৪ বছরে ৫৭০ শিশুর মৃত্যু, ব্রাজিলের ইয়ানোমামিতে জরুরি অবস্থা

গণমাধ্যমে ইয়ানোমামির রুগ্ন বাসিন্দাদের ছবি প্রকাশের পর শনিবার প্রেসিডেন্ট লুলা এ অঞ্চলের রোরাইমা রাজ্যের বোয়া ভিস্তায় অবস্থিত একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরিদর্শন করেন। ছবি: রয়টার্স
গণমাধ্যমে ইয়ানোমামির রুগ্ন বাসিন্দাদের ছবি প্রকাশের পর শনিবার প্রেসিডেন্ট লুলা এ অঞ্চলের রোরাইমা রাজ্যের বোয়া ভিস্তায় অবস্থিত একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরিদর্শন করেন। ছবি: রয়টার্স

ব্রাজিলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দেশটির ইয়ানোমামি অঞ্চলে জরুরি অবস্থার ঘোষণা দিয়েছে। খনি থেকে অবৈধভাবে সোনা আহরণ কার্যক্রম থেকে সৃষ্ট অসুস্থতা ও পুষ্টিহীনতায় ৫৭০ শিশু মারা যাওয়ার পর এই ঘোষণা এলো।

গতকাল রোববার বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

ভেনেজুয়েলার সীমান্তে অবস্থিত এ অঞ্চলে ব্রাজিলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সবচেয়ে বড় সম্প্রদায়ের বসবাস।

প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভার কার্যালয় থেকে শুক্রবার প্রকাশিত এক নির্দেশনায় জানানো হয়, এই ঘোষণার উদ্দেশ্য হচ্ছে ইয়ানোমামির জনগণের জন্য স্বাস্থ্য সেবা আবারও চালু করা। বিবৃতিতে দাবি করা হয়, লুলার পূর্বসূরি কট্টর ডানপন্থী নেতা জায়ের বলসোনারো এ অঞ্চলের স্বাস্থ্য সেবা বন্ধ করে দিয়েছিলেন।

বলসোনারোর ৪ বছরের শাসনামলে ইয়ানোমামি অঞ্চলে ৫৭০ শিশু মারা যায়। তাদের মৃত্যুর জন্য দায়ী ছিল পুষ্টিহীনতা, ম্যালেরিয়া, ডায়রিয়া ও সোনা আহরণে ব্যবহৃত রাসায়নিক উপকরণ পারদ থেকে সৃষ্ট শারীরিক বিকৃতি।

গণমাধ্যমে ইয়ানোমামির রুগ্ন বাসিন্দাদের ছবি প্রকাশের পর শনিবার প্রেসিডেন্ট লুলা এ অঞ্চলের রোরাইমা রাজ্যের বোয়া ভিস্তায় অবস্থিত একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরিদর্শন করেন। ছবিতে দেখানো শিশু, বৃদ্ধ ও বৃদ্ধারা এতোটাই রুগ্ন যে তাদের পাঁজরের হাড় দেখা যাচ্ছিল।

লুলা টুইট বার্তায় বলেন, 'এটা মানবিক সংকটের চেয়েও বেশি কিছু। আমি রোরাইমায় যা দেখেছি, তা একটি গণহত্যা ছাড়া আর কিছুই নয়। এটি ইয়ানোমামির বিরুদ্ধে পূর্বপরিকল্পিত অপরাধ, এবং এর পেছনে ছিল এমন এক সরকার, যেটি মানুষের দুর্দশার প্রতি উদাসীন'।

সরকার ২৬ হাজার ইয়ানোমামি অধ্যুষিত একটি সংরক্ষিত অঞ্চলে ত্রাণ হিসেবে খাদ্য প্যাকেজ পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে। চিরহরিৎ বন ও গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঘাসে আচ্ছাদিত এ অঞ্চলের আকার পর্তুগালের সমান।

এই সংরক্ষিত অঞ্চলটি কয়েক দশক ধরে অবৈধ সোনা আহরণকারীদের লক্ষ্যবস্তু হয়ে এসেছে। বলসোনারো ২০১৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে এই অবৈধ খননকাজকে বৈধতা দেওয়ার ঘোষণা দিলে সোনা আহরণের পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়।

লুলা অঙ্গীকার করেছেন, তার সরকার এই অবৈধ সোনা আহরণের কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ করবেন। তিনি আমাজন জঙ্গল রক্ষার জন্য সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়ার বিষয়টিতে জোর দেন।

ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সংক্রান্ত মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী সোনিয়া গুয়াজাজারা বলেন, 'পরিস্থিতি এতোটাই খারাপ হয়েছে, যে প্রাপ্তবয়স্কদের ওজন শিশুদের মতো হয়েছে এবং শিশুরা হাড্ডিসার হয়েছে—এর জন্য অবশ্যই আগের সরকারকে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে'।

উল্লেখ্য, সোনিয়া হচ্ছে ব্রাজিলের প্রথম মন্ত্রী, যিনি কোনো ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্য।

 

Comments

The Daily Star  | English

Beximco workers' protest turns violent in Gazipur

Demonstrators set fire to Grameen Fabrics factory, vehicles; properties vandalised

3h ago