ব্রাজিলে সহিংসতার ঘটনায় শীর্ষ কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ

ব্রাসিলিয়ার সহিংসতার ঘটনায় দেশটির জাতীয় কংগ্রেস ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়। ছবি: রয়টার্স
ব্রাসিলিয়ার সহিংসতার ঘটনায় দেশটির জাতীয় কংগ্রেস ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়। ছবি: রয়টার্স

ব্রাজিলের বিচার বিভাগের কর্মকর্তারা রাজধানী ব্রাসিলিয়ার গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনায় সাবেক প্রেসিডেন্ট বলসোনারোর কট্টর ডানপন্থি সমর্থকদের হামলার ঘটনায় বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন।

আজ বুধবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

স্থানীয় গণমাধ্যমের সংবাদ অনুসারে, এক কর্মকর্তাকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি দেশটির সামরিক পুলিশের সাবেক কমান্ডার।

প্রধান কৌঁসুলির কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, ব্রাসিলিয়ার সাবেক সরকারি নিরাপত্তা প্রধান অ্যান্ডারসন তোরেস ও 'সহিংসতা ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে না পারা ও এর উৎপত্তির জন্য দায়ী' ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হবে।

সহিংসতার ঘটনায় কোনো ধরনের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছেন তোরেস।

সাবেক প্রেসিডেন্ট জায়ের বলসোনারোর সমর্থকরা কংগ্রেস, প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ ও সুপ্রিম কোর্টে হামলা চালানোর পর পুলিশের কমান্ডার কর্নেল ফাবিও অগাস্তোকে তার পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভার অভিষেকের এক সপ্তাহ পর এই সহিংসতার ঘটনা ঘটে।

হাজারো বিক্ষোভকারীকে ঠেকাতে ব্যর্থ হয় পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের অনেকেরই পরনে ছিল ব্রাজিলের জাতীয় ফুটবল দলের হলুদ গেঞ্জি। খুব অল্প সময়ের মধ্যে তারা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ৩ ভবনে অবস্থান নেন।

ব্রাসিলিয়ার সাবেক সরকারি নিরাপত্তা প্রধান অ্যান্ডারসন তোরেস। ফাইল ছবি: রয়টার্স
ব্রাসিলিয়ার সাবেক সরকারি নিরাপত্তা প্রধান অ্যান্ডারসন তোরেস। ফাইল ছবি: রয়টার্স

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এখন পর্যন্ত প্রায় দেড় হাজার ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ অ্যাকাডেমিতে নিয়ে আসা হয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রায় ৬০০ জনকে অন্য জায়গায় স্থানান্তর করা হয়েছে।

পুলিশের কর্মকর্তারা গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনতে ৫ দিন সময় পাবেন।

গত রোববার প্রেসিডেন্ট লুলা বিচারকবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী রিকার্ডো কাপেল্লিকে ব্রাসিলিয়ার নিরাপত্তা সমন্বয়ের দায়িত্ব দেন। রিকার্ডো গণমাধ্যমকে বলেন, সরকারি ভবনগুলোয় হামলার আগে তোরেসের কাছ থেকে উপযুক্ত 'নির্দেশ' আসেনি।

রিকার্ডোর দাবি, লুলার অভিষেকের অনুষ্ঠানে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু, রোববারের ঘটনার আগে ২ জানুয়ারি 'অ্যান্ডারসন তোরেস নিরাপত্তা সচিবের দায়িত্ব নেন, সব নিরাপত্তা সংক্রান্ত নির্দেশনা বাতিল করেন এবং বিদেশ ভ্রমণে যান', যোগ করেন রিকার্ডো।

তিনি আরও বলেন, 'এটা যদি নাশকতা না হয়, তাহলে আমি জানি না কোন ঘটনাকে নাশকতা বলা যায়।'

তোরেস জানান, সহিংসতার সঙ্গে তার যুক্ত থাকার অভিযোগ 'অবাস্তব কল্পনা'।

তিনি আরও জানান, পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটাতে ব্রাসিলিয়ায় যেসব ঘটনা ঘটেছে, তা দুর্ভাগ্যজনক। তিনি একে তার ব্যক্তিগত ও চাকরি জীবনের 'সবচেয়ে তিক্ত দিন' হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।

লুলা ব্রাসিলিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে 'জঙ্গি কার্যক্রম ঠেকানোর দায়িত্বে অবহেলার' অভিযোগ এনেছেন।

গতকাল মঙ্গলবার সরকারি কৌঁসুলিরা কেন্দ্রীয় অডিট আদালতকে এসব সহিংসতার ঘটনার প্রেক্ষাপটে বলসোনারোর সম্পদ জব্দ করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

ব্রাসিলিয়ার গভর্নর ইবানেইস রোচা গত রোববার তোরেসকে নিরাপত্তা সচিবের পদ থেকে বরখাস্ত করেন। এরপর তাকেও সুপ্রিম কোর্ট ৯০ দিনের জন্য তাকে অব্যাহতি দেয়।

বলসোনারো হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং সহিংসতা উসকে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

গত মঙ্গলবার বলসোনারোর ছেলে ফ্লাভিও বলসোনারো জানান, মানুষের উচিৎ নয় তার বাবাকে এসব সহিংসতার সঙ্গে সম্পৃক্ত করা। এই সিনেটর আরও বলেন, তার বাবা নির্বাচনে হেরে যাওয়ায় 'কষ্ট পেয়েছেন'। তিনি 'নীরবে'  নিজেকে সান্ত্বনা দিয়ে যাচ্ছেন।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

15h ago