হত্যা মামলার আসামিকে নিয়ে আ. লীগ নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা
নরসিংদী-৫ (রায়পুরা) আসনে হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন মামলার আসামিকে সঙ্গে নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন রায়পুরার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মিজানুর রহমান চৌধুরী। মিজানুর রায়পুরা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
গত বৃহস্পতিবার নরসিংদী জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে দুপুরে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন তিনি।
এ সময় মিজানুর রহমান চৌধুরীর সঙ্গে অস্ত্র মামলা, রাষ্ট্রীয় কাজে বাধা দেওয়া, হত্যা মামলা ও লুটপাট, ভাঙচুরসহ ৮-৯ টি মামলার আসামি রাজিব সরকার তার পাশে ছিলেন।
রায়পুরা উপজেলার মরজাল ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও একই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি সানজিদা সুলতানা নাসিমা, অলিপুরা ইউনিয়নের আহবায়ক ওবায়দুল হক বাবুলসহ আরও ২-৩ জনের তার সাথে ছিলেন।
পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেই ছবি ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনা শুরু হয়।
অভিযুক্ত রাজিব সরকার বলেন, 'আমি নরসিংদী জেলা পরিষদের নির্বাচিত সদস্য। আমার নামে যে মামলাগুলো ছিল, অধিকাংশের রায় হয়ে গেছে। তবে, ২-৩ টি মামলা রয়েছে যেগুলোতে জামিনে আছি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং আমি আশাবাদী আদালত আমাকে বেকসুর খালাস দেবে।'
তিনি মিজানুর রহমানের সাথে মনোনয়ন জমা দেয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন নিশ্চিত করে বলেন, 'আমি মনোনয়ন জমা দেয়ার সময় উপস্থিত ছিলাম ঠিক আছে। কিন্তু আমি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অন্য কাজে গিয়েছিলাম।'
রায়পুরা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও নির্বাচনে নরসিংদী-৫ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেন, 'রাজিব একজন জনপ্রতিনিধি এবং আমার সাথে থেকে মনোনয়ন জমা দিলে অপরাধ হিসেবে দেখছি না।'
তবে নিলক্ষা ইউনিয়নের ইব্রাহিম মিয়া (৫৭) বলেন, 'আমাদের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট এবং পরিবারের সদস্যদের গুলি করে আহত করে রাজিব ও তার লোকজন। আমরা রায়পুরা থানায় গত ছয় মাস আগে মামলা করেছি ভাঙচুর ও বিস্ফোরক আইনে যা এখনও আদালতে চলমান।'
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নরসিংদী জজ আদালতের এক আইনজীবী বলেন, 'রাজিব আহমেদ আমাদের এলাকার চার জন হত্যাসহ রাষ্ট্রীয় কাজে বাধা দেওয়া, বিস্ফোরক বহন, অস্ত্রবহন, এলাকায় লুটপাটসহ বিভিন্ন অপরাধে সাথে জড়িত থাকার মামলার আসামি। মামলাগুলো আদালতে এখন চলমান আছে, নিষ্পত্তি হয়নি। তবে তিনি জামিনে আছেন।'
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক বদিউল আলম বলেন, 'রাজীব সরকারের অপরাধের বিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। তবে, এমন একজন ব্যক্তিকে সাথে নিয়ে মিজানুর রহমান আমাদের কার্যালয়ে এসে মনোনয়ন জমা দেয়া সঠিক হয়নি। পুলিশকে আমরা অবহিত করব এবং খোঁজ খবর নিয়ে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
Comments