‘তোমরা এমন কেন করলা, আমার ছেলেটা নাই...’

নিহত শান্তর মরদেহ শনাক্ত করতে হাসপাতালে নেওয়া হয় তার মাকে। ছবি: স্টার

'আমার বাবা টিউশনিতে গেছে, বলেছিল আম্মু আমি তাড়াতাড়ি ফিরব। এখন শুনি আমার বাবা আর নাই।' 

সন্তানের মৃত্যু সংবাদ শুনে কিছুতেই বিশ্বাস করছিলেন না চট্টগ্রাম মহানগরীতে গুলিতে নিহত এমইএস কলেজের শিক্ষার্থী মো. ফয়সাল আহমদ শান্তর মা। 

শান্ত এমইএস কলেজের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

চট্টগ্রামে আজ মঙ্গলবার বিকেলে কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন শান্ত।

রাত ৮টার দিকে তার মাকে নিয়ে আসা হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে। পাশের একটি কক্ষে নিহত আরও দুজনের মরদেহের পাশে রাখা ছিল শান্তর মরদেহ। 

শান্তর মা অজানা উৎকণ্ঠায় চিৎকার করে বলতে থাকেন, 'আমাকে কেন ওখানে নিয়ে যাচ্ছ। হায় হায় আমার ছেলের কি কিছু হয়ে গেছে?'

কিছুক্ষণ পর এক পুলিশ কর্মকর্তা এসে বলেন, মৃতের তথ্য লিপিবদ্ধ করতে মাকে যেতে হবে। 

তখনই তিনি বুঝে যান তার সন্তানের নির্মম পরিণতি ঘটেছে। হাত পা ছুড়ে আর্তনাদ করতে থাকেন তিনি। 

'কোথাও যাব না আমি। ও আল্লাহ, ও মালিক এটা কেন হলো? ও আল্লাহ, আমি কি স্বপ্ন দেখছি,' বলছিলেন মা।

তাকে নিয়ে আসা শিক্ষার্থীরা কোনোভাবেই শান্ত করতে পারছিলেন না।

চিৎকার করে কেবল তার আহাজারি শোনা যাচ্ছিল, 'তোমরা এমন কাজ কেন করলা? আমার ছেলেটা নাই হয়ে গেল!'

বন্ধু আজিজুর রহমানসহ আরও সহপাঠীদের সঙ্গে দুপুরে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নিতে নগরীর মুরাদপুর এলাকায় গিয়েছিলেন শান্ত। 

আজিজুর ডেইলি স্টারকে বলেন, 'হঠাৎ দেখি অনেকগুলো লোক লাঠিসোটা নিয়ে আমাদের দিকে ধাওয়া করতে থাকে। একসময় গোলাগুলি হয়। সেই গোলাগুলিতে আহত হয়ে শান্ত লুটিয়ে পড়ে।'

'বন্ধু আমার বাঁচতে পারল না,' বলে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন আজিজুর।

শান্তদের বাসা নগরীর ফ্রিপোর্ট এলাকায়। তার বাবা কাজে  গ্রামের বাড়ি বরিশালে গেছে। খবর পেয়ে তিনি চট্টগ্রামের পথে রওনা দিয়েছেন বলে জানালেন সঙ্গে আসা শিক্ষার্থীরা।

 

Comments

The Daily Star  | English

US tariff talks: First day ends without major decision

A high-level meeting between Bangladesh and the Office of the United States Trade Representative (USTR) ended in Washington, DC, yesterday without a major decision, despite the looming expiry of a 90-day negotiation window on July 9.

7h ago