সালমান রুশদির ওপর হামলাকারী যুবকের পরিচয় প্রকাশ
বুকারজয়ী ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক সালমান রুশদিকে ছুরিকাঘাতের দায়ে আটক ব্যক্তির পরিচয় প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ।
আজ শনিবার দ্য গার্ডিয়ান জানায়, হামলার কয়েকঘণ্টা পর পুলিশের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, সন্দেহভাজন হামলাকারীর নাম হাদি মাতার। ২৪ বছর বয়সী এই যুবক নিউ জার্সির ফেয়ারভিউয়ের বাসিন্দা।
নিউইয়র্ক পুলিশের মেজর ইউজিন স্ট্যানিসজেউস্কি বলেন, 'শিটোকোয়া ইনস্টিটিউটের মঞ্চে ৭৫ বছর বয়সী সালমান রুশদি যখন বক্তৃতার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তখন হাদি মাতার মঞ্চে ছুটে আসেন এবং রুশদির ঘাড় ও পেটে ছুরিকাঘাত করেন।'
'রুশদির ওপর মাতারের হামলার উদ্দেশ্য এখনো পরিষ্কার নয়। ঘটনা তদন্তে স্থানীয় ও রাজ্যের কর্মকর্তাদের সহায়তা করতে ইতোমধ্যে এফবিআই এজেন্টরা যোগ দিয়েছেন', বলেন তিনি।
ইউজিন স্ট্যানিসজেউস্কি আরও বলেন, 'সেদিন মাতার টিকিট কেটে ওই আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রবেশ করেছিলেন। এখন রুশদির শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে মাতারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হবে।'
আইনপ্রয়োগকারী সূত্রের বরাত দিয়ে নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে মাতার ইরান সরকারের প্রতি সহানুভূতিশীল বলে জানা গেছে। তবে এ হামলার পেছনে ইরানের দিক থেকে কোনো ইন্ধন রয়েছে কি না তা নিশ্চিত নয়।
সালমান রুশদি বর্তমানে ভেন্টিলেটর সাপোর্টে আছেন এবং কথা বলতে পারছেন না।
তার ঘনিষ্ঠ এক কর্মকর্তা অ্যান্ড্রু ওয়াইলি বলেছেন, 'সালমান রুশদির অবস্থা তেমন একটা ভালো না। তিনি এক চোখ হারাতে পারেন। তার বাহুতে থাকা স্নায়ুগুলো কেটে ফেলা হয়েছে। ছুরিকাঘাতে তার লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।'
ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক সালমান রুশদি ২০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন। ১৯৮১ সালে 'মিডনাইট'স চিলড্রেন' নামক বইয়ের জন্য বুকার পুরস্কার পান তিনি।
১৯৮৮ সালে চতুর্থ বই 'দ্য স্যাটানিক ভার্সেস'-এর জন্য তাকে ৯ বছর লুকিয়ে থাকতে হয়েছিল। যুক্তরাজ্যে বসবাসকালে বেশিরভাগ সময় তাকে সরকারের সুরক্ষা নিয়ে থাকতে হয়েছে।
'স্যাটানিক ভার্সেস' উপন্যাসে ইসলাম ধর্মকে অবমাননা করা হয়েছে বলে মনে করেন মুসলিমরা। এটি প্রকাশের পর থেকে সালমান রুশদি হত্যার হুমকি পেয়ে আসছিলেন। বইটি প্রকাশের এক বছর পর ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লা আলী খামেনি সালমান রুশদির মৃত্যুদণ্ডের ফতোয়া জারি করেন। সেই সঙ্গে তার মাথার দাম হিসেবে ৩ মিলিয়ন (৩০ লাখ) ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেন।
তবে অনেক আগেই ইরান সরকার আয়াতুল্লা আলী খামেনির সেই অবস্থান থেকে সরে আসে। যদিও দেশটিতে রুশদিবিরোধী মনোভাব টিকে আছে বলে ধারণা করা হয়।
সাহিত্যে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২০০৭ সালে সালমান রুশদিকে নাইট উপাধি দেন ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ।
Comments