জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে গাজায় ২ মাস যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিলো ইসরায়েল

এই প্রস্তাবে হামাসের সর্বশেষ দাবি মানা হয়নি। সংগঠনটি এর আগে জানায়, গাজায় স্থায়ী ভাবে আগ্রাসন বন্ধ না হলে বাকি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে না।
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর স্থল অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ছবি: রয়টার্স (২০ জানুয়ারি, ২০২৪)
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর স্থল অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ছবি: রয়টার্স (২০ জানুয়ারি, ২০২৪)

দুই মাসের জন্য গাজায় যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব দিয়েছে ইসরায়েল। দেশটি কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে বিবেচনার জন্য এই প্রস্তাব ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাসের কাছে ইতোমধ্যে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।

আজ মঙ্গলবার ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, হামাসের হাতে বন্দি বাকি জিম্মিদের কয়েক দফায় মুক্তি দেওয়ার শর্তে দুই মাস পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে।

এই প্রস্তাবে হামাসের সর্বশেষ দাবি মানা হয়নি। সংগঠনটি এর আগে জানায়, গাজায় স্থায়ীভাবে আগ্রাসন বন্ধ না হলে বাকি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে না।

সংবাদমাধ্যম একসিওস দুই ইসরায়েলি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সর্বশেষ এই প্রস্তাবের কথা জানিয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েলের এই প্রস্তাব সাম্প্রতিক সময়ের যেকোনো যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের চেয়ে বেশি ইতিবাচক।

ইসরায়েলি কর্মকর্তারা এক্সিওসকে বলেন, ইসরায়েল এখন সতর্কতার সঙ্গে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং হামাসের জবাবের জন্য অপেক্ষা করছে। আগামী দিনগুলোতে পরিস্থিতির উন্নয়ন ও আলোচনার অগ্রগতি নিয়ে তারা আশাবাদী।

ইসরায়েল প্রস্তাব দিয়েছে, প্রথম ধাপে শিশু, নারী, ৬০ বছরের বেশি বয়সী এবং গুরুতর অসুস্থ জিম্মিদের মুক্তি দিতে হবে।

পরবর্তী ধাপে সব নারী সেনা ও ৬০ বছরের চেয়ে কম বয়সী বেসামরিক পুরুষ, পুরুষ সেনা ও নিহত জিম্মিদের মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।

ইসরায়েলের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, জিম্মি মুক্তি শুরুর আগে ইসরায়েল ও হামাসকে আলোচনা করে নির্ধারণ করতে হবে জেরুজালেমের কারাগারে বন্দি কতজন ফিলিস্তিনিকে প্রতি ধাপে মুক্তি দেওয়া হবে। এরপর অভিযুক্তদের বিষয়ে আলাদা করে বিস্তারিত আলোচনার আয়োজন করা হবে।

প্রস্তাবে গাজা উপত্যকা থেকে পর্যায়ক্রমে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহার ও উত্তর গাজায় ফিলিস্তিনিদের ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার বিষয়গুলোও বলা হয়েছে। হামাসের বিরুদ্ধে সংঘাতের শুরুতে ফিলিস্তিনিদের উত্তর গাজা ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

প্রস্তাবে নির্দিষ্ট করে বলা হয়েছে, ইসরায়েল স্থায়ীভাবে যুদ্ধ বন্ধ করবে না এবং ইসরায়েলি কারাগারে বন্দি মোট ছয় হাজার ফিলিস্তিনিদের সবাইকে মুক্তি দেবে না। তবে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা একসিওসকে জানান, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বন্দিকে মুক্তি দিতে তারা রাজি।

স্পেনের বার্সেলোনায় গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ। ছবি: রয়টার্স (২০ জানুয়ারি, ২০২৪)
স্পেনের বার্সেলোনায় গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ। ছবি: রয়টার্স (২০ জানুয়ারি, ২০২৪)

একসিওস জানিয়েছে, এই প্রস্তাবের বাস্তবায়ন হলে যুদ্ধবিরতি শেষে গাজায় ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) অভিযানের পরিধি উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসবে। 

সোমবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এখনো জিম্মি থাকা ইসরায়েলি নাগরিকদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন। সেখানে তিনি বলেন, 'হামাসের পক্ষ থেকে কোনো গ্রহণযোগ্য প্রস্তাব আসেনি'।

'অপরদিকে, আমাদের নিজস্ব উদ্যোগ চলমান আছে। তবে এ মুহূর্তে আমি বিস্তারিত জানাচ্ছি না,' যোগ করেন তিনি।

এই বৈঠকের পরেই এলো এই প্রস্তাবের বিস্তারিত।

টাইমস অব ইসরায়েলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামাসের তিন হাজার যোদ্ধা হামলা চালায়। এতে প্রায় এক হাজার ২০০ মানুষ নিহত হন। তাদের বেশিরভাগই বেসামরিক।

নভেম্বরের শেষে যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের মধ্যস্থতায় চালু দুই সপ্তাহের মানবিক যুদ্ধবিরতির মধ্যে ১০৫ জিম্মিকে মুক্তি দেয় হামাস। কিন্তু এরপর থেকে নতুন করে যুদ্ধবিরতির আলোচনায় ফল আসেনি।

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর স্থল অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ছবি: রয়টার্স (২০ জানুয়ারি, ২০২৪)
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর স্থল অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ছবি: রয়টার্স (২০ জানুয়ারি, ২০২৪)

হামাসের হামলার পর গাজা উপত্যকায় প্রতিশোধমূলক, নির্বিচার ও সর্বাত্মক আগ্রাসন শুরু করে ইসরায়েলের স্থল ও বিমানবাহিনী। প্রায় সাড়ে তিন মাস ধরে চলমান আগ্রাসনে প্রাণ হারিয়েছে ২৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি, যাদের বেশিরভাগই শিশু ও নারী।

Comments

The Daily Star  | English
Impact of esports on Bangladeshi society

From fringe hobby to national pride

For years, gaming in Bangladesh was seen as a waste of time -- often dismissed as a frivolous activity or a distraction from more “serious” pursuits. Traditional societal norms placed little value on gaming, perceiving it as an endeavour devoid of any real-world benefits.

17h ago