনের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার- ডিজিএম (বিপণন) মো. নজীবুল হক দ্য ডেইলি স্টারকে ডিজিএম (রাজস্ব) মো. তোফাজ্জল হোসেনের সঙ্গে কথা বলতে বলেন।

তোফাজ্জল হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জাপান গার্ডেন সিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়াহিদুজ্জামানের কাছে আমাদের প্রায় ৬০ লাখ টাকা বকেয়া ছিল। এটা প্রায় ৩০০-৪০০ জন গ্রাহকের টাকা। লাইন কেটে দেওয়ার পর বকেয়া পরিশোধ করা হয়েছে। আমরা টাকা বুঝে পেয়েছি উল্লেখ করে বিপণন বিভাগকে জানিয়ে দিয়েছি। পরবর্তী পদক্ষেপ তারা নেবে।'

নজীবুল হকের সঙ্গে আবার যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, 'এ বিষয়ে স্টেটমেন্ট দেওয়া উচিত হবে না। ওখানে আমাদের অনেক গ্রাহকের কাছে টাকা পাওনা রয়েছে। স্বাভাবিক প্রক্রিয়াতেই এটির সমাধান হবে।'

সেটা কবে নাগাদ, জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'রোববারের আগে বলা যাচ্ছে না। রোববার আমরা বিষয়গুলো নিয়ে বসব।'

মোট কতজন গ্রাহকের কাছে কত টাকা পাওনা, সে বিষয়ে তিনি কাগজপত্র না দেখে কিছু বলতে পারবেন না বলে জানান।

জাপান গার্ডেন সিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়াহিদুজ্জামানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

Comments

The Daily Star  | English

People cautioned of travelling to India, affected countries as Covid spreads

DGHS has also instructed to enhance health screening and surveillance measures at all land, river, and airports

8h ago