কাতারের মধ্যস্থতায় হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তির সম্ভাবনা

অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিন শরণার্থীশিবিরে হামলার পর এক ফিলিস্তিনি ব্যক্তিকে ধ্বংসযজ্ঞ পর্যবেক্ষণ করতে দেখা যাচ্ছে। ছবি: রয়টার্স
অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিন শরণার্থীশিবিরে হামলার পর এক ফিলিস্তিনি ব্যক্তিকে ধ্বংসযজ্ঞ পর্যবেক্ষণ করতে দেখা যাচ্ছে। ছবি: রয়টার্স

ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়া বলেছেন, তারা ইসরায়েলের সঙ্গে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানোর কাছাকাছি রয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার হানিয়ার বরাত দিয়ে রয়টার্স এই তথ্য জানায়।

রয়টার্সকে হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়ার সহকারী একটি বিবৃতি পাঠিয়েছেন, যেখানে বলা হয়েছে, হামাসের কর্মকর্তারা ইসরায়েলের সঙ্গে 'যুদ্ধবিরতির বিষয়ে চুক্তিতে পৌঁছানোর কাছাকাছি' আছেন এবং সংগঠনটি ইতোমধ্যে কাতারি মধ্যস্থতাকারীদের কাছে তাদের জবাব পাঠিয়েছে।

বিবৃতিতে সম্ভাব্য চুক্তির বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

তবে হামাস কর্মকর্তা ইসাত এল রেশিক আল জাজিরা টিভিকে বলেন, 'কত দিন ধরে যুদ্ধ বিরতি চালু থাকবে , সে বিষয়টিকে ঘিরে দর-কষাকষি হয়েছে। এ ছাড়া, গাজায় ত্রাণ পৌঁছানো এবং হামাসের হাতে বন্দী ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েলে আটক ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তির বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে।'

উভয় পক্ষ নারী ও শিশুদের মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে একমত হয়েছে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাবে কাতার। হামাসের কর্মকর্তা রেশিক জানান, কাতার এই আলোচনায় মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করছে।

৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা চালালে প্রায় এক হাজার ২০০ মানুষ নিহত হন। সে সময় ইসরায়েলি ভূখণ্ড থেকে প্রায় ২৪০ জন ইসরায়েলি ও বিদেশী নাগরিককে জিম্মি করে হামাস।  এ ঘটনার পর হামাসকে নিশ্চিহ্ন করার অঙ্গীকার নেয় ইসরায়েল।

৭ অক্টোবর থেকে শুরু করে টানা প্রায় ৪৫ দিন ধরে গাজা অবরুদ্ধ করে নির্বিচার বিমান ও স্থল হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। গাজার সরকার জানিয়েছে, গত দেড় মাসে ১৩ হাজার ৩০০ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন, যার মধ্যে ৫ হাজার ৬০০ শিশু ও ৩ হাজার ৫৫০ নারী আছেন।

রেড ক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটির (আইসিআরসি) সভাপতি মিরজানা স্পোলজারিক সোমবার কাতারে হানিয়ার সঙ্গে দেখা করে এই সংঘর্ষের 'মানবিক বিষয়গুলো' নিয়ে আলোচনা করেন। জেনেভা ভিত্তিক সংস্থাটি এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানায়।

হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া। ফাইল ছবি: রয়টার্স
হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া। ফাইল ছবি: রয়টার্স

মিরজানা আলাদা করে কাতারি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। 

তবে আইসিআরসি যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির আলোচনায় সরাসরি অংশ নেয়নি বলে জানিয়েছে।

জিম্মি মুক্তির আলোচনা বেশ কয়েকদিন ধরে চলছে। গত সপ্তাহে কাতারি মধ্যস্থতাকারীরা ৫০ জন জিম্মি বিনিময় ও ৩ দিনের যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার কথা জানায়।

গাজা সীমান্তে মোতায়েন করা ইসরায়েলি ট্যাংক। ছবি: এএফপি (২০ নভেম্বর, ২০২৩)
গাজা সীমান্তে মোতায়েন করা ইসরায়েলি ট্যাংক। ছবি: এএফপি (২০ নভেম্বর, ২০২৩)

যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত মাইকেল হেরজগ রবিবার জানান, 'আগামী কয়েক দিনের মধ্যে' চুক্তি হতে পারে।

এ ছাড়া, রোববার কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মেদ বিন আবদুলরাহমান আল-থানি জানান, 'ছোটখাটো' কিছু বিষয়ে এখনও দুই পক্ষ একমত হতে পারেনি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও অন্যান্য কর্মকর্তারা সোমবার জানান, খুব শিগগির চুক্তি হতে পারে। তবে এর আগেও এরকম পরিস্থিতি দেখা দিয়েছিল, যখন মনে হচ্ছিল যেকোনো মুহূর্তে চুক্তির বিষয়ে সবাই একমত হবে। 

হোয়াইট হাউজের সহকারী জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন ফাইনার রোববার বলেন, 'এ ধরনের সংবেদনশীল আলোচনা যেকোনো মুহূর্তে ভেস্তে যেতে পারে। সবকিছুতে সবাই একমত না হওয়া পর্যন্ত কোনো কিছুই চূড়ান্ত নয়।'

 

Comments

The Daily Star  | English

Students suffer as NCTB fails to deliver books

Only 37% of 40.15cr textbooks distributed till first half of Jan

11h ago