সুদানের সংঘাত মানবিক বিপর্যয়: জাতিসংঘ

৪ দিন ধরে চলতে থাকা সংঘাতের খার্তুমের এক ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িতে বাসিন্দারা দরকারী জিনিসপত্র খুঁজছেন। ছবি: রয়টার্স
৪ দিন ধরে চলতে থাকা সংঘাতের খার্তুমের এক ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িতে বাসিন্দারা দরকারী জিনিসপত্র খুঁজছেন। ছবি: রয়টার্স

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যস্থতায় সুদানে যুদ্ধরত সেনাবাহিনী ও আধা-সামরিক বাহিনী আরএসএফের মধ্যে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা এলেও সংঘাত থামেনি।

গতকাল মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো এ তথ্য জানিয়েছে।

চলমান সংঘাতকে জাতিসংঘ মানবিক বিপর্যয় হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। এছাড়াও, দেশটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থাতেও বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির ৩ কর্মকর্তা সংঘাতে নিহত হওয়ায় সুদানে সংস্থাটির কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তারা সুদানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, চলমান সংঘাতে দেশটিতে অন্তত ২৭০ জন নিহত ও ২ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।

কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, ২ জেনারেলের অনুগত বাহিনী সুদানের রাজধানী খার্তুমের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোয় যুদ্ধ অব্যাহত রেখেছে। তারা যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের দায় একে অপরের ওপর চাপিয়েছে।

গতকাল স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা থেকে যুদ্ধবিরতি শুরুর কথা থাকলেও কয়েকটি টিভি চ্যানেলের লাইভ দৃশ্যে জোরালো গুলির শব্দ শোনা গেছে।

সেনাবাহিনী ও এর প্রতিপক্ষ আধা-সামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) আলাদা বিবৃতিতে যুদ্ধবিরতির প্রতি সম্মান না জানানোর পাল্টাপাল্টি অভিযোগ এনেছে।

সেনাবাহিনীর হাইকমান্ড জানিয়েছে, তারা রাজধানী ও অন্যান্য অঞ্চলকে সুরক্ষিত রাখতে অভিযান অব্যাহত রাখবে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, সুদানের যুদ্ধবিরতি হট্টগোলে ভেস্তে গেছে। 

জাতিসংঘের মুখপাত্র স্তেফানি দুজারিক নিউইয়র্কে সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, 'যুদ্ধ বন্ধ হয়েছে, এরকম কোনো ইঙ্গিত পাইনি।'

গত ৪ দিন আগে সুদানের ক্ষমতাসীন কাউন্সিলের নেতা ও সামরিক বাহিনীর প্রধান ও তার সহকারীর মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। এর ফলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যস্থতায় দেশটিতে গণতান্ত্রিক ও বেসামরিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়টি মুখ থুবড়ে পড়ে।

৪ বছর আগে এই ২ নেতা একসঙ্গে কাজ করে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ক্ষমতাচ্যুত করেন। এর ২ বছর পর সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বর্তমান কাউন্সিল গঠিত হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন গতকাল জানান, তিনি সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান ও আরএসএফের নেতা জেনারেল মোহামেদ হামদান দাগালোর সঙ্গে আলাদা করে ফোনে কথা বলেছেন।

তিনি তাদেরকে যুদ্ধ বন্ধের আহবান জানান, যাতে ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে মানবিক সহায়তা পৌঁছানো যায় এবং বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া সুদানি পরিবারগুলো একত্র হওয়ার সুযোগ পায়।

র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের (আরএসএফ) প্রধান হামদান দাগালো (বাঁয়ে) এবং সামরিক নেতা আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান। ফাইল ছবি: এএফপি
র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের (আরএসএফ) প্রধান হামদান দাগালো (বাঁয়ে) এবং সামরিক নেতা আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান। ফাইল ছবি: এএফপি

উভয় পক্ষ আল জাজিরাকে জানিয়েছে, তারা যুদ্ধবিরতি মেনে চলতে আগ্রহী।

সেনাবাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল খালেদ আল-আকিদা গণমাধ্যমকে বলেন, 'আমরা যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন করে স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে আনতে আগ্রহী। কিন্তু আধা-সামরিক বাহিনী আরএসএফ কাউকে সম্মান করে না।'

আরএসএফের কমান্ডারের উপদেষ্টা মুসা খাদ্দাম গণমাধ্যমকে বলেন, 'খার্তুমের কয়েকটি এলাকায় মোতায়েন করা আমাদের বাহিনীর সদস্যরা যুদ্ধবিরতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল।'

গত রোববারেও যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তবে তা উভয় পক্ষই উপেক্ষা করে।

আন্তর্জাতিক রেড ক্রস ফেডারেশন ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি জানিয়েছে, যুদ্ধের কারণে সুদানের রাজধানীতে মানবিক সহায়তা পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। সুদানের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধসে পড়ার উপক্রম হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Teknaf customs in limbo as 19 mt of rice, authorised by AA, reaches port

The consignment of rice weighing 19 metric tonnes arrived at Teknaf land port on Tuesday evening with the documents sealed and signed by the Arakan Army

5h ago