‘শ্রমিক-কর্মচারীদের মামলায় ড. ইউনূসের শাস্তি হয়েছে, সরকার কোনো পক্ষ নয়’

হাছান মাহমুদ | ছবি: সংগৃহীত

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের রায় নিয়ে দেশে-বিদেশে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, গ্রামীণ টেলিকমের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে আদালত দণ্ডিত করেছেন। এরপর আপিল করার শর্তে তাকে আবার জামিনে দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে দেশে-বিদেশে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা আছে এবং সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা হচ্ছে। এখানে সরকার কোনো পক্ষ নয়, মামলাও করেনি! মামলা করেছে গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীরা। সেই মামলায় শাস্তি হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রামের দেওয়ানজী পুকুর লেনে ওয়াইএনটি সেন্টারে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, গ্রামীণ টেলিকমের বিরুদ্ধে এক দশকের বেশি সময় ধরে নিয়ম ভঙ্গ, কর ফাঁকি, কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিল আত্মসাৎ এবং বিভিন্ন অনুমোদিত সংস্থা থেকে তিন হাজার কোটি টাকা অপব্যবহার করার অভিযোগ আছে।

১৯৮৩ সালের গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ অনুসারে, গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি সরকার নিযুক্ত হওয়ার কথা ছিল। ১৯৯০ সালের সংশোধনী অনুসারে এমডি নিয়োগের দায়িত্ব বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন সাপেক্ষে গ্রামীণ ব্যাংকের বোর্ড অব ডিরেক্টরসে স্থানান্তরিত হয়। এই পরিচালক বোর্ডের চেয়ারম্যান ওই বছরের ১৪ আগস্ট ড. ইউনূসকে এমডি হিসেবে নিয়োগের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনের জন্য অনুরোধ করেন, বলেন তথ্যমন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক শর্ত সাপেক্ষে ড. ইউনূসের নিয়োগে অনাপত্তি দেয়, শর্তগুলো হচ্ছে—এমডির চাকরির শর্তাবলী ১৯৮৩ সালের গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ ১৪ এর ৪ ধারার প্রবিধান দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে; পরিচালক বোর্ড অধ্যাদেশের ৩৬ ধারার অধীনে নিয়ম তৈরি করবে, যা সরকারি গেজেট প্রকাশের পর কার্যকর হবে এবং সরকারি চাকরির নিয়ম অনুসারে, একজন এমডি ৬০ বছর বয়সের সীমা অতিক্রম করতে পারবেন না।

কিন্তু ড. ইউনূসের বয়স যখন ৫৯ বছর, ১৯৯৯ সালের জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত পরিচালক বোর্ড তার ৫২তম সভায় আইন ভঙ্গ করে রেজুলেশনে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে পরবর্তী আদেশ না হওয়া পর্যন্ত এমডি হিসেবে নিশ্চিত করে। এটি গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশের অনুচ্ছেদ ১৪ এর ৪ ধারার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। তার এই নিয়োগের অসৎ উদ্দেশ্য পরে প্রমাণিত হয়েছে, যোগ করেন তিনি।

হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ২১ এবং ১২ এর ২ ধারা অনুসারে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডিকে একজন পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যেখানে ড. মুহাম্মদ ইউনূস পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে তার চাকরির শর্তাবলী লঙ্ঘন করেছেন। একজন পূর্ণ সময়ের সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে কাজের জায়গায় তার ঘন ঘন অনুপস্থিতি ছিল এবং সেই অনুপস্থিতির ক্ষেত্রে সরকারের অনুমোদন কখনো নেওয়া হয়নি।

তিনি বলেন, গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ড. মুহাম্মদ ইউনুসের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট, তার পরিবারের সঙ্গে স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অনেক প্রতিষ্ঠানে অর্থ স্থানান্তর করা হয়েছে বা মূলধন জোগান দেওয়া হয়েছে। এসব কারণেই তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এবং সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে শাস্তি হয়েছে।

পৃথিবীতে বহু নোবেল লরিয়েটের বিরুদ্ধে দেশে দেশে মামলা হয়েছে, অনেকে শাস্তি ভোগ করেছেন, কারাগারেও ছিলেন উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এ ধরনের অনেক ঘটনা আছে, যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন, পুরস্কারের অর্থ কে কত টাকা পাবেন—এ নিয়েও নোবেল লরিয়েট একে অপরের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর কোনো সুযোগ নাই। বাংলাদেশে আদালত স্বাধীন, স্বাধীনভাবেই কাজ করেছে।

Comments

The Daily Star  | English

Audits expose hidden bad loans at 6 Islamic banks

Asset quality reviews by international auditors KPMG and Ernst & Young have revealed that six Shariah-based banks in Bangladesh are in a dire financial state, with non-performing loans (NPLs) skyrocketing four times greater than previously reported.

4h ago