এই সরকারের আমলে কোনো নিরীহ লোক হয়রানি-জেল-জুলুমের মুখোমুখি হয়নি: কাদের

এই সরকারের আমলে কোনো নিরীহ লোক হয়রানি-জেল-জুলুমের মুখোমুখি হয়নি: কাদের
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

এই সরকারের আমলে কোনো নিরীহ লোক কোনো প্রকার হয়রানি-জেল-জুলুমের মুখোমুখি হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত ও সাবেক সেনাপ্রধানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে বলে মনে করেন কি না গণমাধ্যমকর্মীদের এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, 'কোনো ব্যক্তি যত প্রভাবশালী হোক, অপরাধ-অপকর্ম করতে পারে। প্রশ্ন থেকে যায় যে, সরকার তাদের শাস্তি পাওয়ার ব্যাপারে সৎ সাহস দেখিয়েছে কি না?'

তিনি বলেন, 'শেখ হাসিনা সরকারের সেই সৎ সাহস আছে। অপরাধ করে কেউ পার পাবে না। বিচার বিভাগ স্বাধীন, দুদক স্বাধীন। সেখানে যদি অপরাধী হিসেবে সাব্যস্ত হয় কেউ, আমরা কেউ প্রটেকশন দিতে যাব না—তিনি সাবেক আইজিপি হোন নাকি সাবেক সেনাপ্রধান হোন।

'আমাদের দেশের প্রচলিত আইনে অন্যায় যে করবে, তাকে শাস্তির কাছে সমর্পণ করা হবে। এখানে কোনো প্রকার সরকারের কাউকে প্রটেকশন দেওয়ার বিষয় নেই। আবরার হত্যাকাণ্ডে যাদের দণ্ড হয়েছে তারা সবই ছাত্রলীগের কিন্তু সরকার তাদের প্রটেকশন দিতে যায়নি। বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডে যে ফাঁসি হয়েছিল, সেখানেও সরকার কোনো প্রটেকশন দিতে যায়নি,' বলেন তিনি।

কাদের আরও বলেন, 'ব্যক্তি অপরাধ করতে পারে। প্রশ্ন হচ্ছে, সরকার তাকে প্রটেকশন দিচ্ছে কি না? শেখ হাসিনা আমাদের প্রধানমন্ত্রী, তিনি এ ব্যাপারে জিরো টলারেন্সে আছেন। কাজেই অপরাধীকে অপরাধী হিসেবে আমরা দেখি। সে যে-ই হোক, যত প্রভাবশালীই হোক, অপরাধ করলে শাস্তি তাকে পেতেই হবে।'

গণমাধ্যমকর্মীদের আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'মির্জা ফখরুল প্রতিদিনই অনেক কথা বলেন। তার মানসিক ট্রমা মনে হয় ভয়ঙ্কর পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। তিনি এবং বিএনপি নেতারা অন্ধকারে ঢিল ছোড়েন। তারা বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে।

'নির্বাচন ঠেকাতে গিয়ে ব্যর্থ, গণঅভ্যুত্থান করে সরকার হটানোর আন্দোলনে ব্যর্থ। এখন তাদের এদিকও নেই, ওদিকও নেই। বন্ধুরাও আগের মতো এসে তাদেরকে উৎসাহিত করে না। আগে তো সকালে ঘুম থেকে উঠেই মার্কিন দূতাবাসে গিয়ে হাজির হতেন নাস্তা করার আগে। সেখানেই নাস্তা করতেন। রাতেও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, কোথায়? মার্কিন দূতাবাসে। সেখানে বিদেশি বন্ধুরা তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে; সেই স্বপ্নের কর্পূর উবে গেছে। এখন ক্ষমতা অভিমুখী দীর্ঘ যাত্রায় তারা শামিল হওয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছে। সেটা তারা করতে পারে কিন্তু এই সরকারের আমলে কোনো নিরীহ লোক কোনো প্রকার হয়রানি-জেল-জুলুমের মুখোমুখি হয়নি,' বলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।

বিএনপি মহাসচিবের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, 'এখন আপনাদের দল প্রকাশ্য দিবালোকে পুলিশকে হত্যা করেছে, সাংবাদিকদের নির্যাতন করেছে, প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা চালিয়েছে, পুলিশ হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে, আনসারকে মেরেছে। এখন এসব অপরাধের সঙ্গে যারা জড়িত, তারা তো অপরাধী! তাদেরকে বিএনপি হিসেবে আটক করা হয়নি, আটক করা হয়েছে খুন, অগ্নিসন্ত্রাস, সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত থাকার অপরাধে।'

তিনি বলেন, 'কিছু দিন আগে দেখলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতা অস্ত্রসহ আটক হয়েছে। জানা গেল সে অস্ত্র ব্যবসায়ী। ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার পক্ষে একটা বিরাট বিবৃতি দিয়ে দিলেন। এখন খুনি, সন্ত্রাস, অস্ত্র ব্যবসার পক্ষে বিএনপির ক্ষমতায় থাকার যে প্র্যাকটিস, সেই প্র্যাকটিস তারা এখনো করে যাচ্ছে।'

আওয়ামী লীগ নেতা আহসান উল্লাহ মাস্টার, মঞ্জুরুল ইমাম, মমতাজ, সাংবাদিক শামসুর রহমান, মানিক সাহা, হুমায়ুন কবির বালু হত্যাকাণ্ড বিএনপি করেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'এই সরকারের আমলে এ ধরনের নৃশংস ঘটনার পুনরাবৃত্তি এই আমলে হয়নি।'

বিএনপির ভাষা উগ্র হয়ে গেছে মন্তব্য করে কাদের বলেন, 'ইউটিউব-ফেসবুকের অপপ্রচার, টিকটকে আমাদেরকে যেভাবে নোংরাভাবে আক্রমণ করে, এটা কি সম্ভব কোনো গণতান্ত্রিক দেশে? প্রধানমন্ত্রীকে যে নোংরা ভাষায় তারা আক্রমণ করে; এসব করার পরেও বলে সরকার জুলুম করছে, নির্যাতন করছে। এমন কোনো বাজে কথা নেই, তাদের নেতারা প্রতিনিয়ত উচ্চারণ করছে না। সেটার জন্য তো কাউকে গলা টিপে ধরা হয়নি! তাদের এসব অবান্তর বক্তব্যের কোনো মূল্য নেই।'

আওয়ামী লীগ ক্ষমতা অর্জন করেছেন, দখল নয় বলেও এ সময় মন্তব্য করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Interest payments, subsidies soak up almost half of budget

Interest payments and subsidies have absorbed nearly half of Bangladesh’s total budget expenditure in the first seven months of the current fiscal year, underscoring growing fiscal stress and raising concerns over public finances.

1h ago