ব্রাজিলে লুলার বিরুদ্ধে উগ্র ডানপন্থিদের সহিংস বিক্ষোভ
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২ বছর আগে নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর তার সমর্থকরা ক্যাপিটলে তাণ্ডব চালিয়েছিল। একই কায়দায় ব্রাজিলের উগ্র-ডানপন্থি সাবেক প্রেসিডেন্ট জায়ের বলসোনারোর সমর্থকরা দেশটির কংগ্রেস, প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ ও সুপ্রিম কোর্টে হামলা চালিয়েছেন।
গতকাল রোববার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট লুলা রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত জরুরি অবস্থা জারি করেছেন। সরকারি আদেশ অনুসারে, এই সময়সীমা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকার রাজধানীর সব সরকারি নিরাপত্তা সংস্থার নিয়ন্ত্রণ নেবে।
ব্রাসিলিয়ার গভর্নর আইবানিস রোচা জানান, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪০০-র বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা অ্যান্ডারসন তোরেসকে বরখাস্ত করার কথারও তিনি জানিয়েছেন।
হামলায় তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। প্রায় ৩ ঘণ্টাব্যাপী সহিংস বিক্ষোভে হামলাকারীরা প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের জানালা ভেঙে আসবাবপত্র বাইরে ছুঁড়ে ফেলেছেন। কংগ্রেস ভবনে পানি ছিটিয়েছেন। ও সুপ্রিম কোর্টের মিলনায়তনে ভাঙচুর চালিয়েছেন।
২০২২ সালের অক্টোবরের নির্বাচনে বামপন্থি নেতা লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা প্রেসিডেন্ট পদে বিজয়ী হলেও ২ প্রার্থীর মধ্যে ব্যবধান খুবই কম ছিল।
পরাজিত প্রার্থী বলসোনারো নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ আনলেও তা প্রমাণিত হয়নি।
লুলার দাবি, এই ভিত্তিহীন অভিযোগকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে বলসোনারো তার সমর্থকদের খেপিয়ে তুলেছেন।
হামলার প্রতিক্রিয়ায় প্রেসিডেন্ট লুলা বলেন, 'যারা এভাবে ভাঙচুর করেছেন, তাদেরকে উগ্রবাদী বলতে পারি। তারা এমন কাজ করেছেন যা আমাদের দেশের ইতিহাসে আগে আর কেউ করেননি। তাদের সবাইকে খুঁজে বের করা হবে। শাস্তি দেওয়া হবে।'
উগ্র ডানপন্থিরা বেশ কয়েকদিন ধরে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বিক্ষোভের পরিকল্পনা করছিল। তা সত্ত্বেও সরকারের নিরাপত্তা বাহিনী কেন এই হামলা ঠেকানোর জন্য প্রস্তুত ছিল না, তা নিয়ে প্রেসিডেন্টের মিত্ররা প্রশ্ন তুলেছেন।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মতো বলসোনারো এখনো নির্বাচনে পরাজয় মেনে নেননি। তিনি দাবি করেন, দেশটির ইলেকট্রনিক ভোটিং ব্যবস্থায় ত্রুটি আছে। এতে কারচুপি করা সম্ভব। এই দাবির স্বপক্ষে তিনি কোনো প্রমাণ দিতে পারেননি।
হামলার বিষয়ে বলসোনারো গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ গণতন্ত্রের অংশ, তবে এভাবে হামলা করা ও সরকারি ভবনের ক্ষতি 'সীমা লঙ্ঘনের' সমতুল্য।
Comments