এক সপ্তাহের মধ্যে চট্টগ্রামের গ্যাস সংকট কাটবে: জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী
বন্দরনগরীর আসকার দীঘির পাড় এলাকার বাসিন্দা শুভেচ্ছা ঘোষ খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠেও চুলায় গ্যাস না থাকায়, তার তিন বছর বয়সী সন্তানের জন্য খাবার তৈরি করতে পারেন না।
দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, 'সারাদিন চুলায় গ্যাস থাকে না। সূর্যোদয়ের আগে গ্যাস চলে যায়, গভীর রাতে আসে। সকালের নাস্তা, দুপুরের খাবার রান্না করতে পারি না।'
তিনি আরও বলেন, 'বড়দের জন্য বাইরে থেকে সকালের নাস্তা ও দুপুরের খাবার কিনে আনা হয়। কিন্তু বাচ্চা তো বাইরের খাবার খেতে পারে না। তাই গ্যাস সংকটে তাকেই সবচেয়ে বেশি ভুগতে হচ্ছে।'
গত দুই মাস ধরে তিনি ও তার তার পরিবার এই অবর্ণনীয় কষ্টের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন।
শুধু আসকার দীঘির পাড় এলাকা নয়, তীব্র গ্যাস সংকটের কারণে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা গত দুই মাসের বেশি সময় ধরে ভুগছেন। অনেকেই বাইরে থেকে খাবার কিনে খাচ্ছেন। অনেকেই আবার বিকল্প উপায়ে রান্না করতে বাধ্য হচ্ছেন।
খুলশী, জামাল খান, দেওয়ানজি পুকুর পাড়, দেওয়ান বাজার, হেমসেন লেন, শুলক বহর, ঘাট ফরহাদবেগ, বাকলিয়া, চকবাজারসহ বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা জানান, গত দুই মাস ধরে ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তাদের বাসায় গ্যাস সরবরাহ থাকছে না।
তবে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ আশ্বাস দিয়েছেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বন্দরনগরীর গ্যাস সংকট পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
চট্টগ্রাম অঞ্চলে গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের প্রতিদিনের মোট চাহিদার তুলনায় প্রায় ৪ কোটি মেট্রিক স্ট্যান্ডার্ড ঘনফুট (এমএমসিএফ) গ্যাস কম পাচ্ছে কেজিডিসিএল। এ কারণে এ সংকট।
কেজিডিসিএল সূত্র জানায়, কক্সবাজারের মহেশখালীতে ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল থেকে সরবরাহ ঘাটতির কারণে চট্টগ্রামের জন্য দৈনিক বরাদ্দ ৩২০ এমএমসিএফ থেকে কমিয়ে ২৮০ এমএমসিএফ করা হয়েছে।
কেজিডিসিএলের মহাব্যবস্থাপক (বণ্টন) প্রকৌশলী গৌতম চন্দ্র কুন্ডু ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মহেশখালীর দুটি এলএনজি টার্মিনালের একটি গত ১ নভেম্বর থেকে রক্ষণাবেক্ষণের কারণে সাময়িকভাবে বন্ধ থাকায় গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে।'
এ বিষয়ে জানতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এলএনজি টার্মিনালের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ প্রায় শেষ। টার্মিনালটি থেকে আবার গ্যাস সরবরাহ শুরু করতে ৭ বা ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় লাগবে।'
'তাই, আশা করছি এক সপ্তাহের মধ্যে চট্টগ্রামে গ্যাস সংকট পরিস্থিতির উন্নতি হবে,' বলেন তিনি।
Comments