কানাডায় দাবানল: ধোঁয়ায় ঢেকে গেছে নিউইয়র্কের আকাশ

ফাইল ফটো এএফপি

কানাডার বিভিন্ন অঞ্চলে গত মাস থেকে ছড়িয়ে পড়েছে দাবানল। এতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে কুইবেক প্রদেশ। একইসঙ্গে ১৪০টি জায়গায় জ্বলছে দাবানলের আগুন। কুইবেক অঞ্চলের হাজারো মানুষ সাহায্যের আশায় দিন গুনছেন।

আজ বৃহস্পতিবার বার্তাসংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগুন এত বেশি ছড়িয়ে পড়েছে যে কানাডার অভ্যন্তরীণ অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা এটা মোকাবিলার জন্য যথেষ্ট নয়। 

গত মাসে পশ্চিম কানাডায় আগুন ছড়িয়ে পড়ার পর সম্প্রতিকালে এটি আটলান্টিক মহাসাগর উপকূলের নোভা স্কশিয়া প্রদেশেও ছড়িয়ে পড়ে। এরপর এ সপ্তাহে দাবানল কুইবেকে আঘাত হানে। বর্তমানে এ এই প্রদেশটিই দাবানলের কেন্দ্রস্থল। 

এই প্রদেশের ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ১৪০টি স্থানে ছড়িয়ে পড়া আগুন নেভাতে প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এগুলো 'নিয়ন্ত্রণের বাইরে' বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ আশা করছে বাড়তি কর্মী নিয়োগ ও বৃষ্টিপাত হলে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতে পারে। 

কুইবেক সরকারের প্রধান ফ্রাঁসোয়া লেগল্ট জানিয়েছেন, আগামী সোমবার সন্ধ্যার আগে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। তিনি আগুন মোকাবিলায় উপকরণের স্বল্পতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। 

এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, 'বর্তমান জনসম্পদ নিয়ে আমরা একসঙ্গে ৪০টি অগ্নিকাণ্ডের মোকাবিলা করতে পারি।'

আগামী দিনগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের কাছ থেকে সহায়তা পাওয়ার আশায় আছে কুইবেক কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে কয়েক শত দমকলকর্মী আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালাচ্ছেন। 

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বুধবার এই ঘটনাকে, 'কানাডার ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানল মৌসুম' বলে অভিহিত করেছেন। 

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে কানাডায় ধারাবাহিকভাবে বৈরি আবহাওয়া দেখা যাচ্ছে।  

ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহর। ছবি: রয়টার্স

'এসব অগ্নিকাণ্ড আমাদের দৈনন্দিন জীবন, জীবিকা ও বাতাসের গুণগত মানকে প্রভাবিত করছে', যোগ করেন ট্রুডো। তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করেন। 

বুধবার পর্যন্ত কানাডার প্রায় ৩৮ লাখ হেক্টর জমি পুড়ে গেছে এবং ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। 

এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। তার কারণ হাজারো মানুষকে আজকের মধ্যে কুইবেক ছেড়ে অন্য জায়গায় চলে যাওয়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

সরকার প্রধান লেগল্ট জানান, আরও ১ সপ্তাহ কুইবেক থেকে অন্য জায়গায় সরে যাওয়ার নির্দেশ অব্যাহত থাকতে পারে।

এ বছরের শুরু থেকে কুইবেকে ৪৪৩টি দাবানলের ঘটনা ঘটেছে। একই সময়ের মধ্যে গত ১ দশকের গড় সংখ্যার থেকে যা দ্বিগুণেরও বেশি।  

কুইবেকের আগুনের ধোঁয়া অনেক দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। কানাডার অন্যান্য শহর, এমন কী, যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কেও পৌঁছেছে সেই ধোঁয়া। নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনে ধোঁয়া ও কুয়াশার কারণে আকাশ দেখা যাচ্ছে না বললেই চলে।

Comments

The Daily Star  | English

Reform proposals without consensus unacceptable

Says Fakhrul; BNP pays tribute to Ziaur Rahman on his 89th birth anniversary

52m ago